ক্যাম্পাস প্রতিনিধি:
ব্যানার ও পোস্টারে ঢাকা সরকারি কবি নজরুল কলেজের প্রধান ফটক। তবে জাতীয় কবি নজরুলের প্রতিকৃতিতে পোস্টার বসানো হয়নি। এতেই স্বস্তি অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বন্ধুদের কাছে শোনা ঠিকানা মিলিয়ে পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে কবি নজরুল সরকারি কলেজের সামনে এসে দাঁড়িয়ে ছিলেন হাবিবুর রহমান। তবে কলেজের গেটের সামনে এসেও বুঝতে পারছিলেন না ঠিক জায়গায় এসেছেন কি না। কারণ, কলেজের নামফলক ও ফটক কলেজ কর্তৃপক্ষ আর বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের ব্যানার-পোস্টারে ঢাকা।
কলেজ কর্তৃপক্ষ ও ছাত্রসংগঠনের বিভিন্ন ব্যানার-পোস্টারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামফলক পর্যন্ত ঢেকে ফেলা হয়েছে। তবে যার নামে কলেজ, সেই জাতীয় কবির প্রতিকৃতিতে পোস্টার বসানো হয়নি। এতেই স্বস্তি লাগল।আজ বৃহস্পতিবার সকালে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে পাওয়া যায় হাবিবুর রহমানকে। তিনি কাল শুক্রবার ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি সচিবালয়ের অন্তর্ভুক্ত সাতটি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা দেবেন। ওই পরীক্ষার কেন্দ্র এই কলেজ। তাই দেখে নিতে এসেছিলেন।
পরীক্ষার জন্য মিরপুর থেকে পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে এক বন্ধুর বাসায় এসেছেন হাবিবুর রহমান।
তিনি বললেন, ‘সদরঘাটগামী রাজধানীর যেকোনো বাসে চড়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বাসস্ট্যান্ডে নেমে বাহাদুর শাহ পার্কের সামনে সরকারি কবি নজরুল কলেজ—বন্ধুদের কাছে এমনটি শুনে এসেছি। তবে এসে সরাসরি কলেজ চেনার উপায় নেই। কলেজ কর্তৃপক্ষ ও ছাত্রসংগঠনের বিভিন্ন ব্যানার-পোস্টারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামফলক পর্যন্ত ঢেকে ফেলা হয়েছে। তবে যার নামে কলেজ, সেই জাতীয় কবির প্রতিকৃতিতে পোস্টার বসানো হয়নি। এতেই স্বস্তি লাগল।’
কলেজে ছাত্রলীগের কমিটি থাকলে হয়তো একটা শৃঙ্খলার মধ্যে থাকত। তবে প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে আমার পরামর্শ, বর্তমানে যাঁরা আছেন, তাঁরা কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করবেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাওলাদার।
প্রধান ফটকের দিকে তাকিয়ে দেখা গেল, কলেজের নামফলকের ওপরে কলেজ কর্তৃপক্ষ বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা ব্যানার লাগিয়েছে। আর ফটকের দুই পাল্লায় ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী বিভিন্ন নেতা–কর্মীর শুভেচ্ছার ব্যানার-পোস্টার।
কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী আফতাব হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন ব্যানার পোস্টার লাগানো এখন স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে একটি কলেজের প্রধান ফটক এভাবে ব্যানার-পোস্টারে ঢেকে থাকবে, তা বেমানান। কয়েক দিন আগে আমার বাবাও এসেছিলেন, তিনিও বিষয়টি দেখে দুঃখ পেয়েছেন।’
কলেজের উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামান বলেন, ভর্তি হতে আসার প্রথম দিন এই দৃশ্যটি দেখে খারাপ লেগেছিল। ভেবেছিলাম হয়তো কয়েক দিনের জন্য লাগানো হয়েছে। তবে বছর পেরিয়ে গেলেও অনেক ব্যানার-পোস্টার কখনো সরানো হয় না।
ফটকে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক শিক্ষা ও পাঠচক্র এবং সাবেক সহসভাপতির পরিচয়ে হুমায়ুন কবির নামের একজনের পোস্টার লাগানো ছিল। মুঠোফোন নম্বর জোগাড় করে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তবে ফোন তিনি ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠানোর পর দুপুর ১২টা পর্যন্ত কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
বর্তমানে কবি নজরুল সরকারি কলেজে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। গত দেড় বছর আগে সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। এ বিষয়ে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাওলাদার বলেন, ‘কলেজে ছাত্রলীগের কমিটি থাকলে হয়তো একটা শৃঙ্খলার মধ্যে থাকত। তবে প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে আমার পরামর্শ, বর্তমানে যাঁরা আছেন, তাঁরা কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করবেন।’
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ আমেনা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, কলেজের ফটক থেকে ব্যানার ও পোস্টার সরানোর জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষকে অসংখ্যবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তবে কলেজে কমিটি না থাকার কারণে অনেকে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয় না। নামফলকের ওপরে বিজয় দিবসের ব্যানার এখনো লাগানো কেন, জানতে চাইল তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
E-mil: dailyalokito71sangbad@gmail.com
তথ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত গণমাধ্যম দৈনিক আলোকিত ৭১ সংবাদ
@বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোক চিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।
Copyright © 2024 alokito71sangbad. All rights reserved.