প্রতিনিধি ৮ জানুয়ারি ২০২২ , ৪:২৪:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ
শাকিল হোসেন-স্টাফ রিপোর্টারঃ
নওগাঁর পত্নীতলার ঘোষনগর ইউনিয়নের সহিংসতার মামলায় গ্রেপ্তার চেয়ারম্যান প্রার্থী ফারজানা পারভীনের বাড়িতে আগুন লেগেছে। পুড়ে গেছে বাড়ির সব আসবাবপত্র। তবে কেউ হতাহত হননি।
ফারজানার পরিবারের দাবি, নির্বাচনি বিরোধের জেরে আগুন দেয়া হয়েছে।
ইউনিয়নের কমলাবাড়িতে শুক্রবার মধ্যরাতে এই ঘটনা ঘটে।
পত্নীতলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ রায়হান ইসলাম জানান, বাড়িটিতে পরিকল্পিতভাবে আগুন দেয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তা নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। তবে তদন্তের পরই আগুন লাগার কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ফারজানা নৌকার বিদ্রোহী হিসেবে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। চেয়ারম্যান পদে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নৌকার প্রার্থী আবু বক্কর সিদ্দিক। ভোটের দিন ঘোষনগরের একটি কেন্দ্রে পুলিশের গাড়িতে আগুন দেয়ার অভিযোগে ফারজানার নামে মামলা দেয় পত্নীতলা থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাকে ও তার স্বামী মতিউর রহমানসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়।
সহিংসতার জেরে এই ইউনিয়নসহ উপজেলার ৪ ইউনিয়নের ফল স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন।
ফারজানার মেয়ের জামাই আতিকুর রহমান রাসেল বলেন, ‘আমার শাশুড়ি এবং শ্বশুর দুজনই এখন জেলে আছেন। আমি আর আমার স্ত্রী দুজনেই নওগাঁ শহরে থাকি। তাই বাড়িতে কেউ ছিলেন না। এই সুযোগে রাত ১২ টারদিকে কে বা কারা আমার শ্বশুরবাড়িতে আগুন লাগিয়েছে।’
ফারজানার প্রতিবেশী মাহমুদা আক্তার বলেন, ‘রাত ১২টার দিকে হঠাৎ আমরা আগুনের শিখা দেখতে পাই। গিয়ে দেখি উনাদের (ফারজানা) ঘরে আগুন জ্বলছে। বাড়ির সামনে একটা বড় গ্যারেজ ছিল। সেখানে ৫ থেকে ৬টা মোটরসাইকেল ছিল। সেগুলো পুড়ে গেছে।
‘বাড়ির অন্যান্য আসবাবপত্র সব কিছু পুড়ে গেছে। বর্তমানে এই গ্রামে কোনো পুরুষ নেই। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মামলার কারণে সবাই বাড়িছাড়া। আমরা মহিলারা মিলে অনেক চেষ্টা করে আগুন কিছুটা নেভানো গেছে। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে কাজ করে।’
পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল আলম জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
সহিংসতার যে মামলায় ফারজানা গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাতে অভিযোগ করা হয়েছে ঘোষনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কমলাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটের পর প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা ফল ঘোষণা না করেই বের হয়ে যেতে চেষ্টা করেন।
ফারজানাকে গ্রেপ্তারের পর নওগাঁর পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া জানান, বুধবার রাতে ঘোষনগর ইউপিতে ভোটের পর পুলিশের একটি পিকআপ ও রিকুইজিশন করা একটি মাইক্রোবাসে আগুন দেয় স্থানীয়রা। পুলিশের অস্ত্র ছিনতাই ও তাদের ওপর হামলা করা হয়। ভোটের দায়িত্বে থাকা ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বেশ কিছু ব্যালট বাক্সও ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা।
সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর এবং ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ঘোষনগরের পাশাপাশি কৃষ্ণপুর, পত্নীতলা ও আকবরপুর ইউপিতেও ভোটের দিন সহিংসতা হয়েছে। এসব ঘটনায়ও মামলা হয়েছে।
বুধবার পত্নীতলার ১১ ইউপিতে ভোট হয়েছে। তবে সহিংসতার জেরে ওই ৪ ইউপির ফল স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন।