প্রতিনিধি ১৫ অক্টোবর ২০২২ , ২:০৩:০৭ প্রিন্ট সংস্করণ
মমিনুল ইসলাম মুন-বরেন্দ্র অঞ্চল প্রতিনিধি:
রাজশাহীর তানোরে অবৈধ ক্লিনিক ও ভূয়া ডাক্তারের ছড়াছড়ির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা জানান,উপজেলার প্রায় প্রতিটি হাট-বাজার ও পাড়া-মহল্লার অলিগলিতে লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসী এবং ভূয়া চিকিৎসকরা সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে নিয়মিত প্রতারণা করে আসছে। তবে এ নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নাই আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, প্রশাসন বা স্বাস্থ্য বিভাগের। এসব কথিত চিকিৎসকদের দ্বারা গ্রামের সহজ-সরল মানুষ প্রতিনিয়িত প্রতারিত হলেও ভূয়া চিকিৎসকেরা থাকেন প্রভাবশালীদের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে।
দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা সদর, বিল্লীহাট, মুন্ডুমালা হাট, কোয়েল হাট, ইলামদহী ও চৌবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় ভূয়া চিকিৎসকরা তাদের নামের আগে ডাঃ ডিগ্রী ব্যবহার করে চিকিৎসার নামে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, ‘বাংলাদেশ মেডিক্যাল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল’ নামে একটি আইন অনুমোদন দিয়েছে। অনুমোদিত এই আইনে বলা হয়েছে, এমবিবিএস ও বিডিএস পাশ করা চিকিৎসক ব্যতিত অন্য কেউ নামের আগে ডাক্তার লিখতে পারবেন না।
স্থানীয় সুত্র জানায়, তানোরের সরনজাই ইউপির সরনজাই বাজারে নিজস্ব চেম্বার খুলে চিকিৎসক না হয়েও নামের আগে ডাঃ পদবী ব্যবহার করে রিতিমতো ভিজিট নিয়ে রোগী দেখছেন, এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে তার একাধিক চেম্বার রয়েছে এবংমানব দেহের জটিল-কঠিন সর্বরোগ নির্ণয় করে ব্যবস্থা পত্র দিচ্ছেন কথিত চিকিৎসক ডা, মোঃ রাব্বিল ইসলাম। ডিএমএফ ঢাকা,পিডিটি কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ, সিএমইউ বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব মেডিক্যাল সাইন্স, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মুন্ডুমালা ক্যাথলিক মিশন হাসপাতাল।
কিন্ত্ত তার এতো বাহারি ডিগ্রি থাকলেও তিনি আসল ডিগ্রি
এমবিবিএস ও বিডিএস পাশ না করেই নামের আগে ডাঃ ডিগ্রী ব্যবহার করে প্রতারণা করছে। আবার চিকিৎসক না হয়েও তিনি আল্ট্রাসনোগ্রাফি, রক্ত, মল-মূত্র পরীক্ষা এবং মানুষের জটিল-কঠিনসহ সব ধরনের রোগের চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন যেটা আইনের চোখে দন্ডনীয় অপরাধ। কিন্ত্ত দীর্ঘদিন ধরে তিনি চিকিৎসার নামে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসলেও বিষয়টি যেনো দেখার কেউ নাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, তিনি কিভাবে আল্ট্রাসানোগ্রাফি রিপোর্ট দেয়।
ও মানবদেহের বিভিন্ন জটিল-কঠিন রোগের পরীক্ষা-নীরিক্ষা করেন সেটা ভাবলেই গা-শিউরে উঠে। তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানীর একশ্রেণীর বিক্রয় প্রতিনিধিদের তিনি দালাল হিসেবে ব্যবহার করছেন। আর এসব বিক্রয় প্রতিনিধিরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে কথিত ডাঃ রাব্বিলের গুনকীর্তন করে রোগী বাগিয়ে আনছে। স্থানীয় এলাকাবাসী ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান ও এবিষয়ে সরেজমিন তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন বলেন, এমবিবিএস ও বিডিএস পাশ করা চিকিৎসক ছাড়া অন্য কেউ নামের আগে ডাক্তার লিখতে পারবে না। তিনি বলেন, এবিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ডাঃ মোঃ রাব্বি ইসলাম এসব অভিযোগ অস্বীকার ও নিজেকে চিকিৎসক দাবী করে বলেন, তার সরকার অনুমোদিত সার্টিফিকেট রয়েছে। তিনি আল্ট্রাসানোগ্রাফি রিপোর্ট দিতে পারবেন সেই অভিজ্ঞতাও তার রয়েছে। এছাড়াও তাদের পদবী ব্যবহার নিযে উচ্চ আদালতে রিট করা আছে।