• কৃষি

    সুন্দরগঞ্জে পেঁয়াজের কেজি ৫ টাকা ক্ষতির মুখে কৃষকরা

      প্রতিনিধি ৯ এপ্রিল ২০২২ , ১২:০০:৩২ প্রিন্ট সংস্করণ

    বিদ্যুৎ চন্দ্র বর্মন-স্টাফ রিপোর্টারঃ

    গাইবান্ধা সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হাট-বাজারে উঠতে শুরু করেছে হালি পেঁয়াজ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। ফলে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে পেঁয়াজে। কিন্তু তাতে কৃষকের মুখে হাসি নেই। তাদের অভিযোগ, বাজারে যে দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে তাতে ন্যায্যমূল্য তো দূরের কথা, উৎপাদন খরচই উঠছে না।জানা গেছে, মসলা জাতীয় ফসলের মধ্যে পেঁয়াজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উপজেলায় মুড়িকাটা ও হালি পেঁয়াজের আবাদ করেন চাষিরা। এখন ক্ষেত থেকে হালি পেঁয়াজ সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।

    পুরুষরা মাঠ থেকে পেঁয়াজ তুলে বাড়ির উঠানে নামাচ্ছেন। নারীরা সেই পেঁয়াজ পরিষ্কার করে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করছেন। এবং পুরুষরা উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে গিয়ে বিক্রয় করছেন তবে এবার পেঁয়াজের বাজার মণ প্রতি পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা পযন্ত। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আবহাওয়া অনুকূল থাকায় চলতি মৌসুমে পেঁয়াজ চাষে কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। এ বছর সুুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ৪৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে দিগুণ।

    সরেজমিনে উপজেলা মীরগঞ্জ হাট, সুন্দরগঞ্জ পৌরবাজার চৈতন্যবাজার, পাঁচপীর ডোমেরহাট নয়ারহাটসহ বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা যায়, ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলে হাটে বিক্রি করতে এনেছেন চাষিরা। হাটের চারদিকে পেঁয়াজের ছড়াছড়ি। পাইকারদের হাঁকডাকে বাজার সরগরম। সরবরাহ বেশি হওয়ায় দাম কমে যাওয়ায় হতাশ চাষিরা। পেঁয়াজচাষিরা জানান, সবচেয়ে ভালো পেঁয়াজ প্রতি মণ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৪০০ টাকায়। এতে উৎপাদন খরচও উঠছে না। গুনতে হচ্ছে লোকসান। কৃষকদের দাবি, তাদের প্রতি মণ পেঁয়াজে লোকসান যাচ্ছে ৫শ থেকে ৮শ টাকা।

    পেঁয়াজ উৎপাদন করতে তাদের যে পরিমাণ খরচ হচ্ছে, তাতে করে পেঁয়াজের মূল্য বাজারে কম হওয়ায় লাভের চেয়ে লোকসান হচ্ছে বেশি। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করা না হলে লোকসান আরও বাড়বে। সুুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুরের চর অঞ্চলের পেঁয়াজচাষি হবি মিয়া বলেন, আমি ৮ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছি। বাজারে ন্যায্যমূল্য না থাকায় বিঘা প্রতি ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা লোকশান হচ্ছে। বেলকা ইউনিয়নের কৃষক নাজু মিয়া বলেন, এ বছর ৪ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেছি। গড়ে প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। কিন্তু অসময়ের বৃষ্টির কারণে কাঙ্ক্ষিত আবাদ হয়নি।

    এছাড়া পেঁয়াজের বাজার মূল্য কম থাকায় লাভ হবে না। মীরগঞ্জ হাটের পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী কায়ছার আলম বাপ্পী বলেন, বর্তমানে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বেশি। সে কারণে পেঁয়াজের দাম কম। মানভেদে ২০০থেকে ৫০০ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে।উপজেলা কৃষি অফিসার রাশেদুল কবির বলেন, এ বছর পেঁয়াজ উৎপাদনে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে কিছু পেঁয়াজ ক্ষেত নষ্ট হলেও আমাদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।তিনি আরও বলেন, ভরা মৌসুম বলে এখন একটু পেঁয়াজের দাম কম। তবে পেঁয়াজের দাম বাড়বে। এ বছর উপজেলা চরঞ্চলে পেঁয়াজের ফলন ভালো হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ