প্রতিনিধি ৭ আগস্ট ২০২৪ , ১০:৩১:৪৯ প্রিন্ট সংস্করণ
মোঃ মমিনুল ইসলাম মুন-বরেন্দ্র অঞ্চল প্রতিনিধি:
রাজশাহীর তানোরের সরনজাই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ইউপি আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে নিরহ ব্যবসায়ীর দোকানের সামনে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে। এতে অসহায় দোকানী নিজের ঘর ফেলে অন্যর দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করতে বাধ্য হয়েছে। ভুক্তভোগী নিজের ঘর ফেলে ভাড়ায় অন্যর ঘরে ব্যবসা করতে গিয়ে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে পরিবার নিয়ে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে। আব্দুল হান্নান দলীয় প্রভাব বিস্তার করে ওই ব্যবসায়ীর দোকান ঘর প্রায় তিন বছর যাবত বন্ধ করে রেখেছে।
উপজেলার কালীগঞ্জহাট-কাঁকনহাট রাস্তার সরনজাই ইউনিয়নের (ইউপি) সরনজাই বাজারে এমন অমানবিক ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে এমন অমানবিক ঘটনায় জনমনে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে, উঠেছে সমালোচনার ঝড়, বইছে মুখরুচোক নানা গুঞ্জন।স্থানীয়রা জানান,আওয়ামী লীগ নেতার এমন কান্ডে সাধারণ মানুষের মাঝে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ায় তারা বর্তমান সরকারের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। আব্দুল হান্নান, আওয়ামী লীগের দাপট দেখিয়ে নিয়োগ বাণিজ্যে ও স্কুলের বিপুল পরিমান সম্পদের আয় আত্মসাৎ করেছে।
জানা গেছে,উপজেলার সরনজাই ইউপির আরএস খতিয়ান নম্বর ১০২৬, হাল দাগ নম্বর ৩১০৭ পরিমাণ ২২ শতাংশের কাত ২ দশমিক ৬০ শতাংশ। ক্রয় সুত্রে উক্ত সম্পত্তির মালিক সরনজাই গ্রামের ওয়াজেদ আলীর পুত্র মুদিদোকানী আশরাফুল ইসলাম। বিগত ২০১৯ সালে তিনি বিভিন্ন এনজিও থেকে প্রায় কুড়ি লাখ টাকা ঋণ নিয়ে সেখানে চারটি পাকা ঘর নির্মাণ করেছেন।কিন্ত্ত তার ঘরের সামনে সরনজাই স্কুলের জায়গা দাবি করে ইউপি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সরনজাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান সেখানে জোরপুর্বক অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে শফিকুল, রাজু ও তোফাজ্জুলের কাছে ভাড়া দিয়েছেন।
অথচ আরএস খতিয়ান নম্বর ৯৭৭ হাল দাগ নম্বর ১১৬৩ উক্ত দাগে মোট জমি ২১ শতাংশ এর মধ্যে ৩ দশমিক ৫০ শতক জমি রাস্তার জন্য অধিগ্রহণ করেছেন সরকার। যাহার এল,এ কেস নম্বর-২০/১৯৯৯-২০০০। এসব অধিগ্রহণকৃত জমি আশরাফুলের দোকানের সামনে। এদিকে সরনজাই ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সরনজাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে অধিগ্রহণকৃত জমির ওপর জোরপুর্বক অবৈধ স্থাপনা (ঘর) নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন। এতে আশরাফুলের চারটি ঘরে যাতায়াতের পথ বন্ধ হওয়ায় ঘরগুলো কার্যত বন্ধ হয়ে পড়েছে। ফলে আশরাফুল পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। একদিকে এনজিও ঋণের কিস্তির চাপ, অন্যদিকে নিজের ঘর ফেলে ভাড়া ঘরে ব্যবসা করতে গিয়ে আর্থিক ভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলা ভুমি অফিস থেকে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নোটিশ করা হলেও তা আমলে নেয়নি অবৈধ দখলদারগণ। এবিষয়ে উপজেলা ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার আমানত আলী বলেন, রাস্তা বর্ধিত করণের সময় ওই জায়গা সরকার অধিগ্রহণ করেছেন এবং টাকা স্কুল গ্রহণ করেছেন। কাজেই ওই জায়গা স্কুল দাবি করতে পারে না করলে এটা অবৈধ।তিনি বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নোটিশ দেয়া হয়েছে, কিন্ত্ত তারা আমলে নিচ্ছেন না। এবিষয়ে সরনজাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান বলেন, স্কুলের জায়গা তাই তিনি দখল করেছেন। এবিষয়ে স্কুলের সভাপতি আলহাজ্ব সাইদুর রহমান সরকার ওরফে আবু সাইদ বলেন, এটা প্রধান শিক্ষকের বিষয়।
এবিষয়ে সরনজাই ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক খাঁন বলেন, দোকানদার আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে যা করা হয়েছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি এবিষয়ে বর্তমান সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। এবিষয়ে সরনজাই ইউপি আওয়ামী লীগের সম্পাদক আতাউর রহমান বলেন, এটা অন্যায়। কিন্ত্ত প্রধান শিক্ষক তো কারো কথায় শোনেন না। তিনি বলেন, স্কুলের বিপুল পরিমান সম্পদ সেটারও কোনো হিসেব কেউ পায় না। এবিষয়ে রাজু, শফিকুল ও তোফাজ্জুল বলেন, তারা হেড মাস্টারের কাছে থেকে অধিগ্রহণকৃত জমিতে করা দোকান ভাড়া নিয়েছেন।#