প্রতিনিধি ১৭ নভেম্বর ২০২২ , ১১:০৯:০৬ প্রিন্ট সংস্করণ
মু,হেলাল আহম্মেদ রিপন-পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ
প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষা করে পটুয়াখালীতে ২ দিন ব্যাপী প্রকৃত কবিদের ছাড়াই দায় সারা সাহিত্য মেলা ২০২২ অনুষ্ঠিত হয়েছে। চলতি মাসের ১৬ ও ১৭ নভেম্বর সাংস্কৃতিক মন্ত্রনালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা একাডেমীর আয়োজনে পটুয়াখালী ডিসি স্কয়ারে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। সাহিত্য মেলায় পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা সাংসদ সদস্য কাজী কানিজ সুলতানা হেলেন, এবং বাংলা একাডেমীর মহা পরিচালক কবি নরুল হুদা সন্মানিত অতিথি হিসেবে এসময় উপস্থিত থেকে মেলা উদ্বোধন করেন।
এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব অসিম চন্দ্র দে, এছাড়াও পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার পিপিএম, বিবিএম সাইদুল ইসলাম,ও পটুয়াখালী সদর উপজেলার চেয়ারম্যান এ্যডভোকেট মোঃ গোলাম সরোয়ার সিপাই প্রমুখ।
প্রতি বছরের ন্যায় এই বই মেলা উদ্বোধন কালে গনপ্রজাতন্ত্রের সরকার প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা উপজেলায় সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার জোর আহ্বান জানান। তারই প্রেক্ষিতে তৃনমূল পর্যায় সাহিত্য মেলা আয়োজন করার উদ্যোগ গ্রহন করেন সরকার।দেখাযায় তৃনমূল পর্যায় কবি-সাহিত্যিকদের সৃষ্টি কর্ম জাতীয় পর্যায় তুলে ধরার জন্য ৩০ টি জেলায় সাহিত্য মেলার আয়োজনের জন্য ২০২১/২০২২ অর্থ বছরে সাংস্কৃতিক মন্ত্রনালয়ের অনুষ্ঠান/উৎসবাদি খাত থেকে ১,৫০,০০,০০০/- (এক কোটি পঞ্চাশ লক্ষ) টাকার বরাদ্দে পটুয়াখালী জেলায় ২দিন ব্যাপি সাহিত্য মেলা আয়োজনের জন্য সরকার কতৃক বরাদ্ধ ছিল ৫,০০০০০/- ( পাঁচ লক্ষ) টাকা। সাহিত্য মেলা সুষ্ঠভাবে আয়োজন করার লক্ষে ০৮ই সেপ্টেম্বর ২০২২ ইং তারিখ প্রস্তুতি মূলক সভা আয়োজন করেন পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন।উক্ত সভায় পটুয়াখালীর গুনি লেখকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে জানা যায় একাধিক মহল থেকে। স্ব-প্রনোদিত হয়ে দু একটি সাহিত্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সহ কয়েকজন উপস্থিত থেকে বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন উক্ত সভায়। কিন্তু সেইসব প্রস্তাবকে পাশ কাটিয়ে জেলা প্রশাসনের তোষামদকারী নাটকের বাহানায় রাজাকারের উত্তরসুরি হিসেবে পরিচিত এবং পটুয়াখালীর স্বঘোসিত সাংস্কৃতিক পুরোধা রাজনৈতিক প্রভাব এবং পরামর্শে মেলা বাস্তবায়নে এবং ভাগবাটোয়ারার লক্ষে একাধিক কমিটি গঠন করে যাতে জেলার কোন সাহিত্য সংগঠনের প্রতিনিধি এবং কবি লেখকদের অংশগ্রহন ছিল না এটাই প্রতিয়মান।
এছাড়াও পটুয়াখালীর বিভিন্ন সাহিত্য সংগঠনের প্রকাশিত লিটল ম্যাগাজিন এর সূত্রে থেকে জানা যায়, জেলায় প্রায় ১৫০ জন কবি সাহিত্যিক বর্তমানে রয়েছেন। যাদের মধ্যে প্রায় ৭০/৮০ জনের একাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। এবং তাদের মধ্যে বাংলা একাডেমীর পুরস্কার প্রাপ্ত লেখকও রয়েছেন। সহিত্য মেলায় কবি সাহিত্যিক হিসেবে যে ২৫/৩০ জন লেখক রেজিষ্ট্রেশনও করেছেন যার মধ্যে ৪/৫ জন সাহিত্য চর্চার সাথে জড়িত থাকলেও বাকিরা শখের বসে ২/১ টা ছড়া,কবিতা লিখলেও সাহিত্য চর্চার ধারে কাছে নেই। মেলা কমিটির অনুরোধে অনেকে রেজিষ্ট্রেশন করেছেন যাতে সংখ্যা বাড়িয়ে দেখানো যায়। যা কিনা পটুয়াখালীতে হাস্য, রসের সৃষ্টি হয়েছে। অন্য জেলার জনৈক লেখক অধ্যক্ষ নিজের পান্ডিত্য জাহির করায় অংশগহনকারী লেখকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এমন অনৈতিক ও হিংসাত্মক কর্মকান্ডের জন্য।
তবে পটুয়াখালীতে বসবাসরত কবি সাহিত্যি করা যারা প্রকৃতই সাহিত্য চর্চা করছেন তাদের কাছে যথা সময়ে নিমন্ত্রন পত্র পৌছানোর নুন্যতম দায়িত্ব পালন করেননি মেলা আয়োজক কমিটি এবং বেশির ভাগই জানতে পারেনি এমন একটি মেলা সরকারি ভাবে আয়োজন হচ্ছে।
উল্লেখ্যঃ যারা বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছেন অথবা জেনেছেন তারা আগ্রহ হারিয়েছেন এবং মনের অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যথা, ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মেলা আয়োজন কমিটির অব্যবস্থাপনা ও উদাসিনতার কারনে। এমনকি সাহিত্য মেলায় ৫ হাজার টাকা সন্মানী দিয়ে যারা কোন দিন প্রবন্ধ লেখেন নি তাদের দিয়ে ৩টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয় এবং তা মান সম্মত না হওয়ায় বাংলা একাডেমীর মহা পরিচালক কবি নূরুল হুদা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে যানা যায়।
গত ৩০ বছর ধরে পটুয়াখালীর সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশের লক্ষে কাজ করা পটুয়াখালীর সাহিত্য সংসদের সভাপতি কবি সাংবাদিক কাইয়ুম আহমদ জুয়েল সাহিত্য মেলা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী যদি তৃনমূলের সাহিত্য জাতীয় পর্যায় তুলে ধরার প্রয়াস না হয়, জেলার বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের অংশগ্রন ছাড়া সাহিত্য মেলা সফলতা পায়নি বলে তিনি মনে করেন। শুধু লোক দেখানো এবং বরাদ্দের টাকা ভাগ বাটোয়ারা এবং অপচয় করে পটুয়াখালী জেলা সাহিত্য মেলা নামে একটি অবিবেচনা প্রসূত অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন। প্রগতি লেখক সংঘ পটুয়াখালী জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক কবি- কথা সাহিত্যিক গবেষক গাজী হানিফ বলেন, এত বড় একটা আয়োজনে জেলার সকল লেখকদের অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে পারলে প্রধান মন্ত্রী নির্দেশনা সফলতা পেত এবং দেশের সাহিত্য ভান্ডার আরো সমৃদ্ধ লাভ করতো।
উপরে উল্লেখিত বিষয় নিয়ে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন এর কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমরা সবাইকে বলা হয়েছে তিন মাস আগে থেকে, তাছাড়া ওপেন রেজিষ্ট্রেশন ফরম ছাড়া হয়েছিলো এবং প্রস্তুতি মিটিং করা হয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন যারা এতো বড় কবি অংশগ্রহণ করতে পারেনি তাদের বলেন জাতীয় ভাবে রেজিষ্ট্রেশন করে অংশগ্রহণ করতে।