প্রতিনিধি ১৮ জুলাই ২০২২ , ৪:২৮:১০ প্রিন্ট সংস্করণ
রাজশাহীর তানোরে সম্পত্তির দখল ঠেকাতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুত্বর জখম আব্দুল ওহাবের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়রা এটাকে পরিকল্পিত হত্যা অভিহিত করে নেপথ্যের মদদদাতা হিসেবে জনৈক ইউপি চেয়ারম্যানের দিকে অভিযোগের তীর ছুড়েছে। তারা বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান চাইলেই এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে পারতেন। তানোরের পাঁচন্দর ইউপির কৃষ্ণপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। জানা গেছে, উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের (ইউপি) কৃষ্ণপুর মৌজায়, আরএস ৩০৪ নম্বর খতিয়ানের আরএস ১৩৮৭ দাগে প্রায় ৫ বিঘা দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপুর্ণভাবে ভোগদখল করে আসছেন কৃষ্ণপুর গ্রামের আব্দুল ওহাব।
প্রত্যক্ষদর্শী সুত্র জানায়, চলতি বছরের ১৯ জুন রোববার
সকালে জমিতে চাষ করতে যায় ওহাব। এসময় জনৈক ইউপি চেয়ারম্যানের মদদে কৃষ্ণপুর গ্রামের আব্দুল হান্নান ওরফে হারানার পুত্র সাজু, গনি ও মহিবুল, সাজুর পুত্র আরিফ, মহিবুলের পুত্র হেলাল মৃত আবুল হোসেন ওরফে আবুর পুত্র আজাদ ও আজিবুর দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আব্দুল ওহাবের ওপর হামলা করে। এক পর্যায়ে ওহাব সজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে মৃত ভেবে তাকে জমিতে ফেলেই তারা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে ওহাবের স্বজনরা তাকে সজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
কিন্ত্ত তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকরা রামেক হাসপাতালে প্রেরণ করে, সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইদুল আযহার দিনে তার মৃত্যু হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার কৃষ্ণপুর নিমকুড়ি এলাকায় প্রায় ৫ বিঘা জমি ৯৯ বছরের জন্য লীজ নিয়ে চাষাবাদ করেন কৃষ্ণপুর গ্রামের আমজাদ হোসেন। কিন্ত্ত তিনি মারা গেলে তার পুত্র আব্দুল ওহাব দিগরের নামে চেক কাটা হয়। নিহতওহাবের ভাই আব্দুল্লাহ হিল কাফি জানান, ১৯৮০ সালে জমি নিয়ে আদালতে মামলা করা হয়, যাহার মামলা নম্বর ৩১১/৮০।
তিনি বলেন, এছাড়াও ভুমি অফিসে একাধিকবার বসা হয়েছে প্রতিপক্ষ কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারে নি, এমনকি ভুমি অফিস থেকে যারাই জমি দেখতে এসেছে তাদেরকেই লাঞ্ছিত করেছে প্রতিপক্ষ। তিনি আরো বলেন,প্রতিপক্ষের দাবি তাদের নামে উক্ত সম্পত্তি ১৯২২ সালের রেকর্ড আছে, কিন্তু ৬২ ও ৭২ সালের কোনো রেকর্ড নাই। জনৈক ইউপি চেয়ারম্যানের মদদে তারা জোরপুর্বক জমির দখল নিতে গিয়ে আব্দুল ওহাবকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গ্রামবাসি বলেন, জনৈক ইউপি চেয়ারম্যান ওই জমির দখল নিতে তার অনুগত বাহিনীর লোকজনকে লেলিয়ে দিয়েছে, তার ওহাব হত্যার দায় সে এড়াতে পারে না।
এবিষয়ে পাঁচন্দর ইউপি যুবলীগের সম্পাদক মোসারফ হোসেন আমি ভাবতেই পারছি না যারা আমাদের পরিবারে কাজ করতো তারাই আমার চাচাকে হত্যা করলো, এর চেয়ে দুঃখের বিষয় আর কি হতে পারে। এবিষয়ে পাঁচন্দর ইউপি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বলেন, এঘটনায় তিনি বা তার লোকজন সম্পৃক্ত নাই। তিনি বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে বিচার হোক সেটা তিনি চান। এবিষয়ে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি কামরুজ্জামান মিয়া জানান, যিনি মারা গেছেন তিনি আগের এক মামলার বাদি ছিলেন, তার লাশ ময়না তদন্ত করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কোন মামলা হয়নি বলে জানান তিনি।