প্রতিনিধি ৭ এপ্রিল ২০২২ , ৫:১৯:১২ প্রিন্ট সংস্করণ
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে জাতীয় পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের আদেশ এবং পার্লামেন্টে ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালাত। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাতে এই রায় ঘোষণা করেন পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল। আদেশে পাকিস্তানের মন্ত্রিসভাকে পুনর্বহাল এবং শনিবার (৯ এপ্রিল) পার্লামেন্টে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
পাঁচ দিন শুনানির পর বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে এই রায় দিয়েছেন। রায়ে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বন্দিয়াল বলেন, জাতীয় স্বার্থ এবং বাস্তব সম্ভাবনা দেখেই আদালত এগিয়ে এসেছেন। পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে প্রেসিডেন্টকে পরামর্শ দেওয়ার অধিকার নেই প্রধানমন্ত্রীর। এই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে।সর্বোচ্চ আদালত প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভির পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে বেআইনি এবং ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রী পদে এবং মন্ত্রিসভাকে পুনর্বহালের রায় দিয়েছেন।
আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, স্থানীয় সময় শনিবার সকাল দশটায় পার্লামেন্টের (জাতীয় পরিষদ) অধিবেশন আয়োজন করতে। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের মীমাংসা না করা পর্যন্ত এই অধিবেশন স্থগিত করা যাবে না।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ৩ এপ্রিল ডেপুটি স্পিকার একটি রুল জারি করেছেন। এতে অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করা হয়েছে। ডেপুটি স্পিকারের ওই রুল ছিল অসাংবিধানিক।রায়ে বলা হয়েছে, জাতীয় পরিষদের কোনও সদস্যের অধিবেশনে অংশগ্রহণ নিয়ে সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারে না।
রায় ঘোষণার আগে সুপ্রিম কোর্ট প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিকান্দার সুলতান রাজাকে আদালতে তলব করেন। আইনজীবী দলকে নিয়ে তিনি আদালতে হাজির হন। রায় ঘোষণার সময় আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবী, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও রাজনীতি বিদদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। শেহবাজ শরিফের পিএমএল-এন এবং বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে আরও ছিলেন বিচারপতি ইজাজুল আহসান, বিচারপতি মাজহার আলম মিয়ানখেল, বিচারপতি মুনিব আখতার, বিচারপতি জামাল মান্দোখাইল।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে পাকিস্তানের রাজনীতিতে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। ৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব নাকচ করে দেন ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। ইমরানের বিরুদ্ধে হতে যাওয়া অনাস্থা পদক্ষেপকে সংবিধানের ৫ অনুচ্ছেদের বিরুদ্ধে আখ্যায়িত করে খারিজ করে দেন স্পিকার। এরপরই ইমরান খানের অনুরোধে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। ভেঙে দেওয়া হয় মন্ত্রিসভা। একদিনের মাথায় সোমবার তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন দেন ইমরান খান। পাকিস্তানের সাবেক প্রধান বিচারপতি গুলজার আহমেদকে এ পদের জন্য মনোনীত করেন তিনি।