সাংবাদিক জামাল হত্যার ১৪ বছর আজ। বিচারের দাবিতে আজো সহকর্মীরা মাঠে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করেছেন! ২০০৭ সালের ৬মার্চ তাকে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু আমাদের দেশের চৌকস পুলিশ বাহিনি আজও খুঁজে পায়নি জামাল হত্যাকান্ডে জড়িত আসল খুনিদের। ফলে ১৪ বছরেও হত্যাকান্ডের বিচার হয়নি। কবে বিচার হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্ধিহান রয়েছে।
জামাল রাঙামাটির সাহসী সাংবাদিক ছিলেন। হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে রাঙামাটির সাংবাদিকরা প্রতিবছর মানববন্ধন করছে। পরিবারের সদস্যরা রয়েছে শংকিত। রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সাংবাদিক সুরক্ষায় কোন আইন না থাকায় এমনটি ঘটছে বলে মনে করে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম ও সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি, বাংলাদেশ। জামাল এনটিভির রাঙামাটি প্রতিনিধি ছিলেন। তাকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে ফেলে রেখেছিল সন্ত্রাসীরা।
সাংবাদিক নির্যাতন- হত্যার বিচার সংস্কৃতি চালু হোক। ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত উন্নয়নশীল দেশ প্রতিষ্ঠা হোক এমনটা আমরাও চাই। তবে সাংবাদিকদের সুরক্ষা না দিলে কোন কিছুই সম্ভব হবেনা। কথাটি রাষ্ট্রযন্ত্র পরিচালনায় থাকা সংশ্লিষ্টদের মাথায় রাখা উচিত।
একজন সাধারণ মানুষ হত্যার বিচার হয় পক্ষান্তরে সাংবাদিক হত্যার কেন বিচার হয়না? এরুপ পরিস্থিতি চলতে থাকলে সাংবাদিকরা পেশা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হলে রাষ্ট্রযন্ত্রের পাশে লুকিয়ে থাকা ডাকাতদের সুবিধা হবে।
সাংবাদিক নির্যাতন-হত্যার বিচার সংস্কৃতি না হওয়ার পেছনে একটি গোষ্ঠি এখনও কলকাঠি নাড়ছেন। সাংবাদিকরা বিপদে থাকলে কিংবা বিচারহীনতায় থাকলে রাষ্ট্রীয় চোর-ডাকাতরা সমুদ্র চুরিতে আর বাঁধা থাকবেনা। তাই রাষ্ট্রযন্ত্রে থাকা দেশপ্রেমিকদের উচিত সাংবাদিকদের সুরক্ষায় এখনি উদ্যোগ নেয়া।
আমরা দেখেছি স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে দেশে প্রায় ৪০ জন সাংবাদিক হত্যার বিচার হয়েছেন। হাতেগোনা ৪-৫জন সাংবাদিক হত্যার বিচার হলেও বাকি হত্যার বিচার হয়নি। সাগর-রুনি হত্যাকান্ড দেশবাসি দেখছেন। মুজাক্কির হত্যাকান্ড নিয়ে তালবাহানা শুরু হয়েছে। মানিকগঞ্জ এবং নারায়নগঞ্জের দু'সাংবাদিক হত্যার চার্জশীট এখনো হয়নি।
মূলকথা: কোথাও সাংবাদিকরা আসামী হলে দ্রুত গ্রেফতার কিংবা চার্জশীট এবং বিচার প্রক্রিয়াও অতিদ্রুত হয়ে ওঠে। পক্ষান্তরে সাংবাদিকরা বাদিপক্ষ হলেতো পুলিশ-প্রশাসন আসামি খুঁজেই পায়না। চার্জশীট, আসামী গ্রেফতার ও বিচার তখন আকাস-কুসুম ব্যাপারে দাঁড়ায়।
আসুন; স্বাধীনতার সুবর্নজয়ন্তীর এই সময়ে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের একই গ্রহের বাসিন্দা হিসেবে মেনে নেই। ওরাতো দেশের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করে। ওরাতো আপনাদেরই কারো ভাই-বোন,কিংবা সমাজেরই একটি অংশ। ওরা বিচ্ছিন্ন কোন জাতি নয়। রাষ্ট্রের কাছে ওদের নিরাপত্তার দাবি রয়েছে।
চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখাতে চাই: সম্প্রতি চলমান মহামারী করোনাকালে সরকারের বেতনভুক্ত প্রশাসনের পাশে বেতন-ভাতা ছাড়া সাংবাদিকরা জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন। করোনায় মৃতবরণ করে রেখে গেছেন বহু অবদান।
সম্প্রতি লেখক মুশফিক- সাংবাদিক মুজাক্কিরের রক্ত গোটা সাংবাদিক সমাজকে দায়ী করে গেলো। মুশফিক-মুজাক্কিরের রক্তের বিনিময়ে গণমাধ্যম অঙ্গনে একটা পরিবর্তন অপেক্ষা করছে। আমরা অরক্ষিত গণমাধ্যমকে সুরক্ষা দিতে মাঠে আছি।
সারাদেশের সাংবাদিকদের সাথে নিয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ হচ্ছি। বিশেষ করে মফস্বলের সাংবাদিকরাই বেশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। কোন সাংবাদিক নির্যাতন -হত্যায় আর কোন ছাড় নয়। আমরা জিরো টলারেন্স, আমরা ঐক্যবদ্ধ।
লেখক: আহমেদ আবু জাফর, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম, কেন্দ্রীয় কমিটি।
E-mil: dailyalokito71sangbad@gmail.com
তথ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত গণমাধ্যম দৈনিক আলোকিত ৭১ সংবাদ
@বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোক চিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।
Copyright © 2024 alokito71sangbad. All rights reserved.