প্রতিনিধি ১৫ অক্টোবর ২০২০ , ৩:৩৩:১২ প্রিন্ট সংস্করণ
ইমন ইসলাম-রাজবাড়ী প্রতিনিধি:
রাজবাড়ী বালিয়াকান্দি উপজেলায় বই প্রেমিদের একমাত্র ভরসাস্থল ছিলো উপজেলা/থানা লাইব্রেরী। প্রায় দুই যুগ পর বন্ধ হয়ে যাওয়া লাইব্রেরীটির নিভে যাওয়া প্রদীপ জ্বালাতে লাইব্রেরীটিকে নতুন করে সাজাতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম হেদায়েতুল ইসলাম।
উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পাঠাভ্যাস গড়ে তোলা ও সৃজনশীলতা বিকাশে এই পাঠাগারটি কাজ করবে বলে মনে করেন ইউএনও একেএম হেদায়েতুল ইসলাম।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বালিয়াকান্দি উপজেলার নতুন প্রজন্মের কথা চিন্তা করে উপজেলা পরিষদের দক্ষিণ পার্শ্বে (পূর্বের থানা নির্বাহী কার্যালয় ভবন) একটি কক্ষে ১৯৯২ সালে এর যাত্রা শুরু হয়। ১৯৯২ সালে এর যাত্রা শুরু হলেও ১৯৯৭ সালের পর লাইব্রেরী হতে আর কোন বই দেয়া-নেয়া হয়নি পাঠকদের।
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত শনিবার উপজেলা পরিষদ চত্বরের পশ্বিম পাশের পুরাতন ভবনের একটি কক্ষে পুনরায় নতুনভাবে এর যাত্রা শুরু হয়েছে। এটা চালু করতে স্কাইটস এর সাধারণ সম্পাদক ও সহকারী শিক্ষক অখিল কুমার কুন্ডু ও দুইজন ছাত্রসহ অফিসের সহকর্মীরা পাঠাগারটি পুনসজ্জিত করতে সার্বিক সহযোগিতা করেন।
উপজেলা পরিষদ লাইব্রেরীতে গিয়ে দেখা যায় ০৫ টি আলমারিতে ১২৫৩ টি বই রয়েছে। এর মধ্যে নতুন করে প্রায় ৪০০টি বই সংযোজন করা হয়। পাঠকদের বই পড়ার জন্য একটি বড় টেবিলের চার পাশে ৬টি চেয়ার দেয়া হয়েছে।
অবসরপ্রাপ্ত উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা শান্তি রাম বিশ্বাস বলেন, ১৯৯২ সালে জনাব মো: শহীদুল্লাহ স্যার কর্মরত থাকাকালীন সময়ে কয়েকশ বই দিয়ে এই লাইব্রেরীর যাত্রা শুরু হয়। তখন আমি বালিয়াকান্দিতে সমবায় কার্যালয়ে সহকারী পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত ছিলাম। আমাকে প্রশিক্ষণ নিতে জাতীয় গ্রন্থাগারে পাঠানো হয়েছিল। ১ মাস প্রশিক্ষণের পর লাইব্রেরীর জন্য প্রায় ৩শ বই দেয়া হয়।
পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালে লাইব্রেরীটি বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমান ইউএনও স্যার লাইব্রেরীটি চালু করেছেন শুনে খুবই খুশি হয়েছি। আশা করছি নতুন প্রজন্ম ফেসবুকে সময় না কাটিয়ে লাইব্রেরীতে এসে বই পড়বে। যুগ যুগ ধরে বই প্রেমিদের জন্য লাইব্রেরীর কার্যক্রম চালু থাকবে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, যতটুকু জানি ১৯৯২ সালে সামান্য কিছুই বই নিয়ে লাইব্রেরীটির যাত্রা শুরু হলেও পরবর্তীতে থেমে যায়। বর্তমান ইউএনও পুনরায় নতুন করে এটি চালু করেছেন। নি:সন্দেহে নতুন প্রজন্ম এবং বই প্রেমিদের জন্য এটা সুসংবাদ। নতুন প্রজন্মকে বই পড়ায় আকৃষ্ট করার কোন বিকল্প নেই। আশা করি নতুন প্রজন্ম এবং বই প্রেমিরা নিয়মিত পদচারনার মাধ্যমে যুগ যুগ লাইব্রেরীটিকে বাঁচিয়ে রাখবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, অফিস পরিষ্কার করাতে গিয়ে এক রুমে ০৩টি আলমারিতে কয়েকশ বই দেখে অফিস স্টাফদের মাধ্যমে জানতে পারি উপজেলায় উপজেলা পরিষদ পাঠাগার নামে একটি পাঠাগার ছিলো। অফিসে নথি খুজে দেখা যায় পাঠাগারটি ১৯৯২ সালে তৎকালীন থানা নির্বাহী অফিসার শহীদুল্লাহ স্যার প্রতিষ্ঠা করেন।
বই ও রেজিস্টার পর্যালোচনা করে দেখা যায় ১৯৯৭ সালের পরে আর কখনও এ পাঠাগারে বই বিতরণ হয়নি। পরে নতুন করে আরও কিছু বই দ্বারা পাঠাগারটি সমৃদ্ধ করে এটি পুনরায় চালু করা হয়। গত শনিবার জেলা প্রশাসক মহোদয় এর শুভ উদ্বোধন করেন। উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পাঠাভ্যাস গড়ে তোলা ও সৃজনশীলতা বিকাশে এই পাঠাগারটি কাজ করবে বলে আমি আশা করি।