এনামুল কবীর-এনাম নওগাঁ জেলা:
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার ৮ ইউনিয়নে মাঠ ভরা সোনালী ধান আর কোকিলের কুহ কুহ ডাক। সব মাঠেই ধান পেঁকে সোনালী রূপ ধারন করেছে। কৃষকরা পাঁকা ধান কাটতেও শুরু করেছে। উপজেলার সব মাঠেই কম-বেশি ধান কাটা-মাড়াই এর ধুম পড়েছে। এবার রোপা আমনের নিচু জমি গুলোতে বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষক-কৃষানীদের মুখে হাসি থাকলেও নেই উঁচু জমি আলাদের মুখে,।এবং ভুলে নাই ইউরিয়া ক্রয়ের যন্ত্রণা ।সেই বেদনাকে চেপে সন্তানের মুখের খানার জন্য ধান কাটছে।
চলতি মৌসুমে আশানুরূপ বৃষ্টিপাত না হওয়ায় উচু জমির চেয়ে নিচু বিলা জমিতে কয়েক বছরের ব্যবধানে এবার রোপা আমন ধান ভাল হয়েছে। এলাকা ঘুরে দেখা যায় উঁচু নিচু সব জায়গাতেই প্রায় ধান চাষ করা হয়েছে। যে মাঠে কোন সময় আমন ধান চাষ হয়নি সেই মাঠেও এই বার রোপা আমন ধান চাষ করেছে কৃষক। এবছর আবহাওয়া অনুকূল ও দুর্যোগ না থাকায় উপজেলার ৮ ইউনিয়নে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা অনেক ছাড়িয়ে গেছে। এবার কোন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াই মাঠের ধান গোলায় তুলতে পারছেন কৃষক।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাযায়, চলতি মৌসুমে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৪ হাজার ৩ শত ২৫ হেক্টর জমি । কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় নিচু বিলের জমিতে ও ধান চাষ হয়েছে বলে ১৪ হাজার ৩ শত ৫০ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। যা এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ২৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ বেশি হয়েছে। চলতি মৌসুমে উচু জমির চেয়ে, নিচু বিলের জমি গুলোতে ধানের বাম্পার ফলনও হয়েছে। ধান কাটা মাড়ার শুরুর মুখেই ধানের বাজার মূল্য বেশি থাকায় এলাকার কৃষকের মুখে হাঁসি থাকলেও ভুলে নাই ইউরিয়া ক্রয়ের বেদনা ।
কৃষক সোহাগ সেলিম, মতিন সহ বেশ কিছু কৃষকরা জানান, এবছর উঁচু জমি গুলোর চেয়ে নিচু বিলের জমিতে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কোন কোন জায়গায় ইদুর ও কারেন্ট পোকা ধান খেয়ে ফেলেছে। ৮/১০ দিন আগে থেকে ধান কাঁটা-মাড়াই শুরু বাজারে ধানের দামও ভালো । ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে নবান্ন উৎসব। তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন পিঠা পুলি ও পায়েস।মিঠাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ফিরোজ হোসেন সহ হারুনুর রশিদ মেম্বার জানান, রোপা আমন ধানের উপর নির্ভর করে আলু ও পটল, গম রোপন সহ বিভিন্ন রবিশষ্য চাষাবাদের লক্ষ্য । আর এ বছর শুকনো ধানের বাজার মূল্য ১৪ / ১৫ শ টাকা মন। কৃষকেরা সরকারের কাছে ধানের নায্য মূল্য দাবী করেন।
বিলাসবাড়ী ইউপির চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান কেটু বলেন, আমার ইউনিয়নের বারোফালা মাঠটি নিচু। প্রতি বছর মাঠটি পানির নিচে থাকে। শুধুমাত্র মাছ পাওয়া যেতো। কিন্তু এ বছর ভারী বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বারোফালা মাঠে রোপা আমন ধান চাষ করা হয়েছে। ফলনও আশানুরুপ। আধাইপুর গ্রামের বেলাল বলেন, এবার পিড়ার মুখ থেকেই ১৪ শ টাকা দরে ধান ব্যবসায়ীরা ধান নিয়ে যাচ্ছে। আগে বাজারে গিয়ে ধান বিক্রি করতে হতো এখন যেতে হয় না।
উপজেলা কৃষি অফিসার সাবাব ফারহান জানান, এবার আবহাওয়া অনুকূল থাকার কারনে রোপা আমন ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। উচু জমির চেয়ে নিচু জমিতে ধানও ভাল হয়েছে। ধান-কাঁটা মাড়াই এর শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকরা ধানের বাম্পার ফলন পাবে। আবার বাজেরে ধানের দাম ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি থাকলেও ভোলে নাই ইউরিয়া ক্রয়ের বেদনা।
E-mil: dailyalokito71sangbad@gmail.com
তথ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত গণমাধ্যম দৈনিক আলোকিত ৭১ সংবাদ
@বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোক চিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।
Copyright © 2024 alokito71sangbad. All rights reserved.