পরিবহন না থাকলেও আছে ফি:উত্তাল কবি নজরুল কলেজ
ছয় দফা দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজে এর সাধারণ শিক্ষার্থীরা।প্রতিবছর পরিবহন ফি নিয়েও পরিবহন চালু না করা। ছাত্রাবাস সংস্কারে কোনো পদক্ষেপ না নেয়া সহ কয়েকবছর ধরে কলেজের অবকাঠামোর কোনো উন্নয়ন না হওয়ায় এই আন্দোলন এর ডাক দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
২১ মার্চ (সোমবার) সকালে কলেজের মূল ফটকে প্লেকার্ড হাতে নিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের ছয় দাবি তুলে নানা স্লোগান দিতে থাকেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি গুলো হলো-
১. নয় কোটি টাকার বাস সার্ভিস চাই।
২.শহীদ শামসুল আলম হল সংস্কার চাই।
৩.প্রতিটি ভবনে ছাত্রীদের কমনরুম চাই।
৪.পরিত্যক্ত ডাফরিন হল চালু চাই।
৫. ক্লাস ও ওয়াশরুম ডিজিটালাইজেশন করতে হবে।
৬. কলেজ ক্যান্টিন পুনরায় চালু করতে হবে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মাহমুদ খান বলেন,বিগত ১০ বছরে আমাদের পরিবহন খাতে প্রায় ৯ কোটি টাকা জমা হওয়ার কথা। অথচ আমাদের বাস নেই।এসব টাকা যায় কই।আমাদের ছাত্রাবাস সংস্কারে কলেজ প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই।মেয়েদের জন্য নেই কোনো আলাদা ওয়াশরুমের ব্যবস্থা। ক্যান্টিন চালু হলেও তা বন্ধ।কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার কলেজে নানা উন্নয়ন মূলক কাজ শুরু করলেও এই অধ্যক্ষ আসার পর তা বন্ধ হয়ে গেছে।আমাদের টাকা যাচ্ছে কই।
আরেক শিক্ষার্থী রাফি জানান,আমাদের একাউন্টিং ডিপার্টমেন্টে ১৫০০ শিক্ষার্থী শিক্ষা সফর ফি দেয় ৭৫ হাজার টাকা।দুই বছরে প্রায় দেড় লাখ টাকা। অথচ আমরা শিক্ষা সফরে যেতে চাইলে তারা আমাদের টাকা দিতে চায় না।হিসাব চাইলে তারা অন্য কথা বলে।আমাদের জন্য তারা বরাদ্দ দেয় ২০০ টাকা।তাহলে বাকি টাকা যায় কই।
জানা যায়,কলেজের ওয়েবসাইটের তথ্য মতে ১৭ হাজার শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পরিবহন ফি ৪০০ টাকা করে বছরে ৬৮ লাখ,ছাত্র সংসদ ফি ২৫ টাকা করে বছরে ৪ লাখ ২৫ হাজার,রেঞ্জার ফি ১০ টাকা করে ১ লাখ ৭০ হাজার,রেড ক্রিসেন্ট ২০ টাকা করে ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা আদায় করে কলেজ প্রশাসন।অথচ কলেজে নেই কোনো পরিবহন, নেই রেড ক্রিসেন্ট, নেই ছাত্রসংসদ। রেঞ্জার ইউনিট তো চালুই হয় নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তর আগে শিক্ষার্থী ছিল প্রায় ৩৩ হাজার। এক যুগেরও বেশি সময় কলেজে ছাত্র সংসদ নেই।সর্বশেষ ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছিল ২০০৮ সালে।২০১৯ সালে ভাড়ায় দুটি বিআরটিসি বাস চালু হলেও ১০ মাস পর তা বন্ধ হয়ে যায়। রেঞ্জার ইউনিট তো কলেজে নেই।রেড ক্রিসেন্ট এর কার্যক্রমও বন্ধ।তাহলে আমাদের এসব টাকা যায় কই।বিগত ১০ বছর ধরে শিক্ষার্থীদের থেকে নেয়া এসব টাকা দিয়ে কি করা হয়।
কলেজ বিএনসিসি'র এক সদস্য জানান,আমাদের কলেজে রেঞ্জার নেই,তবে রেড ক্রিসেন্ট একবার চালু করার জন্য কলেজের ইসলাম শিক্ষা বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আকবর হোসাইনকে দায়িত্ব দেয়া হয়।তিনি কাগজে কলমে দায়িত্ব নিলেও কাজে তা এগোয় নি।ক'দিন পরেই রেড ক্রিসেন্ট এর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
এসব বিষয়ে জানতে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আমেনা বেগমের কাছে গেলে তিনি সাংবাদিকদের রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। আবার প্রশ্ন করলে তিনি দারোয়ানকে সাংবাদিকদের বের করে দিতে বলেন।পালটা প্রশ্ন করলে তিনি চেয়ার থেকে উঠে ভিতরের অন্য রুমে চলে যান।
E-mil: dailyalokito71sangbad@gmail.com
তথ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত গণমাধ্যম দৈনিক আলোকিত ৭১ সংবাদ
@বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোক চিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।
Copyright © 2024 alokito71sangbad. All rights reserved.