প্রতিনিধি ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ , ২:৩৯:৪৪ প্রিন্ট সংস্করণ
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলা ও সলঙ্গা থানার সলঙ্গা ইউনিয়নের চৌবিলা চকপাড়া গ্রামের মৃত আবু হানিফের ছেলে আব্দুল মজিদ (২১) হত্যা রহস্য উদঘাটন হয়েছে বলে দাবী করেছেন সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার মোঃ রেজাউল করিম।
রবিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবী করেন। এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, একই গ্রামের আমজাদ হোসেনের মেয়ে মোছাঃ আলপনা খাতুনের (১৮) সাথে ২০১৮ সালের ২৩ মার্চ বিয়ে হয়। বিয়ের পরের দিন ২৪ মার্চ আব্দুল মজিদ তার স্ত্রী আলপনা খাতুনকে সাথে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি আঠুরি যায়।
সেখানে তারা রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। তার পরের দিন ২৫ মার্চ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে স্থানীয় লোকজন হাট চৌবিলা গ্রামের জয়নাল আবেদীনের বাড়ির পাশের নিজস্ব বাঁশ ঝাড়ের মধ্যে থেকে অগ্নিদগ্ধ মজিদকে মূমুর্ষ অস্থায় উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
২৮ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুল মজিদ মারা যায়। এ ঘটনায় নিহতর বড় ভাই আব্দুল মমিন বাদী হয়ে নিহতর স্ত্রী আলপনা খাতুন সহ ৬ জনকে আসামী করে সলঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২৮, তারিখ ২৯/০৩/২০১৮ ইং, ধারা-৩০২/৩৪ দঃ বিঃ।
এরপর আদালতের নির্দেশে এ মামলার তদন্ত শুরু করেন সিরাজগঞ্জ পিবিআই। সিরাজগঞ্জ পিবিআই তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোঃ রায়হান আলী শেখ তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারেন যে, নববধূ আলপনার সাথে নিহত আব্দুল মজিদের বন্ধু জিহাদের আগে থেকে প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
আব্দুল মজিদের সাথে আল্পনার বিয়ে হওয়ায় প্রেমিক জিহাদ ক্ষুব্ধ হয়ে প্রেমিকা আল্পনার সাথে পরামর্শ করে আব্দুল মজিদকে খুন করে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৫ মার্চ রাত আড়াইটার দিকে আলপনাকে ঘর থেকে ডেকে বের করে জাহিদ।
আব্দুল মজিদ বিষয়টি টের পেয়ে সে তাদের পিছু নেয়। মজিদের উপস্থিতি টের পেয়ে জিহাদ ও তার সহযোগীরা মজিদকে মুখ চেপে ধরে নদীর পাড়ে নিয়ে মারপিট করে। এতে মজিদ জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। আসামীরা তাকে মৃত ভেবে হাট চৌবিলা গ্রামের জয়নাল আবেদীনের বাড়ির পাশের নির্জন বাঁশ ঝাড়ের মধ্যে নিয়ে শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।
দীর্ঘ চেষ্টার পর গত ১০ ফেব্রুয়ারী সকালে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রায়হান আলী শেখের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল গাজীপুরের কালিগঞ্জ এলাকা থেকে ২নং আসামী মোঃ জিহাদকে গ্রেপ্তার করে।
এরপর আসামী জিহাদকে ১১ ফেব্রুয়ারী সিরাজগঞ্জ চৌকি আদালতে হাজির করলে তিনি এ হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী হিসেবে নিজের দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। এর আগে এ মামলার ১নং আসামী মোছাঃ আল্পনা খাতুন নিজের দোষ স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছিল। এ মামলার অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।
এ সংবাদ সম্মেলনে সিরাজগঞ্জ জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক গোলাম কিবরিয়া, জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক আবুল বাশার, জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক মো: সোহেল রানা, এসআই মোঃ রায়হান আলী শেখ উপস্থিত ছিলেন।