প্রতিনিধি ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ , ৮:২৮:০২ প্রিন্ট সংস্করণ
মো.মাহাফুজুর রহমান-নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:
নড়াইলে লোহাগড়ায় প্রায় ১২শ গ্রাহকের গচ্ছিত অর্থ আত্মসাৎ ও সমিতির ম্যানেজার কে পূর্ব পরিকল্পিত হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের রামকান্তপুর গ্রামস্থ্য মিল বাজারে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহকদের আয়োজনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০০৮ সালে রামকান্তপুর মিল বাজারে রামকান্তপুর মিলবাজার আদর্শ সমিতি নামে একটি সমিতির কার্যক্রম শুরু করেন চরশামুকখোলা গ্রামের মো.নুর ইসলাম, নুরমিয়া প্রতিবন্ধী (৬০) সহ কয়েকজনে মিলে। সর্বশেষ গ্রাহক সংখ্যা ছিলো প্রায় ১২শ। ওই গ্রাহকদের কাছ থেকে সমিতির কর্মকর্তারা সঞ্চয়, আমানত, ডিপিএস সহ নানা প্রলোভন দিয়ে প্রায় ৩ কোটি (আসল) টাকা লুফে নেয়। সর্বশেষ সুদ-আসল সহ গ্রাহকদের পাওনা প্রায় ১০ কোটি টাকা ।
ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, ওই সমিতির ম্যানেজার হিসাবে দায়িত্ব পালন করতেন মো.নুর ইসলাম,(নুরমিয়া) ৬০ তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধিও ছিলেন। গ্রাহকরা হঠাৎ করেই টের পান সমিতির পরিচালকরা টাকা-পয়সা নিয়ে ছলচাতুরি করছেন। পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তারা টাকা ফিরে পাবার জন্য মোঃ নুর ইসলামসহ অন্যদের বারবার তাগিদ দিতে থাকেন। গ্রামে এ বিষয়ে কয়েক দফায় শালিসও হয়। শালিসে মোঃ নুর ইসলাম টাকা ফেরত দিতে সম্মত হন। কিন্তু সম্মতি প্রদানের রাতেই মো.নুর ইসলাম এর মৃত্যু ঘটে।
গত ১৮ অক্টোবর ২৩ গভিররাতে গ্রাহকদের অভিযোগ মো.নুর ইসলাম কে পরিবারের সদস্যরা শ্বাসরোধসহ আঘাতে হত্যা করে নিজ ছেলের ঘরে দঁড়িতে ঝুঁলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হয়েছে। পুলিশ খবর পেয়ে তার লাশ উদ্ধার করে এবং পোষ্ট মর্টেম সম্পন্ন করে। এ ঘটনায় লোহাগড়া থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়।
সমিতির গ্রাহক চরশামুক খোলা গ্রামের ওবায়দুর রহমান জানান তিনি সমিতির কাছে ৩৩ লাখ টাকা পাবেন। এছাড়াও গ্রাহক সবুজ মোল্যা ১১ লাখ, ইদ্রিস মোল্যা আড়াই লাখ, তরিকুল ৫ লাখের বেশি, সাইফুল ১১ লাখ টাকা পাবেন। পাওনাদারের সংখ্যা প্রায় ১২শ। গ্রাহকদের বিভিন্ন ব্যাংকের ব্লাঙ্ক চেক ও প্রদান করেন নুর মিয়া। ক্ষতিগ্রস্থরা জানান, সমিতির সদস্যরাসহ নুর ইসলামের আত্মীয় স্বজনে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাড়ি, গাড়ি ফ্লাট করেছেন গ্রাহকের টাকায়। গ্রহকের টাকা আত্মসাৎ করতেই মো.নুর ইসলাম কে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেবার চেষ্টা করছে পরিবারের লোকজন।
মৃত মো. নুর ইসলামের স্ত্রী মর্জিনা বেগম হত্যাসহ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার স্বামী আত্মহত্যা করেছেন। পোষ্টমর্টেম রিপোর্ট এলে বোঝা যাবে। একই দাবি মৃত ব্যাক্তির ছেলে জুয়েল রানার স্ত্রী শারমিনের।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.নাসির উদ্দিন জানান, বিষয়টির তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে মৃত্যর প্রকৃত কারন বলা যাবে। তবে, হত্যাকান্ড হলে দোষিরা অবশ্যই শাস্তির আওতায় আসবে।