• আইন ও আদালত

    তানোরে মৃত শিক্ষকের নামে টাকা উত্তোলন

      প্রতিনিধি ১৮ ডিসেম্বর ২০২২ , ২:৪১:৫০ প্রিন্ট সংস্করণ

    মমিনুল ইসলাম মুন-বরেন্দ্র অঞ্চল প্রতিনিধি:

    রাজশাহীর তানোরের তালন্দ ইউনিয়নের (ইউপি) নারায়নপুর দ্বিতীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন আলার বিরুদ্ধে তথ্য গোপণ করে ব্যাংক কর্মকর্তার যোগসাজশে মৃত শিক্ষকের নামে টাকা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। অথচ নীতিমালা অনুযায়ী কোনো শিক্ষক-কর্মচারী মারা গেলে সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবগত করে এমপিও তালিকা থেকে নাম কর্তন করার কথা। এদিকে ২০২২ সালের ৩ মার্চ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান উমাশিঅ/তান/১,১৬/২০২২/৬২ নম্বর স্বারকে-প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে রাজশাহী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেছেন।

    প্রতিবেদনে বলা হয়েছে নারায়নপুর দ্বিতীয় উচ্চ বিদ্যালয় (ইআইআইএন নম্বর–১২৭০৮২) এমপিও কোড নম্বর-৮৬১০১৩১৩০৫)। গত ২০১১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় একই দিন(স্মারক নম্বর উমশঅ/তান/১,১৬/২০২১/১৭৫) তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। কিন্ত্ত কারণ দর্শানোর কোনো জবাব না দিয়ে প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন আলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী রাহেজুল ইসলামকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি সহ প্রাননাশের হুমকি দেন।এছাড়াও গত ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন আলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে এসে নিজেকে এমপির ঘনিষ্ঠ পরিচয় দিয়ে।

    মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে গালাগালি ও শারিরীকভাবে লঞ্চিত করার চেষ্টা করে। এঘটনায় একই দিন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান রহমান বাদি হয়ে প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন আলা বিরুদ্ধে তানোর থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন। এছাড়াও তিনি সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নিয়ে জালিয়াতি করে চাকরির শুরু থেকে অদ্যবদি প্রধান শিক্ষকের বেতন উত্তোলন করছেন।অন্যদিকে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (বিজ্ঞান) গোলাম রাব্বানী ইনডেক্স নম্বর (আর-৫৬৩২১৫) বিগত ২০১৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন।কিন্তু তার নাম কর্তন না করে এখানো এমপিও সিটে তাকে নিয়মিত দেখানো হয়েছে।এছাড়াও বিগত ২০২০ সালে ই-রেজিষ্ট্রেশন যাচাই-বাছাইয়ের সময় উপজেলা এমনকি জেলা শিক্ষা অফিসে উপস্থিত না হয়ে আত্নগোপণে থাকেন আলাউদ্দিন আলা। ফলে এমপিও সীটে শিক্ষকের নাম থাকার পরেও একই পদে এনটিআরসি কর্তৃক নতুন শিক্ষক নিয়োগ পায়।

    আবার প্রতিষ্ঠানের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া স্বত্তেও স্বীকৃতি নবায়নের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। প্রতিষ্ঠানে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব থাকার পরেও কোনো কার্যক্রম নাই।এছাড়াও প্রধান শিক্ষক কোনো জুম মিটিংয়ে উপস্থিত হয়না। এদিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার উপরোক্ত তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ৯ মার্চ রাজশাহী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জেশিঅ/রাজ/২৭০ স্মারক ও  ১১১৩ নম্বর নোটিশে প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন আলার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মহাপরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বরাবর প্রেরণ করেছেন।
    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহকারী শিক্ষক বলেন, বিগত ১৯৯৩ সালে আলাউদ্দিন আলী সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নিয়ে ওই  সময় থেকেই প্রধান শিক্ষকের বেতন উত্তোলন করেন।এছাড়াও কৃষি বিষয়ের শিক্ষকের নিয়োগ নিয়েও জালিয়াতি করা হয়েছে। সরেজমিন অনুসন্ধান করা হলে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে।

    এবিষয়ে জানতে চাইলে নারায়নপুর দ্বিতীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন আলা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্থানীয় একটি মহল দীর্ঘদিন ধরে তার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার করে যাচ্ছেন, এটাও তাদেরই কাজ।এবিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এসব বিষয়ে দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবগত করেছেন। তিনি আরো বলেন, কোনো শিক্ষক মারা যাবার পর এমপিও সীটে তাকে নিয়মিত দেখানো বা তার নামে টাকা আশাও একটা অপরাধ। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পংকজ চন্দ্র দেবনাথ জানান, বিষয়টি তার অজানা,তবে এবিষয়ে বিস্তারিত  খোঁজখবর নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ