প্রতিনিধি ৩০ মে ২০২১ , ১২:১৮:২৭ প্রিন্ট সংস্করণ
মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সংস্কার কাজ এবং চারতলা বিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণ কাজ চুক্তিপত্রের চেয়ে দুই বছর বেশি অতিবাহিত হলেও কাজ এখনো শেষ হয়নি।যার ফলে স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত হচ্ছে চরমে। এছাড়াও ওই ভবনের কাজে ব্যবহৃত হয়েছে নিম্নমানের ইট বালু। পুরনো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন ও কোয়ার্টারসহ সব কয়েকটি ভবনের সংস্কার কাজও এখন পর্যন্ত শুরু করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।সরেজমিনে জানা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরাতন সকল ভবনের সংস্কার ও ৫০ বেড সম্বলিত নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ১৪ কোটি ৭০ লাখ ৫৯ হাজার ৫৬৭ টাকা ব্যয়ে টেন্ডার দেওয়া হয়।
মেসার্স ইদ্রিস এন্ড রেডিয়ান্ট জেভিসিএ, ৩১ নিউ ডিওএইচএস মহাখালী নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। ২০১৮ সালের ৩ জানুয়ারী কাজ শুরু এবং শেষ হওয়ার কথা জুন ২০১৯ সালের মধ্যে। কিন্তু ২০২১ সালের জুন মাস চলে আসলেও কাজ এখনো সম্পন্ন হচ্ছে না। নতুন ভবনটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ বুজে না পাওয়ার কারণে স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত হচ্ছে এবং চারতলা ভবনটিতে নিম্নমানের ইট, বালু, রড ও সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভবনের পাশে নিম্নমানের মালামাল দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানায়, নতুন ভবনের পাইলিং থেকে শুরু করে সকল কাজেই পাথরসহ সব মালামাল নিম্নমানের ব্যবহার করা হয়েছে। নিম্নমানের কাজ করায় একাধিকবার কাজ বন্ধ করেও দেয়া হয়েছে। ছেঙ্গারচর পৌরসভার দলীয় নেতাকর্মী ও স্থানীয় জনগন কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোন তোয়াক্কা না করেই নিম্নমানের মালামাল দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তারপরও যথা সময়ে কাজ শেষ হয়নি। দ্ইু বছর অতিবাহিত হওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় এলাকার জনগন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইদ্রিস এন্ড রেডিয়ান্ট জেভিসিএ এর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাদের কোন লোক সাইটে পাওয়া যায়নি এবং মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি পলাশ চন্দ্র শীল বলেন, মানসম্মত মালামাল দিয়ে কাজ হয়েছে এবং আগামী এক মাসের মধ্যে সব কাজ সম্পন্ন করা হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডাঃ নুসরাত জাহান মিথেন বলেন, ২০১৯ সালের জুে নতুন ভবনের কাজ শেষ করে আমাদেরকে বুজিয়ে দেওয়া কথা। কিন্তু ২০২১ সালের জুন মাস চলে আসছে এখনো তাদের কাজ শেষ হয়নি। এছাড়াও পুরাতন ভবনের সংস্কার কাজ না করায় সেবা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। ৫০ বেডযুক্ত নতুন ভবনটি বুজে পেলে স্বাস্থ্যসেবা আরো বেগবান হবে।
এদিকে কাজটি তদারকি করার জন্য রয়েছে ৭ সদস্য বিশিষ্ট তদারকি কমিটি। কমিটিতে আহ্বায়ক ডাঃ ইসমাইল হোসেন, সদস্য ডাঃ নাজমুল ইসলাম, ডাঃ জাবেদ ইকবাল, ডাঃ হাসিবুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, আবুল বাশার ও সদস্য সচিব ডাঃ নাইমুল ইসলাম মনোজ। কিন্তু ওই কমিটির কোন তৎপরতা চোখে পড়েনি। সদস্য সচিব ডাঃ নাইমুল ইসলাম মনোজ বলেন, আমরা প্রতিনিয়তই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তাগাদা দিচ্ছি কাজ দ্রুত শেষ করে আমাদেরকে বুজিয়ে দিতে। কিন্তু তারা অবহেলা করছে। পুরনো ভবনের সংস্কার কাজও এখনো শুরু করেনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজী শরিফুল হাসান বলেন, সরকারের ঘোষনা অনুযায়ী স্বাস্থ্য সেবা বেগবান করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের উচিৎ কাজটি সম্পন্ন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বুজিয়ে দেওয়া। এবং সম্পূর্ণ মানসম্মতভাবে কাজ করা। কিন্তু কেন তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারলো না, এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।স্থানীয় চাঁদপুর-২ আসনের সাংসদ আলহাজ্ব অ্যাড. নুরুল আমিন রুহুল বলেন, সরকারের উন্নয়ন কাজগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়ন করা উচিৎ বলে আমি মনে করি এবং সকল উন্নয়ন কাজ সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী মানসম্মতভাবেই করা প্রয়োজন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাজ কেন গরিমসি হচ্ছে সে ব্যাপারে আমি খোঁজ নিবো।