মো.মাহাফুজুর রহমান-নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:
নড়াইল লোহাগড়া উপজেলার নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের ব্রাহ্মনডাঙা গ্রামের নারীদের বছরে ৫ মাস কুমড়োরবড়ি তৈরি করে সংসার চলে। কলাই ডাল পাটায় বেটে তাতে চাল কুমড়ো মিশিয়ে তৈরি হয় এই বড়ি। প্রতি বছরই কার্তিক থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত গ্রামটিতে ধুম পড়ে যায় বড়ি তৈরীর। বছরের এই ৫ মাস বেশির ভাগ পরিবারগুলোর আয়ের একমাত্র উৎস এই কুমড়োর বড়ি বিক্রি। ডালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিক্রয় মূল্য না বাড়লে বড়ি উৎপাদন করা দুরুহ হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন তারা।
তরকারীর স্বাদকে ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যেতে কুমড়ো বড়ি অতুলনীয়।ওই গ্রামের কুমড়োর বড়ির কারিগর মিনতি কুন্ডু জানান, 'বাজার থেকে ডাল কিনে সেই ডাল রাতে ভিজিয়ে রাখা হয়। কাক ডাকা ভোরে সেই ডাল মেশিনে ভেঙ্গে অথবা শিল পাটায় বেটে উজ্জল রোদে ডাল ও চাল কুমড়ার মিশ্রণ রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হয় কুমড়োর বড়ি । নরম অবস্থায় এগুলো পাতলা কাপড়ে ও মাচায় সারি সারি করে রোদে রাখা হয় শুকানোর জন্য। ভাল করে শুকিয়ে তা বাজারে বিক্রি করা হয়। রুপগঞ্জ বাজারে শুকনো কুমড়োর বড়ি ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয় ।
মিনতি আরও বলেন, ছোট বেলায় মা মাসিদের কাছ থেকে কুমড়োর বড়ি তৈরীর কাজ শিখেছি। ১০/১২ বছর ধরে কুমড়োর বড়ি তৈরীর কাজ করছি। প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ কেজি কুমড়োর বড়ি বিক্রি করে ৪'শত থেকে ৫' শত টাকা লাভ হয়। এই কাজে আমার পরিবারের অন্য সদস্যরা সাহায্য করে থাকে।
নারী উদ্যেক্তা ইসমত আরা বলেন, 'গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য কুমড়োর বড়ি বাজারের অন্য পন্যের তুলনায় দামের দিক থেকে অনেক কম। ভালো বাজার পেলে সারাদেশে তুমুল জনপ্রিয় এই খাবার বিক্রি করে গ্রামের এই নারীরাও স্বললম্বী হতে পাবে। লোহাগড়া উপজেলার ব্রাহ্মনডাঙ্গা গ্রামের অনেক নারী এই কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। অনেকে ২৫ থেকে ৩০ বছর ধরে এই কাজ করছেন। আমরা চেষ্টা করছি দেশের সর্বত্র জনপ্রিয় এই খাবার ছড়িয়ে দিতে'।
এ বিষয়ে লোহাগড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা আক্তার বলেন কুমড়ার বড়ি ,সারাদেশে তুমুল জনপ্রিয়। মুল উপকরণ চাল কুমড়া ,মাসকলাই যা নড়াইলে ব্যাপক চাষাবাদ হয়। এ ক্ষেত্রে গ্রামের মহিলারা এই কাজে আত্মনিয়োগ করে তারা যে কুমড়ার বড়ি তৈরী করছেন, এতে তাদের যেমন কার্মসংস্থান হচ্ছে সেই সাথে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন'।
তিনি আরও বলেন, 'উন্নতবাজার ব্যবস্থা ও কারিগরি সহযোগিতা পেলে ওই গ্রামের নারীরা আরও উৎসাহী হয়ে এই কাজে আত্মনিয়োগ করবে। এই কার্যক্রম যদি সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারি, বাজার ব্যবস্থা উন্নত করতে পারি তাহলে অনেকেই এই কাজে এগিয়ে আসবে'।
E-mil: dailyalokito71sangbad@gmail.com
তথ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত গণমাধ্যম দৈনিক আলোকিত ৭১ সংবাদ
@বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোক চিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।
Copyright © 2024 alokito71sangbad. All rights reserved.