প্রতিনিধি ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ , ৩:১১:২২ প্রিন্ট সংস্করণ
‘একের রক্ত অন্যের জীবন, রক্তই হোক আত্মার বাঁধন’,এই শ্লোগানকে ধারণ করে মহৎপ্রাণ একঝাঁক তরুণের হাত ধরে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন বাঁধন এর পথ চলা শুরু হলে বর্তমানে সারা দেশে ৫৩ জেলায় ৭৫ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ১২ টি জোন, ১৩৯ টি ইউনিট এবং ০৩ টি পরিবারে বাঁধনের কার্যক্রম বিস্তৃত। তারই ধারাবাহিকতায় (০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সালে) ১৩৭ তম ইউনিট হিসেবে যোগ দেয়, ঢাবি অধিভুক্ত সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ।
সেই হিসাবে আজ ০৩ ফেব্রুয়ারি ছিল বাঁধন, সোহরাওয়ার্দী কলেজ ইউনিটের দুই বছর পূর্তি।প্রতিষ্ঠার পর কোভিড-১৯ সংকটে ২০২১ সালেই রক্ত সরবরাহের পরিমান ছিল ১৫৫ ব্যাগ। এবং ১৮০ জন মানুষকেবিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ জানিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে।আজ সোহরাওয়ার্দী কলেজ অধ্যক্ষ মো. মোহসিন কবির জনসচেতনতায়, বিনামূল্যে মাক্স বিতরণের মধ্য দিয়ে বাঁধন, সোহরাওয়ার্দী কলেজ ইউনিটের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন করেন।
এছাড়াও আয়োজিত এ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ইউনিটের উপদেষ্টা জান্নাতুল ফেরদৌস, সভাপতি সাগর সরদার, সাধারণ সম্পাদক মোঃ জুবায়ের হোসেন সহ ইউনিটের কর্মী, সাধারণ সদস্যবৃন্দ।কার্যক্রম চলাকালে সোহরাওয়ার্দী কলেজ ইউনিটের সভাপতি সাগর সরদার ২য় বর্ষ পূর্তিতে সম্মানিত রক্তযোদ্ধা, কর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষী, উপদেষ্টামণ্ডলীসহ সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আর যেন একটি প্রাণ রক্তের অভাবে ঝরে না পড়ে, সেই স্বপ্ন নিয়ে এই করোনা মহামারীর মধ্যেও বাঁধন এর সকল স্বেচ্ছাসেবকগণ আার্থিক, মানসিক ও শারীরিক শ্রম দিয়ে যাচ্ছে। ”
একজন মুমূর্ষু ও মৃত্যু পথযাত্রীর বেঁচে থাকার স্বপ্ন লালন করার প্রয়াসে এগিয়ে আসছে নির্ভীক তারুণ্যের প্রতীক বাঁধনকর্মীরা, যারা উপলব্ধি করতে পেরেছে ‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য’। বাঁধন শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত অঞ্চল, দল, মত, ধর্ম ও বর্ণ নিরপেক্ষ, সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক, অসাম্প্রদায়িক ও স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন।
স্বেচ্ছায় রক্তদানে উদ্বুদ্ধকরণ, স্বেচ্ছায় রক্তদান, অন্যান্য সেবা ও সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সুস্থ সমাজ বিনির্মাণে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা সংগঠনটির মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। শুধুমাত্র রক্তদানে উদ্বুদ্ধকরণ বা রক্তদান করার মধ্যেই বাঁধনের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ নয়। বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবেলায় ত্রান, পুনর্বাসন, অন্যান্য সেবা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে সংগঠনটি।
বৈশ্বিক কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বাঁধনের তরুণ স্বেচ্ছাসেবকরা হ্যান্ড স্যানিটাইজার প্রস্তুত ও বিতরণসহ জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরাসরি এবং সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।বাঁধন স্বপ্ন দেখে সেদিনের, যেদিন দেশের প্রতিটি মানুষ তার নিজ রক্তের গ্রুপ জানবে এবং স্বেচ্ছায় রক্তদানে এগিয়ে আসবে। রক্তস্নাত এই বাংলায় রক্তের অভাবে আর একটি জীবন প্রদীপও যেন নিভে না যায় সেজন্য বাঁধন দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
তৌহিদুল ইসলাম, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ।