• বরিশাল বিভাগ

    বাউফলের বৃদ্ধ সার্ভেয়ার সোলেমানের শিকলে বাঁধা মর্মান্তিক জীবন।

      প্রতিনিধি ১৫ নভেম্বর ২০২২ , ১১:১৭:৫৮ প্রিন্ট সংস্করণ

    পটুয়াখালী জেলাধীন বাউফল উপজেলার দাসপাড়া ইউনিয়নের খেজুরবাড়িয়া গ্রামের ল্যাংড়া মুন্সির পুল এলাকার সোলেমান আকন (৭০)। তিনি ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার (আমিন) হিসেবে চুক্তিভিত্তিক চাকরি করতেন। ১০-১২ বছর আগে চাকরি ছেড়ে অবসর জীবনযাপন শুরু করেন। গত দেড় বছর আগে তিনি মানসিক রোগে আক্রান্ত হন। ঘর ছেড়ে দুই চোখ যেদিকে যায় চলে যেতেন। তাকে খুঁজে পেতে পরিবারের সদস্যদের বেগ পেতে হতো। তাকে বরিশাল ও ঢাকায় নিয়ে বেশ কয়েকবার চিকিৎসা করানো হয়।

    কিন্তু পুরোপুরি তিনি সুস্থ হননি। তাই পরিবারের সদস্যরা তাকে নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন। ঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার ভয়ে তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। দেড় বছরে কখনো হাত থেকে শিকল কিংবা শিকলে লাগানো তালা খোলা হয়নি। তালায় মরিচা পড়ে গেছে। এভাবে কাটছে তার শিকল বন্দি জীবন।

    সোলেমান আকনের ৫ ছেলে যে যার মতো স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন। একমাত্র বৃদ্ধা স্ত্রী রাশিদা বেগম তার দেখাশুনা করেন। সোলেমান আকনের সব ছেলেই সচ্ছল। এক ছেলে ইতালি বসবাস করেন। ওই ছেলের গ্রামের বাড়িতে নির্মাণাধীন ভবনের এক রুমে বৃদ্ধ সোলেমান আকন ও তার স্ত্রী রাশিদা বেগম বসবাস করছেন।

    কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, সোলেমান আকন অনেক সম্পদের মালিক। তা সত্ত্বেও সঠিকভাবে তার চিকিৎসা হচ্ছে না। সম্পত্তি ভোগের আশায় সন্তানরা তার বাবাকে ঠিকমতো চিকিৎসা করাচ্ছেন না। ওষুধ কিনে দিচ্ছেন না। অবস্থা এ রকম যে তাদের বাবা মরে গেলেই যেন তারা হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন।

    সোলেমান আকনের সেজো ছেলে শাহিন আকন বলেন, আমার বাবার সুস্থতার জন্য অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। চিকিৎসকরা বলেছেন বাবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বাড়ি থেকে চলে যান বলে তার বাবাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখি। সম্পত্তি ভোগের আশায় বাবার চিকিৎসা করানো হচ্ছে না বিষয়টি সত্য নয়। আমাদের ৫ ভাইয়ের মধ্যে ৩ ভাই সাধ্যমতো বাবার সেবা করার চেষ্টা করি।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ