প্রতিনিধি ২০ জানুয়ারি ২০২২ , ১:৩৬:৫৭ প্রিন্ট সংস্করণ
মো আবুবকর মিল্টন-বাউফল পটুয়াখালী:
এবার আমন ধানে উচ্চ ফলন হলেও ফড়িয়াদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন পটুয়াখালীর কৃষকরা। ৪০ কেজিতে এক মণ হলেও চলতি মৌসুমে ৪৮ থেকে ৫০ কেজিতে মণ হিসাব করে ধান কিনছেন ফড়িয়ারা। এ কারণে প্রতি মণে ৮ থেকে ১০ কেজি ধান বেশি দিতে হচ্ছে কৃষকদের। বিষয়টি নিয়ে তারা প্রতিবাদ করলেও কোনো প্রতিকার মিলছে না। এতে ধানের উচ্চ ফলনেও ক্ষতির মুখে কৃষকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পটুয়াখালী জেলার শতভাগ জমিতেই আমন ধান আবাদ করা হয়। এবার ধানের ফলন ভালো হওয়ায় এবং দাম ভালো থাকায় বাড়িতে বসেই কৃষকরা ধান বিক্রি করছেন। গ্রামে এখন বিপুল পরিমাণ ধান সিদ্ধ করা কিংবা শুকানোর জায়গা নেই। এ কারণে ধান মাড়াই করার পরপরই বিক্রি করে দিচ্ছেন কৃষকরা।
কষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সারাবছর মেট্রিক পদ্বতিতে ৪০ কেজিতে এক মণ হলেও ৪৮ থেকে ৫০ কেজিতে মণ হিসাব করে ধান কিনছেন দালাল ও ফড়িয়ারা। এতে তারা আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।পটুয়াখালীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি মণ ধান এক হাজার থেকে ১০৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ৪৮ থেকে ৫০ কেজিতে মণ হিসাব করে ধান বিক্রি করায় কৃষকরা মণপ্রতি ২৫০-২৬০ টাকা কম পাচ্ছেন।
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার আমখলার কৃষক ফিরোজ শিকদার বলেন, ‘ধান মাড়াই করার পর চিটা ও কুটা আলাদা করে বস্তা ভরে বিক্রি করি। যেহেতু ধান কিছুটা কাঁচা থাকে সেজন্য মণ প্রতি এক কিংবা দুই কেজি ধান বেশি নিলে সেটা একটা যুক্তির মধ্যে থাকে। কিন্তু ফড়িয়ারা মণপ্রতি ৮ থেকে ১০ কেজি পর্যন্ত বেশি নিচ্ছে। এটা অন্যায়। কিন্তু আমাদের করার কিছু নেই। এতো ধান বাজারে নিয়ে বিক্রি করাও সম্ভব নয়।’
এ বিষয়ে পটুয়াখালী ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সেলিম মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরাও বিষয়টি জানতে পেরেছি। কয়েকটি স্থানে অভিযানও পরিচালনা করা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আবারও অভিযান পরিচালনা করা হবে।’
পটুয়াখালী জেলায় এবার এক লাখ ২২ হাজার ৪৮ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় উচ্চফলনশীল জাতের ধান হেক্টরপ্রতি ৫ থেকে সাড়ে ৫ টন এবং স্থানীয় জাতের ধান ৩ থেকে সাড়ে ৩ টন পর্যন্ত ফলন পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি বিভাগ।