প্রতিনিধি ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৪:০৫:১৩ প্রিন্ট সংস্করণ
এইচ.এম.আল-আমিন,লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলা সংবাদিক ইউনিটির সভাপতি ডেইলি অবজারভার ও আমাদের নতুন সময় প্রতিনিধি রিয়াজ মাহমুদ বিনুকে উদ্দেশ্য করে রামগতি থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন মুঠোফোনে দম্ভোক্তি করে বলেন, আপনি থানায় আসবেন না। আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর ওসি থানার অফিসিয়াল নম্বর থেকে কল করে এ হুমকি দেন। ইতোমধ্যে ওসির সঙ্গে সাংবাদিক বিনুর ওই কথোপকথনের একটি অডিও ক্লিপ নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যে কারণে বিষয়টি এখন টক অব দ্যা রামগতিতে পরিণত হয়।
ভাইরাল হওয়া ওই অডিও ক্লিপের একটি অংশে ওসিকে বলেত শুনা যায়, ‘যদি প্রমাণ করতে পারেন সংবাদ সম্মেলন করেন। প্রমাণ করতে না পারলে আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি ভাইস্যা আসছি, রংপুর থেকে আসছি? এসব ফাইজলামি বাদ দেন। আপনি আর থানায় আসবেন না। এ ঘটনায় উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা শুক্রবার এক বৈঠকে বসেন। এ সময় রিয়াজ মাহমুদ বিনু জানান, গত ১১ সেপ্টেম্বর রামগতির চরপোড়াগাছা ইউনিয়ন থেকে অস্ত্রসহ ইব্রাহিম নামের এক যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেন।
বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকরা নিজ নিজ পত্রিকায় সংবাদ কাভার করেন। কিন্তু এ ঘটনার দুইদিন পর ওই যুবকের পরিবার ইব্রাহিমকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ তুলে রামগতি উপজেলা সাংবাদিক ইউনিটির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে চান।এ খবর পেয়ে রামগতি থানার ওসি ইউনিটির সভাপতি বিনুর মুঠোফোনে কল করে ওইসব কথা বলেন। এদিকে ওসির এমন দম্ভোক্তিতে উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ওসির এমন অসদাচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সাংবাদিকরা বলেন, জনগণের সেবক হয়ে একজন সরকারি চাকুরিজীবি এমন আচারণ করতে পারেন না।
একজন সাংবাদিক নেতার সাথে তাঁর আচারণ এমন হলে সাধারণ মানুষের সাথে কেমণ আচরণ করেণ? সে প্রশ্ন এখন দেখা দিয়েছে। তাঁরা বলেন, যে কোনো ব্যাপারে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন একটা স্বাভাবিক ঘটনা।
এ নিয়ে ওসির এমন হস্তক্ষেপ মোটেই কাম্য নয়। সাংবাদিক রিয়াজ মাহমুদ বিনু বলেন, যে কোনো ব্যক্তি বা দল আমাদের অফিসে সংবাদ সম্মেলন করতেই পারেন। ওসি সাহেব এতে হস্তক্ষেপ করতে পারেন না।
সংবাদ সম্মেলনের আয়োজকদের (ইব্রাহিমের পরিবার) কিছু না বলে উল্টো তিনি আমার উপর চড়াও হয়েছেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, রামগতি থানায় যোগদানের আগে ওসি আলমগীর হোসেন কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ছিলেন। পরবর্তীতে ওসি হয়ে তিনি রামগতি থানায় যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজনের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে আসছেন। এছাড়াও রামগতির বিভিন্ন মাছঘাট ও সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে সোর্সের মাধ্যমে তাঁর চাঁদা তোলার বিষয়টি নিয়েও রয়েছে গুঞ্জন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে রামগতি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, সাংবাদিক বিনু সাহেবের বাড়ি থানার পাশে হওয়ায় আমার সাথে সুসম্পর্ক রয়েছে। তাই, আবেগের সাথে তাঁকে আমি দু’-চারটি কথা বলেছি। এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, সাংবাদিকের সঙ্গে একজন পুলিশ কর্মকর্তার এমন আচরণের বিষয়টি দুঃখজনক। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।