প্রতিনিধি ৩০ জানুয়ারি ২০২১ , ৫:৪৫:৫২ প্রিন্ট সংস্করণ
পৌষের সকালে কুয়াশার চাদর আর কনকনে হিমশীতল হাওয়া চারিদিকে বীজতলায় চারা উঠানোয় ব্যস্ত কৃষক। বোরো চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন ধান চাষের সূতিকাগার নওগাঁর শস্য ভান্ডার খ্যাত পত্নীতলা উপজেলার কৃষকরা। সাথে কৃষানীদেরও বেড়েছে ব্যস্ততা।
কয়েক দিনের শৈত্য প্রবাহ আর ঘন কুয়াশার সাথে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় বোরো আবাদ রোপনে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। আর শীতের ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে জমি প্রস্তুতে পানি সেচ আর হাল চাষ এবং বীজতলা থেকে চাড়া তুলে জমিতে রোপণ চলছে। দিন ভর ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা।
এ এলাকায় আমণের ফলন কম হওয়াই অনেক ক্ষতি সাধন হয়েছে উপজেলার কৃষককূলের সেই ক্ষতি পোষিয়ে নিতেই বোরো চাষে কমড় বেধে নেমেছে পত্নীতলার কৃষক কূল। শ্রমিকেরা ধান রোপণের জন্য বিঘা প্রতি ১ হাজার থেকে ১হাজার ১শত টাকা পর্যন্ত চুক্তিতে নিচ্ছেন, তারা জানান প্রচন্ড ঠান্ডার কারণে সকাল থেকে কাজ করা যাচ্ছে না।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১১ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভায় চলতি মৌসুমে ১৯ হাজার ২৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৮হাজার ৫শ হেক্টর রোপণ হয়েছে দু’সপ্তাহের মধ্যে রোপণ শেষ হতে পারে।
এবার উপজেলায় রোপন হচ্ছে উন্নত ফলনশীল ব্রিধান ২৮,২৯,৫৮,৬৩,৮১,৮৪ জিরাশাইল, গোল্ডেন আতপ, কাঠারি, হাইব্রিড জাতের ধান রোপন হচ্ছে । কৃষি বিভাগ বিভিন্ন প্রশিক্ষন, উঠান বৈঠক ও মাঠপর্যায়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ৩৫-৪০ দিনের চারা রোপন করা, প্রচুর পরিমাণ জৈব সার ব্যবহার করা,ধান লাইনে (১৫-২০ সেমি: দূরত্বে) রোপন করা, প্রতি বিঘা জমিতে ৫টি করে খুটি পুতিয়ে পাখি বসানোর ব্যবস্থা করা (পার্চিং পদ্ধতি), প্রতি লাইন পরপর একটি লাইন গ্যাপ দিয়ে চারা রোপন করা। সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করা।
উপজেলার নাদৌড় গ্রামের কৃষক মোতাহার বলেন, গভরি নলকূপ গুলি যদি কৃষকদের মাঝে সমিতি করে ছেড়ে দেওয়া হত তাহলে সেচের মূল্য আরও কম হত ,অনেক নলকূপ ব্যক্তি মালিকানয় চলছে । তিনি এবার ১০ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করছেন মোতাহার।
জানা গেছে পত্নীতলা উপজেলার সেচ কমিটি ব্যক্তিগতভাবে পরিচালিত বিভিন্ন যন্ত্রের বোরো মৌসুমে বিঘাপ্রতি (৩৩ শতক) বোরো ধানের সেচ চার্জ বাবদ দিবর, শিহাড়া ও নির্মইল ইউনিয়নের জন্য বিদ্যুৎচালিত এস টি ডব্লিও ১৩শ টাকা ডিজেল চালিত এসটিডব্লিও ১৭শ টাকা বিদ্যুতায়িত ব্যক্তিগত গভীর নলকূপ ১১ শ টাকা আকবরপুর মাটিন্দর, কৃষ্ণপুর ও পত্নীতলা ইউনিয়নের জন্য এসটিডব্লিও ১২শ টাকা ডিজেল চালিত এসটিডব্লিও ১৭ শ টাকা বিদ্যুৎ চালিত ব্যক্তিগত গভীর নলকূপ ১ হাজার এবং আমাইড়, ঘোষনগড়, পাটিচড়া ও নজিপুর ইউনিয়নের জন্য বিদ্যুৎ চালিত এসটিডব্লিও ১১শ টাকা ডিজেল চালিত এসটিডব্লিও ১৬ শ টাকা বিদ্যুৎ চালিত ব্যক্তিগত গভীর নলকূপ ৯শ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে তবে একাধিক কৃষক জানান নির্ধারিত এ সেচ মূল্যের চেয়ে ২শ থেকে ৩শ টাকা বেশী নেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মর্কতা কৃষিবিদ প্রকাশ চন্দ্র সরকার জানান, কৃষি বিভাগ সব সময় কৃষকের পাশে আছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভাল ফলন হবে।