প্রতিনিধি ১০ ডিসেম্বর ২০২২ , ৬:৫২:০৭ প্রিন্ট সংস্করণ
ত
মমিনুল ইসলাম মুন-বরেন্দ্র অঞ্চল প্রতিনিধিঃ
রাজশাহী তানোরে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘর পাইয়ে দেবার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করে হতদরিদ্রদের কাছে থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। তানোর থানা মোড়ের অটো স্ট্যান্ডের মাস্টার ও তানোর প্রেসক্লাবের ক্যাশিয়ার সোহেল রানা এসব টাকা আদায় করেছেন। এমনকি রাজশাহী জেলা প্রশাসক ডিসি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও এবং উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভুমি) ভূয়া স্বাক্ষর সংবলিত ভূয়া দলিল দেয়া হয়েছে। এখবর ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তোতা দিং বাদি হয়ে সোহেল রানাকে অভিযুক্ত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউএনও’র কার্যালয় থেকে তাকে
নোটিশ করা হয়েছে। যার শুনানি আগামী ১৩ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও’র কার্যালয়ে গ্রহণ করা হবে। অন্যদিকে প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের দায়িত্বশীল তিনজন কর্মকর্তার স্বাক্ষর জালিয়াতির ঘটনায় অফিস পাড়ায় রীতিমতো তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
একই সঙ্গে তানোর প্রেসক্লাবের ক্যাশিয়ার সোহেল রানা ও তার
সহায়তাকারীদের শাস্তির দাবিতে ফুঁসে উঠেছেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাঁধাইড় ইউনিয়নের (ইউপি) সাইধাড়া বরাপুকুর গ্রামে সরকারি খাস জমিতে বসবাস করছে হতদরিদ্র তোতা, নাসির, জাহাঙ্গীর, ফারুক ও কবিরুল ইসলাম। তাদের পাঁচজনকে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রায়ণ প্রকল্পের বাড়ীসহ জমি বন্ধোবস্ত দেওয়ার নাম করে অটো মাস্টার ও প্রেসক্লাবের ক্যাশিয়ার সোহেল রানা কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। সম্প্রতি মন্ত্রনালয়ের (ভূয়া) নিল রঙের কাগজ দিয়ে পুনরায় টাকা আদায় করেন। ভুক্তভোগী তোতা জানান, প্রায় তিন মাস আগে সোহেল রানা মুন্ডুমালা হাটের দিন ডেকে বাড়ি ও জমি বন্ধোবস্ত দিবেন বলে আমাদের পাঁচজনের নামে আবেদন জমা দেয়ার কথা বলা হয়। এর পর ইউএনও স্যারের কথা বলে কয়েক দফায় এক লাখ টাকা নিয়েছেন। সম্প্রতি সোহেল রানা মোবাইল করে আমনুরা ডাকে।
সেখানে গেলে নাজিম উদ্দিনের চায়ের দোকানে বসে নিল রঙের কাগজ দিয়ে বলে মন্ত্রনালয় থেকে আপনাদের নামে জায়গা বাড়ি দেওয়া হয়েছে, তবে তিন মাস কাগজ গোপন রাখতে হবে। তার এই কথায় সন্দেহ হলে তারা কাগজ নিয়ে উপজেলা ভূমি অফিসে গিয়ে জানতে পারেন সব জালিয়াতি। তিনি বলেন, আমরা সোহেল রানার বাড়িতে গিয়ে টাকা চাইলে সে বলে এক দু সপ্তাহ দেরি হবে। এই সময় প্রমান স্বরুপ ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে লিখাপড়া করা হয়, তবে জমির বদলে টাকা ধারের কথা লিখা হয়েছে, আমরা গরীব মানুষ তাকে টাকা ধার দিবো ক্যানো। কিন্ত্ত সময় অনুযায়ী টাকা চাইলে নানা তালবাহানা শুরু করে, মোবাইলও ধরে না। আমরা অসহায় মানুষ সরকারি বাড়ি পাবার লোভে ধার দেনা করে টাকা দিয়ে ছিলাম। পরে এনজিও থেকে ঋন নিয়ে টাকা পরিশোধ করেছি। এখন প্রতি সপ্তাহে কিস্তি দিতে হচ্ছে। এক প্রকার বাধ্য হয়েই ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, যার শুনানি আগামী ১৩ ডিসেম্বর দিন ধার্য রয়েছে।
এদিকে তানোরে কর্মরত মুলধারার একাধিক সাংবাদিক প্রচন্ড ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যার কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা নাই, অন্যের সার্টিফিকেট দিয়ে সাংবাদিক হয়েছে, সে অটো মাস্টার ৫-১০ টাকা করে তার চাঁদা তোলা কাজ। কিন্তু এখন হয়েছে বড় চাঁদাবাজ। হওয়াটাই স্বাভাবিক। আবার নাকি থানার ওসির বিশস্ত লোক তাই থানার নানা কাজ করে থাকে, পুলিশের মাসোয়ারা আদায়সহ করেন মামলার তদ্বির। অথচ মোবাইলে ভয়েস রেকর্ড ছাড়া লিখতে পারে না, কিন্তু বড় সাংবাদিক। এদের জন্যই আজ প্রকৃত সাংবাদিকগণ সমাজে হেয়ওপ্রতিপন্ন হচ্ছে, অবশ্যই এসব চাঁদাবাজদের চরম শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। এবিষয়ে তানোর প্রেসক্লাবের ক্যাশিয়ার সোহেল রানা জানান, তিনি তাদের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছেন। কিন্তু একটি মহল এঘটনাকে ইস্যু বানিয়ে তাকে হেনেস্তা করতে মরিয়া হয়ে পড়েছে। তারা হতদরিদ্র মানুষ আপনাকে টাকা ধার দিবেন কেনো এই প্রশ্নের কোনো সদোত্তর না দিয়ে কৌশলে এড়িয়ে গেছেন। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পংকজ চন্দ্র দেবনাথ জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে উভয় পক্ষকে নোটিশ করা হয়েছে। শুনানিতে প্রমাণ হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।