প্রতিনিধি ৬ আগস্ট ২০২২ , ৩:৫৪:০৪ প্রিন্ট সংস্করণ
রাজশাহীর তানোর পৌর এলাকার কালিগঞ্জ হাটের কোটি টাকা মুল্যের জায়গায় মার্কেট নির্মাণ বন্ধ করতে নোটিশ দেওয়া নিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ ইদুর বিড়াল খেলা শুরু করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।এমনকি সকালে নোটিশ দেওয়ার কথা বলা হলেও রহস্য জনক কারনে দেওয়া হয়নি নোটিশ। এতে করে পৌরবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। এছাড়াও মার্কেট নির্মান বন্ধের জন্য ব্যবসায়ীদের পক্ষে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি সুস্মিতা রায় বরাবর লিখিত অভিযোগ করেও কোন ধরনের ব্যবস্হা নেওয়া হয়নি বলেও একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
গত বৃহস্পতিবার পৌরসভার মার্কেট তৈরি করতে ফ্লান পাশ করে দেওয়া অফিস সহকারী ওমরের সাথে মোবাইলে কথা বলা হলে তিনি জানান ইন্জিনিয়ার স্যার আসলে মার্কেট বন্ধের জন্য নোটিশ করা।হাটের জায়গার ফ্লান কিভাবে দিলেন জানতে চাইলে তিনি জানান তাদের নামে খাজনা খারিজ আছে এজন্য ফ্লান করে দেওয়া হয়েছে।নোটিশ দেওয়ার ব্যাপারে বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান আমি কিছুই জানিনা মেয়র স্যার বলতে পারবে।মেয়র ইমরুলের সাথে যোগাযোগ করে জানতে চাওয়া হয় মার্কেট নির্মাণ কাজ বন্ধের নোটিশ দেওয়ার কথা,
কিন্তু কি কারনে দেওয়া হয়নি তিনি জানান তাদের নিজস্ব জায়গা আমি নোটিশ দিব কেন।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার বেশ কিছু কর্মকর্তারা জানান ওই জায়গা বিগত ২০০৭ সাল থেকে বন্ধ আছে এবং যার নামে রেকর্ড প্রয়াত হাজি আইয়ুব ওই কোন স্হাপনা নির্মাণ করলে পৌরসভা থেকে অনুমতি নিবেন মর্মে মুচলেকাও দেন।তাহলে কেন প্লান করে দেওয়া হল বুঝতে হবে।গত ৫ জানুয়ারী বুধবার এলাকাবাসীর পক্ষে প্রভাষক তাজেমুল ইসলাম বাদি হয়ে হাটের এসব অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ ও অপসারণ দাবি করে উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভুমি)র কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে তানোর পৌরসভার কালীগঞ্জ হাটের আয়তন এক একর ২০ শতক। এদিকে এসব জায়গার মধ্যেস্থলে (সায়রাত ভুক্ত) জেল নম্বর ১২৯ রায়তানবর্ষ, দাগ নম্বর ১২৯১ পরিমাণ .০৭ শতক সম্পত্তি জবরদখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ শুরু করেছে জালিয়াত সিদ্দিক মহুরী। অভিযোগে প্রকাশ, বিগত ২০০৭ সালের ২৯ জানুয়ারী (তৎকালীন) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুছ সাদাত জমির মালিক দাবিদার হাজী আইয়ুব মিঞাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ একই বছরের ৮ ফেব্রুয়ারী তার কার্যালয়ে উপস্থিত হতে নোটিশ দেন। তবে তারা ধার্য্য দিনে কাগজপত্রসহ উপস্থিত ব্যর্থ হয়।
ফলে ২০০৭ সালের ৮ মে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদেশ দিয়ে বলেন, কালীগঞ্জে হাটের মধ্যে ব্যক্তিগত ভাবে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। এদিকে ২০০৭ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী তানোর পৌরসভার স্বারক নং তাঃপৌঃ/২০০৭/৬৯৫ এবং স্বারক নং তাঃপৌঃ/২০০৭/৬৮৩ তারিখ ১৩/০২/২০০৭ ইং মোতাবেক অবৈধ ভাবে নির্মিত দোকান ঘর অপসারণের জন্য নোটিশ দেন (তৎকালীন) মেয়র এমরান আলী মোল্লা। এ ঘটনার থেকে দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর যাবত ওই জায়গায় দোকান ঘর নির্মাণ বন্ধ ও হাটবার হাট বসে আসছে সবাই জানে এটা হাটের জায়গা এবং চারদিকে হাট মধ্যস্থলে ব্যক্তি মালিকাধীন জমি থাকার কোনো সুযোগ নাই।
কিন্ত্ত ২০২২ সালের ১লা জানুয়ারী সরনজাই কাচারিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সিদ্দিক মুহুরী ক্রয় সুত্র জমির মালিকানা দাবি করে পাকা দোকান ঘর নির্মাণ শুরু করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যবসায়ী জানান, ভুমি অফিসের কতিপয় কর্মকর্তার নেপথ্যে যোগসাজশে চিহ্নিত জালিয়াত সিদ্দিক মুহুরী ও তার পুত্র আল-আমিন মুহুরী জাল দলিল সৃষ্টি করে তাদের নামে খাজনা-খারিজ করেছে, তারা বলেন, তাদের কাগজপত্র যাচাই করলেই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে। এবিষয়েে জানতে চাইলে সিদ্দিক মুহুরী জানান আমার ক্রয়কৃত জায়গা এজন্য মার্কেট নির্মাণ করছি
কার কাছে কি ভাবে ক্রয় করলেন তিনি রেকর্ডীয় মালিকদের কাছ থেকে। তবে দলিল দেখতে চাইলে অপারগতা প্রকাশ করে বলেন খারিজের জন্য ভুমি অফিসে আছে ও লোনের জন্য ব্যাংকে দেওয়া আছে।আমার কাছে কোন কিছুই নেই।তার ছেলে মুহুরি আলামিন জানান চুরি করে মার্কেট করছিনা। জায়গা কিনে করছি বলে দম্ভোক্তি প্রকাশ করেন।তহসিলদার লুৎফর রহমান জানান কাগজপত্র সঠিক পেয়েছি এজন্য খারিজ হয়েছে।
কালিগন্জ হাটের একাধিক ব্যবসায়ীরা জানান যদি ওই জায়গায় মার্কেট করা যেত তাহলে অনেক আগেই জমির মালিকরা নির্মাণ করে ফেলত।কিন্ত দীর্ঘ এত বছর পর মার্কেট নির্মাণ হচ্ছে আমরা হতবাক। এবিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুস্মিতা বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেছে, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।