প্রতিনিধি ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ , ৪:৫৮:১৩ প্রিন্ট সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক:
নারীর মামলায় মেয়রসহ ২৫ জন কারাগারে
রহনপুর পৌর মেয়র মতিউর রহমান খানসহ ২৫ জনকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। গোমস্তাপুর উপজেলার প্রসাদপুরের নাজমা বেগম নামে এক নারীর দায়ের করা মামলায় রহনপুর পৌরসভার মেয়র, দুই কাউন্সিলর, সার্ভেয়ার, স্কুল শিক্ষকসহ ২৫ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবির এ আদেশ দেন। সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন আদালত পুলিশের পরিদর্শক শহিদুল্লাহ।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর নাজমা বেগম নামে একজন বাদী হয়ে বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভাংচুর, ইট-রড চুরি ও গুরুতর জখমের অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করেন। বাদী নাজমা বেগম গোমস্তাপুর উপজেলার নুনগোলা-প্রসাদপুরের মৃত আনোয়ারুল ইসলামের স্ত্রী।
ওই মামলায় রহনপুর পৌর মেয়র মতিউর রহমান খান, ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম মুন্না, ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাদিকুল ইসলাম, পৌরসভার সার্ভেয়ার বারিউল ইসলাম, প্রসাদপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকবর আলীসহ ২৫ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর পৌরসভার মেয়র মতিউর রহমান খানের নেতৃত্বে ৭০-৮০ জন দুষ্কৃতকারী বাদী নাজমা খাতুনের বাড়ির ইটের প্রাচীর ভেঙে ফেলেন। এ সময় বাধা দিতে গেলে নাজমা বেগমের ছেলে নাজমুল ফেরদৌস গুরুতর আহত হন।
মেয়রের হুকুমে ট্রাকে করে ইট-রড চুরি করে নিয়ে যান তারা। এতে তাদের প্রায় তিন লাখ টাকা ক্ষতি হয়। এ ঘটনায় গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর নাজমা বেগম বাদী হয়ে পৌর মেয়র মতিউর রহমান খানকে প্রধান আসামি করে ২৬ জনের নাম উল্লেখসহ আমলি আদালত গোমস্তাপুরে মামলা দায়ের করেন।
গোমস্তাপুরের সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। গত ১৪ অক্টোবর আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন গোমস্তাপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার নজির।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান জানান, বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভাঙচুর, ইট-রড চুরি ও গুরুতর জখমের অভিযোগে পৌর মেয়র মতিউর রহমান খানসহ ২৬ জনের নামে মামলা দায়ের করেন নাজমা বেগম। আসামিরা মীমাংসার শর্তে সোমবার পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। বাদীর মালামালগুলো ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। তবে আদালতের নির্দেশ তারা মানেননি। আদালতের আদেশ অমান্য করায় বিজ্ঞ বিচারক এ মামলার ২৫ আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
পৌর মেয়র মতিউর রহমান খানের আইনজীবী নজরুল ইসলাম জানান, নাজমা বেগম পৌরসভার জায়গা দখল করে পৌর বিধি লঙ্ঘনের মাধ্যমে তার বাড়ির প্রাচীর নির্মাণ করেছিলেন। পৌরসভার ম্যানুয়েল ৩৬(৩) এর দফা অনুযায়ী তাকে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।তিনি আরও জানান, আদালত আসামিদের হাজতে নিয়েছেন। আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমি এখন উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করছি এবং আমি ন্যায়বিচার পাব।
এদিকে পৌর মেয়র মতিউরসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা মিথ্যা আখ্যায়িত করে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে রহনপুরে। জেলহাজতে প্রেরণের খবর জানাজানি হওয়ার পর থেকে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠে রহনপুর পৌর এলাকা। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে।একই দাবিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনও অনুষ্ঠিত হয়। রহনপুর পৌরবাসীর ব্যানারে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।