প্রতিনিধি ৯ ডিসেম্বর ২০২১ , ২:৫১:৪৪ প্রিন্ট সংস্করণ
নিউজ ডেস্কঃ
বুধবার দুপুরে মাঝ আকাশে হঠাৎ করেই ভেঙে পড়ে ভারতের প্রতিরক্ষা প্রধান বিপিন রাওয়াতকে বহনকারী সর্বাধুনিক সামরিক হেলিকপ্টারটি। গুরুতর জখম হওয়া রাওয়াতকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
ওই হেলিকপ্টারে ছিলেন বিপিন রাওয়াত তার স্ত্রী, সামরিক কর্মকর্তা ও ক্রুসহ মোট ১৪ যাত্রী। এর মধ্যে ১৩ জনেরই মৃত্যু নিশ্চিত করে ভারতীয় বিমান বাহিনী। এ ঘটনায় বেঁচে থাকা একজন এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে হাইটেনশন তারে ধাক্কা লেগে মাটিতে পড়ার পর আগুন লেগে যায় হেলিকপ্টারটিতে। প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশ দাবি করছেন, তারা আকাশেই হেলিকপ্টারটিতে আগুন লেগে যেতে দেখেছেন। এরপর জ্বলন্ত হেলিকপ্টারটি মাটিতে আছড়ে পড়ে।
সেনা কর্মকর্তাদের একটি অংশ মনে করছেন, দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ হয়ে থাকতে পারে দৃশ্যমানতার অভাব। কারণ দৃশ্যমানতা কম হয়ে গেলে, তা হেলিকপ্টার পাইলটের কাছে এক বিভীষিকার সমান।
বুধবার নীলগিরির যে অংশের ওপর দিয়ে এই হেলিকপ্টারটি যাচ্ছিল, সেই এলাকায় দৃশ্যমানতা অনেকটাই কম থাকে। এছাড়া বিগত কয়েকদিন ধরে আবহাওয়া খারাপ ছিল। সেই কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
শুক্রবার বিকেলে দিল্লির সেনা ছাউনিতে প্রয়াত প্রতিরক্ষা সর্বাধিনায়ক জেনারেল বিপিন রাওয়াত এবং তার স্ত্রী মধুলিকার শেষকৃত্য হবে।
বিমানবাহিনীর সাবেক গ্রুপ ক্যাপ্টেন রমেশকুমার দাস বলেন, হেলিকপ্টারে একাধিক ‘মুভিং পার্টস’ থাকে। হেলিকপ্টারের মাথার ওপর যেমন ব্লেড ঘোরে, তেমনই থাকে ‘টেল রোটার’ অর্থাৎ হেলিকপ্টারের পিছনে বা লেজের দিকে পাখা ঘুরতে থাকে। পাহাড়ে বিভিন্ন মুখী হাওয়া চলে। কখনও উপর দিক থেকে নীচের দিকে, কখনও নীচ থেকে উপরে হাওয়া ওঠে। অনেক সময় এর হঠাৎ তারতম্য ঘটলে অসুবিধায় পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
রমেশআরও বলেন, যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হেলিকপ্টারে ওঠার আগে সেই হেলিকপ্টারের একাধিক পরীক্ষা করা হয়। ‘সার্ভিস এবিলিটি’ অর্থাৎ পরীক্ষার সঙ্গে যন্ত্রাংশ খুঁটিয়ে দেখা হয়। কোনও এয়ারবেসের স্কোয়াড্রনে যত এয়ারক্রাফট থাকে তার মধ্যে সব থেকে ভালটাই ব্যবহার করা হয় শীর্ষ কর্মকর্তাদের বহনের কাজে। অভিজ্ঞ পাইলটই সেই হেলিকপ্টারের চালকের আসনে থাকেন।
প্রয়াত প্রতিরক্ষাপ্রধানকে সম্মান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইটারে লিখেছেন, জেনারেল বিপিন রাওয়াত একজন অসাধারণ সেনা কর্মকর্তা ছিলেন। একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক। তিনি আমাদের সশস্ত্র বাহিনী এবং নিরাপত্তা সরঞ্জামের আধুনিকীকরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। কৌশলগত বিষয়ে তার অন্তর্দৃষ্টি এবং দৃষ্টিভঙ্গি ছিল ব্যতিক্রমী। তার মৃত্যু আমাকে গভীরভাবে শোকাহত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও লিখেছেন, ভারতের প্রথম প্রতিরক্ষাপ্রধান হিসাবে, জেনারেল রাওয়াত প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বিভিন্ন সংস্কারসহ আমাদের দেশের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন দিক নিয়ে কাজ করেছেন। সেনাবাহিনীতে কাজের একটি সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা তিনি পরবর্তীতে ব্যবহার করেছিলেন। ভারত তার ব্যতিক্রমী সেবা কোন দিন ভুলবে না।