প্রতিনিধি ২ আগস্ট ২০২৩ , ৯:১৭:৩৪ প্রিন্ট সংস্করণ
মু,হেলাল আহম্মেদ রিপন-পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি:
পটুয়াখালী সদর উপজেলা বদরপুর ইউনিয়নের টেংরাখালী গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মামলার বাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করার খবর অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগকারী রওশনারা বেগম (৪০), স্বামী-খলিলুর রহমান। সোমবার ৩১’জুলাই সকাল আনুমানিক ৯ টার সময় বাদীর বসত ভিটার সাৃনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রওশনারা বেগম (৪০) সহ ৫ জন গুরুতর আহত হয়।
এর আগে আহত রওশনারা বেগম এর কবলাকৃত ভোগ দখলীয় জমিতে নির্মানাধীন বসতঘর নির্মান করার সময় গত ১০” জুলাই বিকেলে প্রতিপক্ষের আলতাফ মৃধা ও শাহজাহান মৃধার নেতৃত্বে ২৫ জন মিলে দেশীয় অস্ত্র, রামদা, বগি, লোহার রড ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা ও ভাংচুর করে জমির সীমানা পিলার উঠিয়ে ফেলে দেয়। এঘটনায় রওশনারা ও তার মেয়ে মানসুরাকে মারধর করে গলার চেইন ছিনিয়ে নিয়ে যায় আসামিরা ৫০ হাজার টাকাও দাবি করে। পরে ৯৯৯ নম্বরে ঘটনাস্থলে পুলিশ যায় এবং থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ উভয় পক্ষকে ডেকে মিমাংসার চেষ্টায় ব্যার্থ হয়। পরে ভুক্তভোগী রওশনারা সু-বিচার পেতে মোকাক পটুয়াখালী বিজ্ঞ আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) মামলা দায়ের করেন।
মামলা সুত্রে আসামিরা হলেন, (১). আলতাফ মৃধা (৫০), পিতাঃ কাঞ্চন মৃধা, (২). শাহজাহান মৃধা (৭০), পিতাঃ মৃত কাছেম মৃধা, (৩).কাওছার (৩০). পিতাঃ ছত্তার কসাই, (৪).নেয়াম (২৫). (৫).মিলন মৃধা (৩০).উভয় পিতাঃ শাহজাহান মৃধা, (৬) মিরাজ (১৮), পিতাঃ রশিদ মৃধা, (৭). সুমন (২২), পিতাঃ খালেক মৃধা, (৮)বাদল মৃধা (২০), পিতাঃ জালাল মৃধা, (৯). আল-আমিন (২৫), পিতাঃ ওহাব মীরা, (১০). আবুল বাসার (১৮), পিতাঃ হানিফ মৃধা সহ অজ্ঞাত ১০-১৫ জন। যাহা ২০১৮ সংশোধন ৪/৫ ধারা-মামলা নং–১১৮/২৩ ইং. আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন গত ২৭/০৭/২৩ ইং, স্মারক নং-১৯০. মামলাটি বর্তমানে পিবিআইতে তদন্তাধীন রয়েছে।
আদালতে মামলা দেয়ার রেষধরে ৩১’জুলাই সকালে বাদীকে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে মামলার আসামিরা পুনরায় বাদী রওশনারা বেগমকে হত্যার উদ্দেশ্যে সদর হাসপাতালে হামলা চালিয়ে কুপিয়ে আহত করে।এঘটনায় তার মেয়ে মানসুরা বেগম বাদী হয়ে সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে গেলে দেখামেলে প্রতিবেশীদের কাছে জানাগেছে ,এ জমিতে সাবেক মেম্বারের ঘরবাড়ি ছিলো ২০ বছরেরও বেশি। তিনিও আরেক জনের কাছ থেকে কবলা করে ঘরবাড়ি করে থাকতেন।পরে রওশনারার কাছে জমি বিক্রি করেন। এছাড়াও হামলা ও ভাংচুর ঘটনা সবাই দেখেছে তারা আহত হওয়ার ভয়ে দুরে দাড়িয়ে থেকে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এসময় হামলাকারীরা সবাইকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সাক্ষী দিলে মারধর করার হুমকি দেয়। প্রতিবেশীদের দাবি রওশনারা গরীব তার স্বামী বাদাম বিক্রি করে খায়। বহু কষ্টে এই তিনকাঠা জমি কিনেছেন সেটাও প্রভাবশালীরা দখল করতে চায়। এমন ঘটনায় আতংকিত আশেপাশের বসবাসকারী নারী, পুরুষ ও শিশুরা। এলাকায় অস্ত্রের মহরা দিয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপে যারা লিপ্ত তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান এলাকাবাসী।
এবিষয়ে জমির দাতা সাবেক মেম্বার রওশনারা বলেন, আমি জমি কিনে গাছপালা রোপন করেছি বাড়িঘর করে ২০ বছর বেশি সময় বসবাস করেছি। সেই জমি বর্তমানে খলিলের স্ত্রী রওশনারার কাছে বিক্রি করে তাকে বুজিয়ে দিয়েছি। এরপর তার উপরে এরকম হামলা হয়েছে। এটা সত্যিই দুঃখজনক ও অপরাধ। আইনের মাধ্যমে এর সঠিক বিচার হওয়া উচিত বলে জানান তিনি।
অভিযুক্ত আলতাফ মৃধা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঐ জমিতে আমার ও শাহজাহান মৃধাদের অংশীদারি আছে তাই আমরা জমি দাবি করি চাঁদা দাবি করিনি। সেখানে কোন ভাংচুর মারামারি হয়নি। কার চেইন কে নিয়েছে সেটা আমি বলতে পারিনা। এসময় তার স্ত্রী ও মেয়ে বলেন, কোর্টে মামলা দিয়েছে আমরা মামলায় আদালতে জবাব দিবো।অন্য অভিযুক্ত শাহজাহান মৃধাকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও কল রিসিভ না করায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বদরপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্যানেল চেয়ারম্যান শিহাব উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। আহতরা হসপিটালে ভর্তি রয়েছে। কোন পক্ষই অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ না পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব নয় বলে তিনি জানান। এ ব্যাপারে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ, জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি।