প্রতিনিধি ১ আগস্ট ২০২৪ , ১২:০৮:৫৯ প্রিন্ট সংস্করণ
মো:মাহাফুজুর রহমান-নড়াইল প্রতিনিধি
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) মামলার এজাহারসহ দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের উপ-পরিচালক মো:আল আমিন নড়াইল জজ আদালতের বিচারকের নিকট হস্তান্তর করেন। এর আগে সোমবার (২৯ জুলাই) যশোর স্পেশাল জজ আদালতে এ মামলা দায়ের করা হয়।
বুধবার (৩১ জুলাই) মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের উপ-পরিচালক মো:আল আমিন।
মামলার এজাহারের উল্লেখ করা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ৩২ লক্ষ ১৮ হাজার ৯’শ ৯৯ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন এবং অবৈধভাবে ১৪ লক্ষ ৬৮ হাজার ৫০০ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনপূর্বক নিজ ভোগ দখলে রাখায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ও (২৭(১) ধারার শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
এ মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা হিসেবে রয়েছেন দুদকের সহাকারি পরিচালক মো:জালাল উদ্দিন। তদন্ত নং-০৫, ২৯/০৭/২০২৪ খ্রি। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের উপ-পরিচালক মো:আল আমিন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আঞ্জুমান আরা ১৯৮৭ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে চাকুরি লাভ করে ধারাবাহিকভাবে ২০০০ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি প্রাপ্ত হন এবং ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে স্বেচ্ছায় অবসরে গমন করেন।
তিনি ২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারী নড়াইল পৌরসভার মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং অদ্যাবদি দায়িত্ব পালন করছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন হতে ২০২৩ সালের ২৫ জানুয়ারী আজুমান আরা’র প্রতি সম্পদ বিবরণী নোটিশ জারী করা হয়। তিনি একই বছরের ১৯ মার্চ দুদকে সম্পদের বিবরনী দাখিল করেন। দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে আঞ্জুমান আরা তার স্থাবর ও অস্থাবর ও নগদ অর্থ বাবদ ৮৩ লক্ষ ৫৭ হাজার ২’শ ১২ টাকার সম্পদ থাকার তথ্য ঘোষণা করেন। দুদকের যাচাইকালে সম্পদসহ সর্বমোট ১ কোটি ১৫ লক্ষ ৭৫ হাজার ৯১০ টাকার সম্পদ থাকার তথ্য পায় দুদক।
মামলায় বলা হয়, আঞ্জুমান আরা’র নামে সম্পদ বিবরণী নোটিশ জারীর দিনই অর্থাৎ ২০২৩ সালের ২৫ জানুয়ারী তারিখে তিনি ফাস্ট সিভিয়ারিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, নড়াইল শাখায় পরিচালিত তার নামীয় হিসাব হতে চেক এর মাধ্যমে নিজে ২৯লক্ষ ৫০ হাজা টাকা উত্তোলন করেন। ২০২২-২০২৩ করবর্ষে দাখিলকৃত আয়কর রিটার্নে ব্যবসা বহির্ভুত অর্থ সম্পদ হিসেবে ৩৩,০১,৬০০০/- টাকা প্রদর্শন করেছেন। আঞ্জুমান আরা দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরনীতে ৩২লক্ষ ১৮হাজার৬’শ ৯৮ টাকার সম্পদ থাকার তথ্য গোপন করে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রদান করে দুনীতি দমন কমিশন আইন,২০০৪ এর ২৬ (২) ধারায় শাস্তিযাগ্য অপরাধ করেছেন।
এছাড়া ২০২১-২০২২ করবর্ষ পর্যালোচনায় তার পৌর নির্বাচনী ব্যয়সহ পাওয়া যায় ১ কোটি ২৮ লক্ষ ৯৫ হাজার ৯’শ১০ টাকা। আয়কর নথি ও অন্যান্য রের্কডপত্র অনুযায়ি আঞ্জুমান আরা এর মোট গ্রহণযোগ্য আয়ের পরিমান ১ কোটি ১৪ লক্ষ,৭ হাজার ৩’শ ৭৬ টাকা। সে মোতাবেক অভিযুক্ত আঞ্জুমান আরা’র জ্ঞাত আয়ের সাথে অসংগতিপূর্ণ সম্পদের পরিমান ১৪লক্ষ ৮৮হাজার ৫’শ ৩৪ টাকা। যা দুদকে ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ মামলা তদন্তকালে মেয়র আঞ্জুমান আরার অপরাধের সাথে অন্য কেউ জড়িত বা সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকেও আমলে নিবে দুদক।
এদিকে দুদকের করা মামলা সম্পর্কে নড়াইল পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা বলেন, তথ্য বিবরণীতে আমি সম্পদের কোনো তথ্যই গোপন করিনি। আর আমার অবৈধ অর্জিত কোনো সম্পদও নেই। তারপরও এমন মামলা কেন করা হয়েছে, আমার বোধগম্য নয়। আমি আইনি প্রক্রিয়ায় আগাব।