প্রতিনিধি ২ অক্টোবর ২০২০ , ৭:৫৮:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ
মু,হেলাল আহম্মেদ(রিপন)পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ
গত বৃহস্পতিবার ১ লা অক্টোবর দিবাগত রাতে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শাহীনুর বেগম (২৬) নামের এক গৃহবধূর লাশ ফেলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে যাওয়ার ঘটনার অভিযোগ উঠেছে।
এসময় থানা পুলিশ উদ্ধার করে ওই গৃহবধূর লাশটি অদ্য শুক্রবার ২ রা অক্টোবর-২০ ইং তারিখ ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানাজায়। জানা যায়,গৃহবধূ উপজেলার সদর ইউনিয়নের (০৩ নং ওয়ার্ডের বিলবিলাস গ্রামের মো. হুমায়ুন কবির সরদারের মেয়ে তার স্বামী একই গ্রামের মো. জুয়েল খান (২৮) ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, শাহীনুরকে গতকাল রাত ৭টা ২০ মিনিটের দিকে বদিউল আলম নামের এক ব্যক্তি চাচা শ্বশুর পরিচয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করলে গাড়ি আনার কথা বলে তিনি সটকে পড়েন। মেয়েকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে, এমন খবর পেয়ে রাত নয়টার দিকে শাহীনুরের বাবার বাড়ির কয়েকজন স্বজন হাসপাতালে আসেন। পরে পুলিশ লাশটি থানায় নিয়ে যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক সুব্রত কুমার বিশ্বাস জানান, রশিতে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে জানানো হয়। কিন্তু আমার কাছে সে রকম মনে হয়নি। তবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার আগেই ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও শাহীনুরের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় সাড়ে চার বছর আগে শাহীনুর প্রেম করে বিয়ে করেন বিলবিলাস গ্রামের বাসিন্দা আবদুস ছালাম খানের ছেলে মো. জুয়েলকে। তাঁদের সংসারে তিন বছরের একটি মেয়ে ও চার মাস বয়সী এক ছেলে রয়েছে। জুয়েল ঢাকা জজকোর্টে আইনজীবীর সহকারী হিসেবে কাজ করছেন ।
শাহীনুরের ফুফু মোসা. রওশন আরা (৪৫) জানান, আমাদের জানানো হয়েছে, শাহীনুর স্ট্রোক করেছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে শাহীনুরের লাশ দেখতে পাই। মৃত্যু ডায়েরিতে উল্লেখ করা হয়েছে সে আত্মহত্যা করেছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, বিয়ের পর থেকেই শাহীনুরকে তাঁর শাশুড়ি মিনারা বেগম (৫০), ফুফু শাশুড়ি মমতাজ বেগম (৪৫), ননদ নাসিমা বেগম (৩০) ও মাকসুদা বেগম (৩৫) যৌতুকের জন্য কারণে-অকারণে নির্যাতন করতো ꫰ শাহীনুর কখনোই আত্মহত্যা করতে পারে না। তাঁকে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে।
সরেজমিনে শুক্রবার (০২ অক্টোবর) সকালে শাহীনুরের শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে প্রতিবেশী মো. হানিফ মিয়া নামের একজন জানান, যখন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন জানানো হয়, শাহীনুর স্ট্রোক করেছে। পরে জানতে পারি, তিনি আত্মহত্যা করেছেন এবং লাশ ফেলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়েছেন। তবে আত্মহত্যা করলে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতন থেকে বাঁচার জন্যই আত্মহত্যা করেছে। শাহীনুর খুবই ভালো স্বভাবের মেয়ে ছিল.
এবিষয়ে বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রতিবেদ’কে বলেন, মৃত্যুর কারণ জানতে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে। আর আত্মহত্যা করে থাকলেও কী কারণে আত্মহত্যা করেছে, তা তদন্ত করে বের করা হবে বলে তিনি জানায়।