প্রতিনিধি ২৬ মে ২০২১ , ৩:৩৭:১৮ প্রিন্ট সংস্করণ
২৬ মে ২০০৫ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটের মধ্য দিয়ে প্রথম বারের মত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অভিষেক হয়েছিল ছোট, খাট গড়নের ১৬ বছরের এক টগবগে যুবকের। সেদিনের সেই যুবকটি আজকের বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশ দলের মিঃ ডিপেন্ডেবল এবং রান মেশিন বলা হয় তাকে। কালের স্বাক্ষী হয়ে বাংলাদেশ দলের অনেক উত্থান, পতনের গল্পের নায়ক তিনি।
মুশফিকুর রহিমের অভিষেক হয়েছিল স্টিফেন ফ্লেমিং, এন্ড্রু ফিলিন্টপ, ম্যাথিউ হোগার্ড, সাইমন জোন্সদের মত বিশ্ব সেরা বোলিং অ্যাটাক এর বিপক্ষে। তারা হয়তো সেদিন ভেবেই নিয়েছিল এটা তো একটা বাচ্চা। কেননা বর্তমান মুশির থেকে সেই মুশি ছিল একটা বাচ্চার থেকেও ছোট। বোলারদের হয়তো বিপদেই পরতে হয়েছিলে। তারা হয়তো ভাবতো আমাদের বল ও কি করে খেলবে। আজ উল্টো ভয় করে মুশিকে কিভাবে আটকাবো।
৩ টি ডাবল সেঞ্চুরির দুটি উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান হিসাবে। যা বিশ্ব রেকর্ড। আইসিসির ব্যাটিং র্যাংকিংয়ে টেস্ট এবং ওয়ানডেতে বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবার উপরে অবস্থান করছেন মুশফিকুর রহিম।বাংলাদেশ পঞ্চপাণ্ডব এর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তিনি।
কিন্তু তিনি এক্সট্রা অর্ডিনারী কোন প্রতিভার অধিকারী নয় বলেই দাবী করেন মুশি। পরিশ্রম সৌভাগ্যের চাবিকাঠি এই মন্ত্রে বিশ্বাসী হয়েই অক্লান্ত পরিশ্রম করে নিজেকে নিয়ে গেছেন অন্যান্য উচ্চতায়। বাংলাদেশ দলের সাকিব, তামিম, মাশরাফিদের নিয়ে যতটা আলোচনা হয়। মুশফিকুর রহিম কে নিয়ে হয়তো ততোটা নয়। কিন্তু মুশফিকুর রহিমের তাতে কোন অভিযোগ নেই। দলের প্রয়োজনে প্রতিপক্ষের সামনে দেয়াল গড়ে তুলেন তিনি।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের এখন পর্যন্ত সব চেয়ে বেশি টেকনিক সম্পন্ন ব্যাটসম্যান মনে করা হয় তাকে,সেটা নির্দ্বিধায় তামিম,মাশরাফিরা স্বীকার করেছে। তামিম তো সব সময় বলেন আমার ছেলে ক্রিকেটার হতে চাইলে বলবো তুমি মুশফিকের মতো ক্রিকেটার হও। ২০০৬সালে জিম্বাবুয়ে সফরে মুশির ওয়ানডে অভিষেক হয়।ওই বছরের ডিসেম্বরে তার টি-২০ অভিষেক হয়।
মুশফিকুর রহিম এর নেতৃত্বে ২০১২ এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছিল বাংলাদেশ। সেই আসরে অসাধারণ পারফর্মও করেছিলেন তিনি। ফাইনাল হারের কান্নাকে শক্তিতে পরিনত করে অনেক ম্যাচেই অসাধারণ ইনিংস খেলে বাংলাদেশ দল কে রক্ষা করেছেন। এজন্য অনেক সম্মান আর প্রশংসা ও কুড়িয়েছেন মুশফিকুর রহিম।
অভিষেক ম্যাচে মুশফিকের পারফরম্যান্স, প্রথম ইনিংসে ১৯(৫৬) এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৩(৯)। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের একমাত্র খেলোয়াড় হিসাবে ১৫০* তম ম্যাচ জয়ী সদস্য মুশফিক। গতকাল শ্রীলংকার বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে জয়ের ম্যাচে এই মাইল ফলক স্পর্শ করেছিলেন তিনি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ (১২৫২০) রান সংগ্রহক মুশি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ (১৫) সেঞ্চুরিয়ান। শারীরিক গড়ন সাফল্য পথে কখনো বাঁধা হতে পারে না। তার উৎকৃষ্ট উদহারন মুশফিকুর রহিম। ক্যারিয়ারের শেষ দিনে বিশ্ব সেরা তারকাদের আসনে তোমাকে প্রত্যাশা করছি মুশি।