• কৃষি

    সুজানগরে প্রাচীন পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ, পচন ধরায় কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি

      প্রতিনিধি ২০ জুলাই ২০২২ , ৬:৩২:৫০ প্রিন্ট সংস্করণ

    উত্তরাঞ্চলের মধ্যে পেঁয়াজ ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত পাবনার সুজানগরে টিনের ঘর বা সেমিপাকা ঘরে বাঁশের মাচা তৈরি করে প্রাচীন পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা হয়। এতে পেঁয়াজে পচন ধরায় প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ টাকা লোকসান গুনতে হয় পেঁয়াজ চাষীদের। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করা হয়েছিল।

    অনুকূল আবহাওয়া আর জমিতে সঠিক সময়ে সার-বিষ দেওয়ায় পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ২ লক্ষ ২১ হাজার মেট্রিক টন। উপজেলার অধিকাংশ কৃষক এ বছর তাদের জমিতে উৎপাদিত পেঁয়াজের ফলনে বেশ খুশি। কিন্তু প্রাচীন পদ্ধতিতে দীর্ঘ মেয়াদে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে না পারায় তারা কাঙ্খিত দামে বিক্রি করতে পারছেন না। উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের আদর্শ পেঁয়াজ চাষী কামরুজ্জামান বলেন পেঁয়াজের ভরা মৌসুমে বাজার একদম কম থাকে। ওই সময় পেঁয়াজ বিক্রি করলে কৃষকের উৎপাদন খরচই ওঠে না।

    তবে আধুনিক পদ্ধতিতে দীর্ঘ মেয়াদে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে ভালো বাজার দেখে পর্যায়ক্রমে বিক্রি করতে পারলে কৃষকের বেশ লাভ হয়। কেননা পেঁয়াজের ভরা মৌসুমে যে পেঁয়াজ প্রতি মণ ৯’শ থেকে ১হাজার টাকা দরে বিক্রি হয় ঠিক সেই একই মানের পেঁয়াজ ঘরে সংরক্ষণ করে ৩/৪মাস পরে বিক্রি করলে ১৪’শ থেকে ১৫’শ টাকা মণ দরে বিক্রি করা যায়।

    কিন্তু বর্তমানে বাঁশের মাচা তৈরি করে যে পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা হয় তাতে দীর্ঘ মেয়াদে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যায়না। এ পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করায় ব্যাপক পচন ধরে এবং শুকিয়ে ওজন একদম কমে যায়। ফলে কৃষকের খুব একটা লাভ হয় না। তাছাড়া বাঁশের মাচা তৈরি করতে অনেক খরচ হয়। উপজেলার মানিকহাট গ্রামের পেঁয়াজ চাষী ওমর আলী প্রামাণিক বলেন ২থেকে ৩’শ মণ পেঁয়াজ সংরক্ষণের উপযোগী একটি প্রাচীন পদ্ধতির বাঁশের মাচা তৈরি করতে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়।

    কিন্তু তারপরও ওই মাচায় প্রয়োজনীয় আলো বাতাস না ঢুকলে পেঁয়াজে পচন ধরে নষ্ট হয়। উপজেলার বোনকোলা গ্রামের ভুক্তভোগী পেঁয়াজ চাষী উজ্জ্বল হোসেন মোল্লা বলেন এ পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করায় প্রায় ২৫ শতাংশ পেঁয়াজ পচে নষ্ট হয়। এতে কৃষকের প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়। ভুক্তভোগী পেঁয়াজ চাষীরা উন্নত এবং আধুনিক পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে সরকারি সহায়তা কামনা করছেন।

    উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রাফিউল ইসলাম বলেন এখন পর্যন্ত পেঁয়াজ সংরক্ষণে প্রাচীন পদ্ধতির বাইরে বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেই। তবে পেঁয়াজের পচন রোধে যে সকল বাঁশের মাচায় পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা হয় সেখানে পর্যাপ্ত আলো বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা রাখতে হবে। সেই সঙ্গে মাচায় পেঁয়াজ পাতলা করে রাখতে হবে এবং মাঝেমধ্যেই তা দেখভাল করতে হবে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ