প্রতিনিধি ১৮ অক্টোবর ২০২২ , ৩:০০:০৫ প্রিন্ট সংস্করণ
লুৎফর রহমান লিটন-সলঙ্গা সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
আজ ১৮ই অক্টোবর সারাদেশে শেখ রাসেলের জন্ম দিবস-২০২২ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হবার অংশ হিসাবে সিরাজগঞ্জে সলঙ্গা থানার অন্তর্গত সলঙ্গা ইউনিয়ন এর সুনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নাইমুড়ী কিষাণ উচ্চ বিদ্যালয় শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে শেখ রাসেল দিবস ২০২২ পালিত হয়। শেখ রাসেল দিবস ২০২২ উদাযাপন আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অত্র স্কুলের সম্মানিত প্রধান শিক্ষক মোঃ আকমল হোসেন বাদশা এবং অন্যান্য সম্মানিত শিক্ষক/শিক্ষিকা বলেন শেখ রাসেল, বেঁচে থাকলে যার বয়স হতো আজ ৫৮ বছর। ৫৮ বছরের একজন মানুষ হিসেবে তার তো কত কিছুই করার কথা ছিল।
আর্মিতে যেতে চেয়েছিলেন শেখ রাসেল। হয়তো হতেন কোন তুখোড় সেনা কর্মকর্তা। কিংবা পরিবারের বাকি সবার মতই রাজনীতিতে জড়াতেন তিনি, অথবা বেছে নিতেন অন্য কোন পেশা। হয়তবা তারও একটা পরিবার হতো, কারো স্বামী, কারো বাবা হতেন তিনি। অথচ শেখ রাসেল নামটা শুনলেই পুরো বাঙালি জাতির মনের মাঝে ভেসে ওঠে ১০ বছরের এক বাচ্চার ছবি। মাত্র ১০ বছর বয়সেই থেমে গিয়েছিল শেখ রাসেলের জীবনগাঁথা, তাও স্বাধীন বাংলাদেশে। যে দেশের মুক্তির জন্য তার বাবা নেতৃত্ব দিয়েছিল, সেই স্বাধীন দেশে, নিজের মানুষের হাতেই প্রাণ দিতে হলো নাবালক রাসেলকে। শুনেছি, মৃত্যুভয়ে ছোট্ট রাসেল জিজ্ঞেস করেছিল, ‘ওরা আমাকে মেরে ফেলবে না তো!’
মিথ্যে অভয় দেয়া হয়েছিল রাসেলকে, আর তার কিচ্ছুক্ষণ পরেই রাসেলকে মেরে ফেলা হয়। কী দোষ ছিল শিশুটির? শেখ পরিবারের সন্তান, শুধু এই পরিচয়ের জন্যেই প্রাণ দিতে হলো এক শিশুকে, থামিয়ে দেয়া হলো অজস্র সম্ভাবনা। শেখ রাসেলের দেখা হলো না এই স্বাধীন বাংলাদেশের কোনকিছুই। ঘুড়ে বেড়ানো হলো না সবুজ ফসলের মাঠ জুড়ে, দেখা হলো না গ্রাম-বাংলার মানুষের সারল্য, দেখা হলো না বাংলাদেশের অবিরাম সাফল্য, কিছুই তো জানা হলো না শেখ রাসেলের। মাঝে মাঝে মনে হয়, পুরো জাতির উপর অভিমান নিয়ে গাল ফুলিয়ে বসে আছে ছোট্ট রাসেল। দূর থেকে বলছে, কেন মেরে ফেললে আমায়?
শেখ রাসেলের জন্মদিন আজ। ৫৮ বছরের কোন প্রৌঢ়ের জন্মদিন হবার কথা ছিল, কিন্তু রাসেলের বয়স যে আটকে আছে সেই দশেই। যেদিন রাসেলকে মেরে ফেলা হয় তার কিছুদিন পরেই তো ছিল তার ১১ তম জন্মদিন। হয়ত সেই জন্মদিনকে ঘিরে ছোট্ট বাচ্চাটির মনে ছিল অনেক জল্পনা কল্পনা। আজ শেখ রাসেলের জন্মদিনে খুব ভাবতে ইচ্ছে করে কেমন হতো শেখ রাসেলের ১১ তম জন্মদিন? হয়ত ঘুম ভাঙত বাবা-মা এর আলিঙ্গনে। বড় ভাই, ভাবী, অন্যান্য আত্মীয়স্বজনদের খুনসুটিতেই হয়ত কাটত সারাটাদিন। কে জানে হয়ত বড় দু’বোন চলে আসত দেশে; ছোট্ট ভাইটিকে চমকে দিতে। রান্না করা হতো শেখ রাসেলের প্রিয় সব খাবার। সারাদিন শেষে পরিবারের সবাই মিলে গোল হয়ে বসত একসাথে, গল্প আড্ডার ফাঁকেফাঁকে খোলা হতো শেখ রাসেলের জন্মদিনে পাওয়া উপহারগুলো। কিংবা অন্য অনেক ভাবেই পালন করা যেত শেখ রাসেলের জন্মদিন। কিন্তু সত্যি সত্যিই কি হতো তা আর জানা যাবে না কোনদিন।