প্রতিনিধি ১৯ নভেম্বর ২০২১ , ২:৪২:৫৫ প্রিন্ট সংস্করণ
মোঃ শাহআলম:
পত্নীতলার শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দের মন্দির(চকমুলি হালদার পাড়া) প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয় এই লীলা কীর্তন। প্রতি বছরের ন্যায় এই বছরও সীমিত পরিসরে আয়োজন করা হয় বলে জানান কীর্তন কমিটির সদস্যগণ। দেশ মাতৃকার শুভ কামনা ও বিশ্ব শান্তি কল্পে ১৬ প্রহর ব্যাপি শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দের কীর্তন গত ২৬ বছর ধরে আয়োজন করে চলেছে সনাতন এই ধর্মাবলম্বিগন। দেশের বিভিন্ন স্থানে যখন মন্দিরে ভাংচুর, মুর্তি সহ সংখ্যা লঘুদের উপর শাররীক,মানসিক ও ধর্মীয় ভাবে এক প্রকার মানুষ নামের পশুরা অথচ পত্নীতলা উপজেলার এই মন্দিরে হিন্দু মুসলমান ভেদাভেদ ভুলে সবাই একসাথে আনন্দ ভাগ করে এক নজির বিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।গত ১৬-১৮ তারিখ পর্যন্ত চলবে।
এই লীলা কীর্তনে মোট চারটি দল পরিবেশনায় অংশ গ্রহন করে।
১। যুগল সম্প্রদায়,পলি কর্মকার,বিষ্টপুর, পত্নীতলা,নওগাঁ।
২। বাল্য গোষ্ট সম্প্রদায়, শ্রী অমল চন্দ্র বর্মন,সুন্দরপুর,জয়পুরহাট।
৩। যোগমায়া সম্প্রদায়,রিতা মহন্ত(তর্নি)
মান্দা,নওগাঁ।
৪। নিতাই গৌর সেবা সংঘ সম্প্রদায়, শ্রী নয়নানন্দ দাস (নয়ন),উত্তর পটুয়াপাড়া, নাটোর।
পবিত্র গীতা পাঠ অন্তে শুভ অধিবাস ও মঙ্গলঘট স্থাপন দিয়ে ধর্মীয় অনুষ্টান শুরু হয়। অধিবাস,লীলা,রাধারানীর পুর্বরাগ, শ্রী কৃষ্ণের পুর্বরাগ,বাসক সজ্জা,খন্ডিতা, কলহনতরিতা,মানে মিলন,শ্রী কৃষ্ণের বাল্যলীলা,গমনগোষ্ট লীলা,রাধা রানীর সূর্য্য পুজা,ফিরাগোষ্ট,রুপলীলা,অভিসার, রাসলীলা,অলস,কুঞ্জভঙ্গ অন্তে শ্রী শ্রী মহাপ্রভুর ভোগ বিতরন পরিশেষে মহন্ত বিদায়।
লীলা কীর্তন আয়োজক কমিটির সভাপতি শ্রী রতন হালদার ও সেক্রেটারি শ্রী সুকুমার হালদারের সাথে আমাদের প্রতিনিধি মোঃ শাহআলমের একান্ত সাক্ষাৎকারে তারা আক্ষেপের সুরে জানান আমাদের এখানে প্রায় ৭০ টির মত হিন্দু পরিবার আছে যাদের অধিকাংশই দিনমজুর বেশি পরিমান চাঁদা দেয়া কোন ভাবেই সম্ভব নয়। আমরা যদি সরকারী ভাবে একটু সাহায্য পেতাম তাহলে আমাদের এই ধর্মীয় অনুষ্টানটি আরো ভালভাবে পালন করতে পারতাম। এখানে আমরা এই ধর্মীয় অনুষ্টানটি আয়োজন করতে মাথাপিছু ৩৫০ টাকা চাঁদা করার পরেও দেনা থেকে যায়। যেখানে প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকার মতো খরচ হয়েছে এর জন্য বর্তমান বাজার ব্যবস্থাপনাকেও দায়ী করেন সেক্রেটারি শ্রী সুকুমার হালদার। তিনি আক্ষেপের সাথে বলেন, দলীয় বা সরকারীভাবেই হোক আমরা কি কোন সাহায্যই পাবার যোগ্য নই।উপজেলা প্রশাষন হতে শুরু করে দলীয় পর্যন্ত দাওয়াত কার্ড পৌঁছে দিয়েছি, আমরা কোন ব্যাক্তিগত সাহায্য চাইনি আমরা ধর্মীয় রীতিনিতি পালনের জন্য কিঞ্চিৎ পরিমান হলেও আমাদের অনেক সুবিধা হইত।আমাদের এই কাজে প্রায় ১.৮০,০০০/= হাজার টাকার মত খরচ হবে। অধিকাংশ পরিবারের সদস্য দিন মজুর হওয়ায় চাঁদা দেওয়া সকল পরিবারের জন্য সম্ভব নয়। তার কথায় প্রভুর উৎসব প্রভুই করেন, মানুষ উপলক্ষ মাত্র। ”ভক্তিই বল, নামই সম্বল” তাই সেই উপলক্ষে শুরু করেছি বাকি ইচ্ছা প্রভুর। আয়োজক কমিটির সকল সদস্য সমান ভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছে যেন আমরা সফল ভাবে অনুষ্টান শেষ করতে পারি তাতে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেছেন ৭৫ বয়সী শ্রী সুকুমার হালদার।