নিউজ ডেস্কঃ
রাজধানীর পল্লবী থানায় নিয়ে আটকে রেখে মাদক মামলার ভয় দেখিয়ে মিনারা নামে এক চা দোকানির কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পল্লবী থানার এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে।
এসআই কাজী রায়হানুর রহমান এই টাকা আদায় করেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী মিনারা।
এ ঘটনার বিচার চেয়ে ভুক্তভোগী মিনারা রোববার (২৬ ডিসেম্বর) পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনারের (ডিসি) কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে একটি কল রেকর্ড সংরক্ষিত মেমোরি কার্ডও জমা দিয়েছেন মিনারা।
অভিযোগে মিনারা জানান, গত ২১ ডিসেম্বর বেলা ১১টার দিকে পুলিশের সোর্স নাদিম ও চোরা শামসের তার দোকানে এসে ৫০০ টাকা ভাংতি চান। এরপর দুপুর ২টার দিকে তিনি (মিনারা) সমিতির দৈনিক টাকা আনতে সমিতির এক নারী কর্মকর্তাকে নিয়ে সেলিনা বেগম নামে তার এক আত্মীয়ের বাসায় যান। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন পল্লবী থানার এসআই কাজী রায়হান তার টিমের সদস্যদের নিয়ে সেলিনার বাসায় অভিযান পরিচালনা করছেন। পুলিশের সঙ্গে ওই সময় সোর্স নাদিম ও চোরা শামসের ছিল। সোর্স নাদিম মিনারাকে দেখিয়ে এসআই রায়হানকে বলে- সকাল বেলায় ওই মহিলার (মিনারা) কাছ থেকে ৫০০ টাকা ভাংতি নেওয়া হয়েছে। এ সময় এসআই রায়হানের নির্দেশে মিনারাকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
মিনারা অভিযোগ করেন, ‘আমাকে যখন আটক করা হয়, ওই সময় কোনো মহিলা পুলিশ ছিল না। আমাকে টেনেহিঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তোলা হয়। থানায় নিয়ে ৪ তলায় আমার কাছে ৭০ হাজার টাকা দাবি করে পুলিশ। তা না হলে হেরোইনের মামলা দিয়ে আমাকে জেলখানায় পাঠিয়ে দেবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। আমি এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এসআই রায়হানুর রহমান আমাকে বলেন- আমি নাকি মাদক ব্যবসায়ী। এ কথা বলে আমার হাতে হ্যান্ডকাফ লাগান তিনি। আমার একটি দুধের শিশু আছে। আর মান-সম্মানের কথা চিন্তা করে আমার স্বামী রাত ১টার দিকে পরিচিত একজনের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ধার নেয়। এরপর এই টাকা এসআই রায়হানের হাতে দিলে তিনি আমাকে থানা থেকে মুক্তি দেন। আমাকে ছেড়ে দেওয়ার সময় জোর করে একটি স্বীকারোক্তি নেন এসআই রায়হান এবং তা মোবাইল ফোনে ভিডিও করে রাখেন তিনি।
মিনারা আরও বলেন, আমরা স্বামী–স্ত্রী দুজনই একটি চায়ের দোকান দিয়ে সংসার চালাই। কালশি নতুন রাস্তায় আমাদের চায়ের দোকান সবাই চেনে। আমার নামে থানায় কোনো মামলা, জিডি বা অভিযোগ নেই। আমরা দিন আনি দিন খাই। ঘটনার দিন দুপুরে আমাকে থানায় আটকে রেখে টাকার বিনিময়ে গভীর রাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। থানার সিসি ক্যামেরা চেক করলেই প্রমাণ মিলবে। আমাকে আটক করার পর প্রথমে ৭০ হাজার টাকা দাবি করেন রায়হানের টিমের সদস্যরা। টাকা কমানোর জন্য আমার মা পুলিশের পা পর্যন্ত ধরেছে, তারপরও তাদের মন গলেনি। টাকার অংক নিয়ে এসআই রায়হানের টিমের সদস্য পুলিশ কনস্টেবল সরোয়ার কামাল ও আনসার নাহিদ আমার এক বোনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কয়েক দফা দেন-দরবার করেন। একপর্যায়ে ২০ হাজার টাকায় রফাদফা হয়। টাকা লেনদেনের এই কথোপকথনের অডিও রেকর্ড আমাদের কাছে রয়েছে। ডিসি অফিসে মেমোরি কার্ডসহ লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছি। আমি দোষী পুলিশ সদস্যদের বিচার চাই।
অভিযুক্ত পল্লবী থানার এসআই রায়হানুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, মিনারাকে আমি চিনতে পারছি না। ওই দিন সেলিনা বেগম নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। এর সঙ্গে হয়ত অন্য কাউকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হতে পারে। তবে টাকা পয়সা নিয়ে কাউকে ছেড়ে দেওয়া হয়নি। নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাকে এমনিতেই ছেড়ে দেই।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে এসআই রায়হান বলেন, অভিযোগ যে কেউ জমা দিতে পারে। এটা তো প্রমাণিত হতে হবে।
পল্লবী জোনের এডিসি আরিফুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তের পর এ বিষয়ে বিস্তারিত বলব।
E-mil: dailyalokito71sangbad@gmail.com
তথ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত গণমাধ্যম দৈনিক আলোকিত ৭১ সংবাদ
@বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোক চিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।
Copyright © 2024 alokito71sangbad. All rights reserved.