প্রতিনিধি ৫ আগস্ট ২০২৩ , ৭:৪৪:৫৩ প্রিন্ট সংস্করণ
শান্ত সরকার-মোহনপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি:
বাংলাদেশের পরিবেশ বিপর্যয়ের অন্যতম প্রধান কারণ বিদেশী প্রজাতির গাছের আগ্রাসন। বিদেশি প্রজাতির গাছের আমদানি বন্ধ ও দেশীয় প্রজাতির গাছের প্রজনন বৃদ্ধিতে জনসচেতনতা তৈরিতে পরিবেশ অধিদপ্তর সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে কর্মপরিকল্পনা তৈরির পাশাপাশি কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আজ ১ আগষ্ট সবুজ আন্দোলন রাজশাহী জেলা শাখার উদ্যোগে শেফ গার্ডেন রেস্টুরেন্ট ” দেশীয় প্রজাতির গাছের গুরুত্ব বৃদ্ধিতে করনীয় শীর্ষক আলোচনা সভা ও পরিবেশ বিষয়ক প্রশিক্ষণের” আয়োজন করে। সবুজ আন্দোলন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলার আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার জিয়া উদ্দিন জিয়ার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সবুজ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার।
উদ্বোধনী বক্তব্য দেন সবুজ আন্দোলন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের নারী ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক সাহিন আরা সুলতানা। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. আমিনুল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেভ আওয়ার নেচার ও লাইভের চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এডিশনাল চীফ ইঞ্জিনিয়ার শিহাবুল ইসলাম, নিরাপদ সড়ক চাই রাজশাহী জেলার সভাপতি এডভোকেট তৌফিক আহসান টিটু, রাজশাহী বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাকসুদা আলম রোজী, সবুজ আন্দোলন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সাবেক সহ-সভাপতি হাজী মোঃ হালিম, জেলার সদস্য সচিব আখতারুল ইসলাম খন্দকার, রাজশাহী জেলা চেম্বার অফ কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক সাজিদ রোশন এহসান।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্য বলেন, যে কোন প্রকার বিদেশি গাছের চারা ও বীজ আমদানিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতির স্যার পত্র বাধ্যতামূলক করতে হবে। বিদেশে প্রজাতির গাছের চারা উৎপাদন বন্ধে আগামী এক মাসের মধ্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। দেশীয় গাছের মধ্যে আমলকি, হরিতকি, বহেরা, অর্জুন, উদাল, নিম , উলট কম্বল, তেতুল, কুরচি, ছাতিম সাজনা পুদিনা কালোমেঘ, বসাক, থানকুনি,মেন্দা, হৈমন্তী, উলট চন্ডল, শতমূলী, সর্পগন্ধা, অশ্বগন্ধা প্রভৃতি গাছ লাগানো উচিত।
বিদেশি প্রজাতির গাছের অতি আগ্রাসনে কয়েক দশকে আমাদের নিজস্ব ইকোসিস্টেমকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। আসবাবপত্র বানাতে ও জ্বালানী কাঠের জোগান দিতে গিয়ে সংকটের মুখে পড়ছিলো বাংলাদেশের বনাঞ্চল। তখন বনকে রক্ষা করতে গিয়ে দ্রুত বর্ধনশীল বিদেশি প্রজাতির গাছ উদ্যোগ শুরু হয়েছিলো। যা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হিসেবে এখন প্রতীয়মান।
বিদেশি প্রজাতির গাছের মধ্যে ইউক্লিপ্টাস, মেহগনি, আকাশমনি, রেইনট্রিসহ অতিরিক্ত পানি শোষণ করার ফলে বাস্তুসংস্থান নষ্ট হচ্ছে। এছাড়াও বিদেশি প্রজাতির গাছ একাই দেশীয় প্রজাতির গাছগুলো পারস্পরিকসহ অবস্থানে থাকতে পারছে না। লতাপাতা, গুল্মের জন্ম হচ্ছে না। ভূগর্ভস্থ পানির লেয়ার ইতোমধ্যে অধিকাংশ জেলাতে অনেক নিচে নেমে গেছে। দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে নার্সারির মালিক, উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদেরকে যেকোনো প্রকার বিদেশী গাছ ও চারা আমদানিতে না করতে প্রদত্ত আহবান জানান।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সবুজ আন্দোলন রাজশাহী জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক সফিকুল ইসলাম, শারমিন আক্তার জুই, শারমিন সুলতানা, মহানগরের সমন্বয়কারী উর্মী ইসলাম, মোহনপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মোঃ সফিকুল ইসলাম সহ শতাধিক নেতাকর্মী। পরিবেশ বিষয়ক প্রশিক্ষণ শেষে সবাইকে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।