মাহবুব রামগতি (লক্ষ্মীপুর)
সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসায় অনুরোধ করায় এক মাদ্রাসা প্রধানকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার এসএম আমির ফয়সালের বিরুদ্ধে। এ সময় মিথ্যা অভিযোগ তুলে ওই শিক্ষককে হাসপাতালে আটকে রেখে পুলিশের হাতেও সোপর্দ করা হয়। তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যে তা প্রমাণ না হওয়ায় পুলিশ তাকে ছেড়ে দেন। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে সংঘটিত এ ঘটনায় বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক মাওলানা ইয়াকুব শরীফ।তিনি উপজেলার জমিদারহাট মারকাযুত তাক্ওয়া কওমি মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য উপজেলার জমিদারহাট মারকাযুত তাক্ওয়া কওমি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের মঙ্গলবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তাদের বহনকারী ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিক্সা উপজেলার আশ্রম এলাকায় পৌঁছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কে উল্টে পড়ে। এতে মাদ্রাসার শিক্ষক আয়েশা আক্তার ও ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী রোজিনা আক্তারসহ আটজন আহত হন। এ সময় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ গুরুতর আহত আয়েশা ও রোজিনাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীদের ডিজিটাল এক্স-রে করার পরামর্শ দেন।
সে অনুযায়ী পার্শ্ববর্তী ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে এক্স-রে করে ওই রিপোর্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়। কিন্তু জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত মেডিক্যাল অফিসার এসএম আমির ফয়সল রিপোর্ট না দেখে কালক্ষেপণ করনে। এ সময় মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা ইয়াকুব শরীফ ওই চিকিৎসককে রিপোর্ট দেখার অনুরোধ জানালে তিনি ক্ষেপে উঠেন। একপর্যায়ে তিনি মাদ্রাসা প্রধানকে কয়েকবার ধাক্কা দিয়ে ভেতরের কক্ষে নিয়ে আটকে রাখেন। পরে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ তুলে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যে অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে পুলিশ ওই মাদ্রাসা প্রধানকে ছেড়ে দিয়েছেন। কর্তব্যরত চিকিৎসকের এমন নিষ্ঠুর আচরণে উপস্থিত সকলেই তাকে ধিক্কার জানান।
ভুক্তভোগী মাদ্রাসা প্রধান মাওলানা ইয়াকুব শরীফ বলেন, গুরুতর আহত দুইজন রোগীর চিকিৎসায় অনুরোধ করায় একজন চিকিৎসক যে ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন তা খুবই কষ্টদায়ক। আমি ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি করছি।এ ব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য অভিযুক্ত চিকিৎসক এসএম আমির ফয়সালের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেনি। খুদে বার্তা পাঠালেও তার কোনো সাড়া মেলেনি।রামগতি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুমন চন্দ্র হাওলাদার বলেন, ডাক্তার ও মাদ্রাসা প্রধানের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝিতে এ ঘটনাটি ঘটেছে।
পরে দু’জনকে বুঝিয়ে ঘটনাটি সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামনাশিস মজুমদার জানান, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।এখন তা সমাধানের চেষ্টা চলছে।অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম শান্তনু চৌধুরী বলেন, এ ব্যাপারে আজ বৃহস্পতিবার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। ওই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
E-mil: dailyalokito71sangbad@gmail.com
তথ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত গণমাধ্যম দৈনিক আলোকিত ৭১ সংবাদ
@বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোক চিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।
Copyright © 2024 alokito71sangbad. All rights reserved.