মমিনুল ইসলাম মুন-বরেন্দ্র অঞ্চল প্রতিনিধি:
১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের ৫০তম বর্ষপূর্তি ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে, রাজশাহীর তানোর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলায় (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস যথাযথ মর্যাদায় উদযাপন করা হয়েছে। তানোর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে তানোরে শহীদ শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করা হয়। তার আগে প্রথম প্রভাতে দুই লক্ষ সম্ভ্রম হারানো মা-বোন ও ত্রিশ লক্ষ শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে ও শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।
আজ ১৬ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) প্রথম প্রভাতে তানোর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পঙ্কজ চন্দ্র দেবনাথ এর সভাপতিত্বে ও তানোর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়নার সঞ্চালনায়, স্থানিয় সাংসদ ও সাবেক শীল্প প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উপজেলা চত্তরে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে ও শহীদ বেদীতে পুষ্পার্ঘ অর্পণের মধ্যদিয়ে বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
এসময় তিনি বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতিচারণ করেন এবং বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বুদ্ধিজীবীর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে ১ মিনিট নিরবতা পালন ও ফাতেহা পাঠ করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন তানোর উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, তানোর থানার অফিসার ইন্চার্জ (ওসি) রাকিবুল হাসান রাকিব, সহকারী কমিশনার (ভুমি) সুস্মিতা রায়, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সোনিয়া সরদার ও ভাইস চেয়ারম্যান আবু বাক্কার সিদ্দিকি, ৬টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) প্রকৌশলী তারিকুল ইসলাম, এলজিইডি প্রকৌশলী সাইদুর রহমান, কৃষি কর্মকর্তা শামিমুল ইসলাম, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান, বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান, স্কুল কলেজ মাদ্রাসার শিক্ষক শিক্ষার্থীবৃন্দ সাংবাদিসহ উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও স্থানীয় শুধীজন ও নানান শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
প্রত্যুশ ৫০ বার তোপধনি দিয়ে মহান বিজয় দিবসের সুচনা হয়। সূর্য উদয়ের সাথে সাথে শহীদ বেদীতে পুষ্পার্ঘ অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। দ্বিতীয় পর্বে সকাল নয়-টায় জাতীয় সংগীত গাইতে গাইতে পতাকা উত্তোলন বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে কুচকাওয়াজ শুরু হয়।কুচকাওয়াজ প্রদর্শনের নেতৃত্বে ছিলো পুলিশ বাহিনী, আনসার বাহিনী।বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ডিসপ্লে প্রদর্শন করে।
পরে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান ও খেলাধুলা অনুষ্ঠিত হয়। বিকালে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটবে।
প্রধান অতিথি, সাংসদ আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন;
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ ৯ মাস পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের জ্ঞানী-গুণী ও মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের হত্যা করাকে বুঝায়। ১৯৭১ এর ডিসেম্বর মাসে স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে পাকিস্তানের পাকহানাদার বাহিনী যখন বুঝতে শুরু করে যে তাদের পক্ষে যুদ্ধে জয় সম্ভব না, তখন তারা নবগঠিত দেশকে সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও শিক্ষাগত দিক থেকে দুর্বল এবং পঙ্গু করে দেয়ার জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ ডিসেম্বর রাতে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের দেশীয় দোসর রাজাকার।
আলবদর ও আল শামস বাহিনীর সহায়তায় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নিজ নিজ গৃহ হতে তুলে এনে নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করে। এই পরিকল্পিত গণহত্যাটি বাংলাদেশের ইতিহাসে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড নামে পরিচিত। বন্দী অবস্থায় বুদ্ধিজীবীদের বিভিন্ন বধ্যভূমিতে হত্যা করা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাদের ক্ষত-বিক্ষত ও বিকৃত লাশ রায়েরবাজার এবং মিরপুর বধ্যভূমিতে পাওয়া যায়। অনেকের লাশ শনাক্তও করা যায়নি, পাওয়াও যায়নি বহু লাশ। ১৯৭১ এর ১৪ ডিসেম্বরের নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করে প্রতিবছর ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশে পালিত হয় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বুদ্ধিজীবী হত্যার স্মরণে বাংলাদেশের ঢাকায় বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ স্থাপন করা হয়েছে।
E-mil: dailyalokito71sangbad@gmail.com
তথ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত গণমাধ্যম দৈনিক আলোকিত ৭১ সংবাদ
@বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোক চিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।
Copyright © 2024 alokito71sangbad. All rights reserved.