প্রতিনিধি ৪ জানুয়ারি ২০২২ , ১২:১৩:৫০ প্রিন্ট সংস্করণ
শাকিল হোসেন-স্টাফ রিপোর্টারঃ
প্রকৃতি সেজেছে এক অপরূপ মহিমায়। সরিষার হলুদ ফুলের এই সমারোহ নয়ন জুড়িয়ে দেয়। যেদিকে দু’চোখ যায়, শুধু হলুদ আর হলুদ। সরিষা ক্ষেতের এমন নয়নাভিরাম দৃশ্য মনকে আবেগে আপ্লুত করে তোলে। চারদিকের সরিষার ফুল থেকে মধু আহরণে ব্যস্ত হাজারো মৌমাছি।
বাজারে তেলের দাম বেশি হওয়ায় এবার সরিষার চাষ বেশি হয়েছে। স্বল্প খরচ আর কম সময়ে সরিষা চাষ দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে নওগাঁ পত্নীতলা উপজেলায়। উন্নত জাতের সরিষা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। ফলে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর বেড়েছে সরিষা চাষ।
প্রচলিত দেশি সরিষার চেয়ে ফলন বেশি হওয়ায় বারি-১৪ ও বারি-১৫, বারি-১৭, বারি-১৮, বিনা-৪ জাতের সরিষা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন চাষিরা। অনেকেই আমন ধান সংগ্রহের পর জমি ফেলে না রেখে সরিষা চাষ শুরু করেছেন। এরপর আবার বোরো ধান রোপণ করবেন তারা। ফলে একই জমিতে বছরে তিনবার ফসল উৎপাদন হচ্ছে।
সরেজমিনে বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায় সরিষা গাছে ফুল এসেছে অনেক গাছে ফলও এসেছে। সরিষা চাষিরা জানান, এবার প্রতি বিঘা জমি থেকে ৬-৭ মণ সরিষা উৎপাদনের আশা করছেন তারা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসেব মতে চলতি বছরে সরিষার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫ হাজার হেক্টর জমিতে। সেখানে চাষ হয়েছে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে। গত বছর লক্ষ মাত্রা ছিল সাড়ে চার হাজার হেক্টর। এবার বাম্পার ফলনের আশা কৃষক ও কৃষি বিভাগের।
উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চাষি রেজাউল করিম, আব্দুর রাজ্জাক, হাবিবুর রহমান, আক্তারুজ্জামানসহ অনেকে জানান, প্রতিবিঘা জমিতে সরিষা চাষে খরচ হয় সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা। প্রতি মণ সরিষা বিক্রি করা যায় ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা দরে। প্রতি বিঘাতে গড়ে সাত মণ সরিষা উৎপাদন হলে বিঘা প্রতি ১৫-১৬ হাজার টাকা লাভ করা যায়। কম সময়ে কমে খরচে বেশি লাভ হয় সরিষা চাষে। চলতি মওসুমে এ উপজেলায় বারি-১৪, ১৫, ১৭, ১৮ ও সম্পদ জাতের সরিষা চাষ হয়েছে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, কৃষ্ণপুর ইউনিয়নে ৫৬০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে সরিষা। গাছ ভাল হয়েছে ফলনও বাম্পার হতে পারে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ প্রকাশ চন্দ্র সরকার জানান, কম সময়ে লাভজনক ফসল এটি। সরকারের কৃষিতে সুদৃষ্টি রয়েছে উপজেলায় সরকারি ভাবে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে ২ হাজার জনকে। তেলের দাম বাড়ার কারণে তেল ফসলের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষি অফিস সার্বক্ষণিক কৃষকদের সহায়তা দিতে প্রস্তুত।