নিউজ ডেস্কঃ
স্ত্রীর লাশ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে অ্যাম্বুলেন্সে বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল স্বামী-ছেলেসহ তিনজনের। এক পরিবারের তিনজনের লাশ চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার মজারপোতা গ্রামে মঙ্গলবার ভোরে পৌঁছলে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। এছাড়া দিনাজপুরের পার্বতীপুরে দুজন ও ঘোড়াঘাটে একজন, গাজীপুরের কালিয়াকৈরে দুজন, সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে মোটরসাইকেল চালক, পিরোজপুরের কাউখালীতে নারী এবং কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছে। দুর্ঘটনায় বরিশালে ১৭ জনসহ আহত হয়েছে ২১ জন। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
চুয়াডাঙ্গা : চুয়াডাঙ্গা থেকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে অসুস্থ স্ত্রী হাজেরা খাতুনকে (৬৫) নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক গোলাম রসুল (৭৫)। কিন্তু ঢাকায় পৌঁছানোর আগেই মৃত্যু হয় স্ত্রীর। তবে স্ত্রীর লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারলেন না তিনি। পথে বাসের ধাক্কায় নিহত হন তিনি ও তার ছেলেসহ তিনজন। আহত হয়েছে মেয়েসহ দুজন। মানিকগঞ্জের গোলড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সোমবার ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। গোলাম রসুল চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার মজারপোতা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।
নিহত অন্যরা হলেন ছেলে গোলাম সোহরাব শিপলু (৪৫) ও অ্যাম্বুলেন্সের হেলপার চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের দক্ষিণ হাসপাতালপাড়ার আবদুল হামিদ মোহাম্মদ পুটের ছেলে শাহাবুল হোসেন (২০)। মজারপোতা গ্রামে স্বামী-স্ত্রী ও ছেলেকে মঙ্গলবার সকালে বেদনাবিধুর পরিবেশে পাশাপাশি দাফন করা হয়। গোলাম রসুলের মেয়ে বিথি খাতুন ও চুয়াডাঙ্গা শহরের গুলশানপাড়ার ইসমাইল হোসেনের ছেলে অ্যাম্বুলেন্সচালক সাইফুল ইসলাম চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলা শহরের গুলশানপাড়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছিলেন গোলাম রসুল। স্ত্রী হাজেরা খাতুনকে সম্প্রতি উপজেলার চিৎলা নিউ ডিজিটাল ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার শারীরিক অবনতি হয়। ২৬ ডিসেম্বর তাকে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দেন পরিবারের সদস্যরা। সঙ্গে ছিলেন স্বামী গোলাম রসুল, ছেলে গোলাম সোহরাব শিপলু ও মেয়ে বিথি খাতুন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে মানিকগঞ্জ পার হয়ে হাজেরা খাতুন মারা যান।
এ সময় তারা হতাশ হয়ে লাশ নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় ফিরে যাচ্ছিলেন। মানিকগঞ্জের গোলড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকার হাকিম স্টোরের সামনে সোমবার ভোর ৬টার দিকে একটি বাসের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কা লাগে। এতে দুমড়ে-মুচড়ে যায় অ্যাম্বুলেন্সটি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় গোলাম সোহরাব শিপলুর। পরে স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের সহযোগিতায় মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে তিনজন ও দুজনকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়। মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে থাকা তিনজনকেই উন্নত চিকিৎসার জন্য পঙ্গু হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওইদিন দুপুরে গোলাম রসুল ও হেলপার শাহাবুল হোসেনের মৃত্যু হয়। এখনো মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন বিথি খাতুন ও চালক সাইফুল ইসলাম।
গোলাম রসুলের দুই মেয়ে, এক ছেলে। একমাত্র ছেলে শিপলু স্কয়ার কোম্পানিতে চাকরি করতেন। তার একমাত্র মেয়ে অনুষা। স্ত্রী নিপা খাতুন বর্তমানে সন্তানসম্ভবা। মঙ্গলবার ভোরে তিন লাশ বহনকারী গাড়ি মজারপোতা গ্রামে পৌঁছলে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। এক পরিবারের তিনজনের জানাজা।
E-mil: dailyalokito71sangbad@gmail.com
তথ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত গণমাধ্যম দৈনিক আলোকিত ৭১ সংবাদ
@বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোক চিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।
Copyright © 2024 alokito71sangbad. All rights reserved.