• আইন ও আদালত

    কমলনগর মাতাব্বর হাট মাছ ঘাটে কমিশন বাণিজ্য অভিযোগ

      প্রতিনিধি ১৬ অক্টোবর ২০২৪ , ১:০০:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ

    এইচ.এম আল আমিন-স্টাফ রিপোর্টার:

    লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মাছ ঘাট ও নদী দখল নিয়ন্ত্রণ পরিবর্তনে সিরিয়াল, কমিশন বাণিজ্য আধিপত্য বিস্তারে অবৈধ পিডাইন্না জাল(বেড়জাল) দিয়ে মাছ ধরে কমিশন বাণিজ্য করার অভিযোগ উঠে স্থানীয় মাছ ঘাটের গদি আড়তদারগণের বিরুদ্ধে। আধিপত্য বিস্তারে মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।
    পিডাইন্না জালে মাছ ধরে কমিশন বাণিজ্য হচ্ছে, বিভিন্ন মাঝিরা জানান, মাতাব্বর হাট মাছ ঘাটে পিডাইন্না জালে মাছ ধরেন। মাছগুলো বিভিন্ন গদিতে বেচা-কেনা হয়। এতে ১৫-২০ শতাংশ কমিশন দিতে হচ্ছে। বিগত ৫-৬বছর ভোলার দৌতুলখাঁ থেকে এখানে মাছ ধরছি। কোন সমস্যা হয়নি, এখন বিভিন্ন লোকজনের সাথে মাঝ মধ্যে মারামারি করতে হয়।

    তিনি আরও জানান, গত কয়েক বছর মাতাব্বর হাট মাছ ঘাটে আওয়ামী লীগ নেতা জিহাদের নিয়ন্ত্রণে মাছ ধরেন। গত কিছু দিন ঘাটের দখল ও আড়তদারদের মধ্যে কমিশনের টাকার ভাগ ভাটোয়ারা নিয়ে আধিপত্য বিস্তার শুরু হয়। জিহাদ না থাকায় ঘাটের আড়তদার মফিজ মাতাব্বর, আজাদ মাতাব্বর খলিল মেম্বার, মনির মেম্বার, মো. বাবুল, এদের নিয়ন্ত্রণে নদীতে মাছ ধরছি এবং মাছ ঘাটের কমিশন এরা রাখেন।তবে ৫আগস্টের পর কয়েকদিন আজাদ মাতাব্বরের মাধ্যমে মাছ ধরেছি, এখন তারা সবাই থাকেন।

    ইব্রাহিম খলিল মেম্বার জানান, জিহাদের আড়তে থাকা আলমের সহযোগিতায় জামাল মাঝির লোকজন কালু মাঝির জেলেদের ওপর হামলা চালান। মফিজ মাতাব্বর জানান, জিহাদের আড়তে থাকা ৫-৬টা পিডাইন্না জাল (বেড় জাল) আলমসহ আমরা ৬-৭ জন আড়তদার নিয়ন্ত্রণ করি। জামাল মাঝি জানান, তিনি জিহাদের আড়তে মাছ বিক্রি করতেন। গত কিছুদিন যাবত ঘাটে ৬-৯)৭ জন আড়তদার জিহাদের ব্যবসায় থাকা জালগুলোর নদীতে মাছ ধরার সিরিয়াল দিচ্ছে না। ঘাটে পিডাইন্না জালে (বেড় জাল) মাছ বেশি ধরা যায়। দীর্ঘদিন ভোলার ৫-৬ জন মাঝি মাতাব্বর হাট ঘাটের পিডাইন্না জাল (বেড় জাল) দিয়ে মাছ ধরে। হঠাৎ আড়তদার মফিজ মাতাব্বর,আজাদ মাতাব্বর খলিল মেম্বার, মনির মেম্বার, মো.বাবুল, আকতার সিকদার, এরা জিহাদের কোন জেলেকে নদীতে মাছ ধরতে দিচ্ছে না।

    ভোলার জেলে-মাঝিরা তাদের ১৫-২০ শতাংশ কমিশন দেয়। যার কারণে ঘাটের আড়তদাররা ভোলার জেলেদের মাছ ধরার সিরিয়াল সবসময় দেয়। স্থানীয় জনৈক ব্যক্তি জানান, মাতাব্বর হাট মাছ ঘাটের পিডাইন্না জাল (বেড় জাল) ও আড়তের কমিশন নিয়ন্ত্রণে আওয়ামী লীগ নেতা জিহাদের আধিপত্য ছিল। হঠাৎ সরকার পরিবর্তনের পরপর বেড় জাল ও আড়তের কমিশন নিয়ন্ত্রনে নেন মফিজ মাতাব্বর,ও আজাদ মাতাব্বর খলিল মেম্বার, মো. বাবুল, মো.মনির মেম্বার, আকতার সিকদারসহ কিছু আড়তদার। এরা সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছে। প্রতিদিনের মাছ আড়তের বিক্রির ১৫-২০ শতাংশ কমিশন এদের দিতে হয়।

    তিনি আরও জানান, বিএনপির কোন লোকজন এখন ঘাটের নিয়ন্ত্রনে নেই। যারা রয়েছে তারা সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত রয়েছে। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বিএনপির লোকজন ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিলে স্থানীয় বিএনপির নেতারা তা বন্ধ করেন দেন। তবে অন্ধকারে কেউ থাকতে পারে কি না জানা নেই। মো. আলম জানান, পিডাইন্না জাল (বেড় জাল) ও ঘাটের দায়িত্বে ছিল জিহাদ। সরকার পরিবর্তনের পর ঘাটে থাকা আড়তদাররা জেলে ও মাঝিদের ভাগ করে নেয়। এতে কমিশন নিয়ে ঝামেলা তৈরি হয়। জিহাদের জেলেদের নদীতে নামতে বিভিন্ন রকম বাঁধা দিচ্ছে।

    মো.জিহাদ জানান, বেড় জাল ও জেলেদের নদীতে মাছ ধরা, বিক্রি সবই ছিল। হঠাৎ সরকার পতনের পর যাদের নাম এসেছে তারা ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নেয়। তারা জেলে ও আড়তদার থেকে শতকরা ২০ শতাংশ কমিশন নিচ্ছেন। তবে ঘাটের ব্যবসার সাথে তিনি এখন জড়িত নন। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তুর্য্য সাহা জানান, পিডাইন্না জাল বলতে কোন জাল নেই, তবে এটা হচ্ছে বেড়জাল যা নদীতে সম্পূর্ণ অবৈধ। বেড় জাল দিয়ে নদীতে মাছ ধরা যাবে না। যারা এসব ব্যবহারে মাছ ধরাচ্ছে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে এ বিষয়ে কমলনগর থানা ইনচার্জ (ওসি) জানান, পিডাইন্না জাল নিয়ে মাছ ধরতে কোন মারামারি বা ঝামেলা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ