প্রতিনিধি ১৬ মে ২০২৩ , ৭:৪৮:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ
মোঃ মহসিন মীর-বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর বাউফলে সেবা ক্লিনিক নামের একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে ডাক্তারের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রবিবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে এঘটনা ঘটে। এঘটনায় বাউফল থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। নিহত রোগীর নাম আখিনুর(২২)। তার বাড়ি কালাইয়া ইউনিয়নের পূর্ব কালাইয়া গ্রামে। স্বামীর নাম বাহাদুর হোসেন। স্বজনদের সূত্রে জানাগেছে, নিহত আখিনুরের প্রসব বেদনা শুরু হলে রবিবার সকাল ১১টার দিকে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন স্বজনরা। সারাদিন ভর্তি থাকার পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে দালালদের মাধ্যমে স্থানীয় সেবা ক্লিনিক নামের একটি বেসরকারী ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়।
ওই ক্লিনিকের আবাসিক ডাক্তার মো সোলায়মান রোগীর আল্ট্রাসনোর শেষে রোগীর পেটে পানি নেই, খুব দ্রæত সিজারিয়ান অপারেশানের মাধ্যমে বাচ্চা বের করা না হলে বা”্চার ক্ষতি হতে পারে বলে ভয়-ভিতী দেখান। ভয়ে রোগীর স্বজনরা খুব দ্রæত রোগীকে সিজারিয়ান অপারেশান করতে অনুরোদ জানান। তাড়াহুরো করে রাত ৮টার দিকে তাকে অস্ত্রপচার রুমে নেয়া হয়। অপারেশান শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে বাচ্চা (মেয়ে) বের করা হলেও রোগীকে বের করা হচ্ছে না। প্রায় ঘন্টাখানেক পর কর্তব্যরত নার্স বের হয়ে রোগীর বøাড লাগবে বলে জানান স্বজনদের। রাত পৌনে ১০টার দিকে রোগীর লোকদের কোন কিছু না জানিয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ এ্যাম্বুলেন্স ঠিক করে রোগীকে কোন মতে কাপড়ে পেচিয়ে এ্যাম্বুলেন্সে উঠিয়ে দিয়ে রোগীর স্বজনদেরকে রোগী নিয়ে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যেতে বলেন। এসময় ডক্তারসহ ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যান।
অভিযোগ রয়েছে ওই প্রতিষ্ঠানে এর আগেও একাধিক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। এর আগে আহম্মেদ কামাল নামক এক ভুয়া চিকিৎসকের হাতে একই ক্লিনিকে অনেক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। স্থানীদের ধারনা এই সোলাইমান নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিলেও তিনিও একজন ভুয়া চিকিৎক।
রোগীর বাবা মো. জালাল প্যাদা বলেন, ‘আমার মেয়ের বøাড লাগবে বলে আমি বøাড সংগ্রহের জন্য লোক খুজতে বের হই। এর কিছুক্ষণ পর আমার স্বজনরা আমাকে ফোন করে জানায় আমার মেয়েকে এ্যাম্বুলেন্সে উঠানো হয়েছে। আমি দৌড়ে এসে দেখি আমার মেয়ের কোন শ্বাস-নিশ্বাস নেই। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছিলো তার শ্বাস কষ্ট হচ্ছে। আমি মেয়েকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেলে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার বলেছেন রোগী বাউফল বসেই মারা গেছে।’
এব্যপারে অভিযুক্ত ডাক্তার সোলাইমান পলাতক রয়েছেন। তার মুঠোফোনে কল করতে চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম আরিচুল হক বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। ময়না তদন্তের জন্য লাশ পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।