প্রতিনিধি ২৪ জুলাই ২০২২ , ৫:৪৭:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ
পাবনার সুজানগরের ৭৪ নং শান্তিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ একটি সেমিপাকা ঘরে চলছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান। বিদ্যালয়ের এ ঘরটি এতই ঝুঁকিপূর্ণ যে, সব সময় দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার সরেজমিন পরিদর্শন ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৭০ সালে সুজানগর উপজেলার দুলাই ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়।
পরবর্তী সময়ে একটি সেমিপাকা ঘর এবং ২০০৭ সালে ৩ কক্ষবিশিষ্ট একটি একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে পাকা একতলা ভবনের ১টি কক্ষ ব্যবহূত হয় প্রধান শিক্ষক ও অন্য শিক্ষকদের জন্য, অপর দুইটি কক্ষ এবং বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ সেমিপাকা ঘরে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুইশতাধিক । শিক্ষক রয়েছেন ৪ জন।
বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী শ্রাবন্তী আক্তার জানায়, বিদ্যালয়ের ফাটলধরা শ্রেণীকক্ষে ক্লাস করতে ভয় হয়। বৃষ্টির সময়ে উপরের টিন দিয়ে ছুঁয়ে পানি পড়ে মেঝেতে এছাড়া দরজা জানালাগুলো ভাঙা থাকায় বৃষ্টি হলে বাতাসের তোড়ে শ্রেণীকক্ষে পানি ঢুকে বই-খাতা ভিজে যায়। এ কারণে অনেক সময় স্কুলে আসি না।শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা জানান, বিদ্যালয়ের পাশেই ব্যক্তিমালিকানা জমিতে কোন ধরণের নিয়মনীতি না মেনে স্থানীয় প্রভাবশালীমহল পুকুর খনন করে
সেখানে মাছ চাষ করায় পুকুরের পাড় ভেঙ্গে বিদ্যালয়ের পুরাতন ঘরটি আরও বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। বর্তমানে যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে যে কোন সময় ঘরটি ভেঙ্গে পরতে পারে ।
এ কারণে বাচ্চাদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শফিউল আলম জানান, সেমিপাকা ঘরটির শ্রেণি কক্ষগুলো জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ফলে সব সময় দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
অবস্থা দিনদিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ঘর জেনেও পাঠদান চালু রাখার স্বার্থে সেখানে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য আমরা জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.রওশন আলী জানান, ইতিমধ্যে উপজেলা প্রকৌশলীকে সরেজমিনে পরিদর্শন করে বিদ্যালয়ের ঘরটি ঝুঁকিপূর্ণ হলে পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে বলা হয়েছে।
সুজানগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সভাপতি শাহীনুজ্জামান শাহীন জানান, বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান চালু রাখতে এবং নতুন ভবন না হওয়া পর্যন্ত অস্থায়ী ভিত্তিতে বিকল্প কোন ব্যবস্থা করা যায় কিনা সে বিষয়ে অতি দ্রুতই পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।এদিকে বিদ্যালয়েযেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় কোনো দুঘর্টনা । তাই বিদ্যালয়ের এ দুরাবস্থা থেকে উত্তরণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।