প্রতিনিধি ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৫:০২:৫৭ প্রিন্ট সংস্করণ
বিসিএসের পরীক্ষাপদ্ধতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। গত কয়েকটি বিসিএসের ফল মূল্যায়ন করার পর দেখা গেছে, বিজ্ঞান বিভাগ থেকে বেশি প্রশ্ন করা হচ্ছে। এ কারণে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করা চাকরিপ্রার্থীরা পরীক্ষায় বেশি সুবিধা পাচ্ছেন।
ভবিষ্যতে পিএসসির অধীনে যত প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা হবে, সেসব পরীক্ষায় প্রশ্ন করার ক্ষেত্রে ‘ভারসাম্য’ রাখা হবে। চাকরিপ্রার্থীদের জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি করা হবে। এর ফলে কোনো একটি বিভাগ থেকে পাস করা চাকরিপ্রার্থীরা বেশি সুবিধা পাবেন না। শিগগির এ পরিবর্তন প্রয়োগ করা হবে। পিএসসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত ৪০তম বিসিএসের ফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করা চাকরিপ্রার্থীরা বেশি সুবিধা পেয়েছেন। কারণ, প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় বিজ্ঞানের নানা বিষয় থেকে প্রশ্ন হয়। এতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে আসা চাকরিপ্রার্থীরা যতটা ভালো করেছেন, সে তুলনায় মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে আসা চাকরিপ্রার্থীরা ততটা ভালো করতে পারেননি।
৪০তম বিসিএসের পর দেখা গেছে, চিকিৎসক ও প্রকৌশলীরাই ভালো ক্যাডার পাওয়ার দিক থেকে এগিয়ে। তাঁরা ১৫টি ক্যাডারে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। শুধু বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকেই প্রশাসন ক্যাডারে ৫০ জন চাকরি পেয়েছেন। এভাবে একচেটিয়াভাবে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করা চাকরিপ্রার্থীরা যেন বেশি সুবিধা করতে না পারেন, সে জন্য পরীক্ষাপদ্ধতিতে ওই পরিবর্তন আনছে পিএসসি। এটি করার আগে একটি তদন্ত কমিটি হয়।
মৌখিক পরীক্ষায় প্রচলিত নিয়মের বাইরে গিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিএসসি। এখানে ২০০ নম্বর বরাদ্দ আছে। যাঁরা লিখিত পরীক্ষায় পাস করেন, তাঁরা এ পরীক্ষায় অংশ নেন।বর্তমান পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার পর পরীক্ষার্থীদের ঢালাওভাবে নম্বর দেওয়ার বিধান আছে। এখানেই পরিবর্তনটা আসছে। মৌখিক পরীক্ষা কমিটিতে আছেন, এমন একজন পিএসসি সদস্য আলোকিত ৭১ সংবাদ কে বলেন, ৪১তম বিসিএস থেকে মৌখিক পরীক্ষায় চাকরিপ্রার্থীর জন্য বিভিন্ন বিষয়ে নম্বর ভাগ করে দেওয়া থাকবে।
সঠিক প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার হার কত, পোশাক পরিচ্ছদে কেমন, মানসিক দক্ষতা কেমন, আত্মবিশ্বাস কতটা, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা কতটা—এসব বিষয়ে আলাদা নম্বরের ঘর থাকবে। সেখানে প্রত্যেক পরীক্ষক আলাদা করে প্রার্থীকে নম্বর দেবেন। শেষে সবার নম্বর যোগ করে মৌখিক পরীক্ষার নম্বর নির্ধারণ করা হবে। আগের মতো ঢালাওভাবে নম্বর দেওয়া হবে না। জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন আলোকিত ৭১ সংবাদ কে বলেন, বিসিএসকে আরও যুগোপযোগী করার অংশ হিসেবে পরীক্ষাপদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। সব পরীক্ষায় সবাই সমানভাবে সুযোগ পাক, সেটি নিশ্চিত করার চেষ্টা হচ্ছে।