প্রতিনিধি ১৯ ডিসেম্বর ২০২২ , ১:৫৮:২০ প্রিন্ট সংস্করণ
আরিফুল ইসলাম কারীমী-স্টাফ রিপোর্টারঃ
ইসলামী অন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম (শায়খে চরমোনাই) বলেছেন, ৭০-এর নির্বাচন মুক্তিযুদ্ধ হবার মূল কারণ। আওয়ামীলীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ার পরেও তাদেরকে ক্ষমতায় না বসানোর কারণে ভোটাধিকারের জন্য যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তিনি বলেন, ৭০-এর নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল, কুরআন-সুন্নাহ’র বিরুদ্ধে কোন আইন পাশ করা হবে না। এই ইশতেহার দিয়ে আওয়ামীলীগ নির্বাচিত হয়ে কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন মেনে নেয়া যায় না। ৭১-এর পূর্বে প্রত্যেক পোস্টারে লেখা ছিল নারায়ে তাকবীর-আল্লাহু আকবার। মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ইসলামের বিরুদ্ধে নয়। এদেশের মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ হবার জন্য মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধার নামে আজকে সরকারের মন্ত্রীপরিষদের সদস্যদের সনদ ভুয়া প্রমাণিত হচ্ছে। অথচ অনেক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কারো কারো অবৈধ আবদার পূরণ না করার কারণে এখনো স্বীকৃতি বঞ্চিত। তিনি বলেন- দেশে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার নেই।
১৮ ডিসেম্বর ২০২২ রবিবার, বেলা ১১টায় পুরানা পল্টনস্থ আইএবি মিলনায়তনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বিভাগের উদ্যোগে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপর্যুক্ত কথা বলেন। দলের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম-এর সভাপতিত্বে ও ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদ সভাপতি শহিদুল ইসলাম কবির-এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার গোলাম মাওলা, সহকারী মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল ওয়াদুদ।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা চাষী নজরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দু মোত্তালিব খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সোলায়মান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেকুজ্জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল গফুর, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হারুনুর রশীদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. গোলাম মাওলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার সরকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সিদ্দিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. এমদাদুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা টাঙ্গাইল, বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী দবির উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মঞ্জুরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিদ্দিকুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আইনুল হক, মুক্তিযোদ্ধার প্রজন্ম মুফতী মোস্তাফিজুর রহমান, মো. সাহাদুজ্জামান মোল্লা, এবিএম রকিবুল হক, মো. আবদুল কুদ্দুস, মো. মিজানুর রহমান, আবুর শোয়াইব খান, ডা. আতাউর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।
দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদ বলেন, যাদের মধ্যে চাপা যাতনা ও চেতনা আছে তারাই মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা দিয়ে দেশ গড়তে হবে। মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, নব্য চেতনাধারীরা মুক্তিযুদ্ধকে ইসলামের বিরুদ্ধে নিয়ে যাচ্ছে।বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম বলেন,ন্যায়বিচার, সাম্য, মানবিক মর্যাদার জন্য আমরা যুদ্ধ করেছি। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, স্বাধীনের পূর্বে চাকুরীসহ সব ক্ষেত্রে নৈরাজ্য ছিল। এই ৫২ বছরে স্বাধীনতার সুফল পাইনি। ইশতেহারে কুরআন-সুন্নাহবিরোধী আইন করা হবে না বললেও প্রধানমন্ত্রী মদ বৈধ করেছেন। ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য দেশে ইসলামী হুকুমত কায়েম করতে হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. খালেকুজ্জামান নাটোর বলেন- মুক্তিযোদ্ধাদেরকে কটাক্ষ শুনতে হয়। বেতন ভাতার জন্য আমরা যুদ্ধ করিনি। আমরা অধিকার পাওয়ার আশায় মুক্তিযুদ্ধ করেছি। বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা বলেন- মুক্তিযোদ্ধাদেরকে জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান বলা হলেও প্রয়োগের বেলায় তা ভিন্ন। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক বলেন- অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করার জন্য মুক্তিযুদ্ধ হলেও তা আজও হয়নি। বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. এমদাদুল হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের উদ্দেশ্য সফল হয়নি। দেশের মানুষ অর্থনৈতিক মুক্তি পায়নি। স্বাধীনতার ৫১ বছরে দুর্নীতি দেখেছি। দেশে দুর্নীতির খেলা চলছে।