• খুলনা বিভাগ

    ক্যারিয়ারের নামে সভ্যতা ধ্বংস কে না বলুন

      প্রতিনিধি ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ১১:৩৪:৫১ প্রিন্ট সংস্করণ

    মোঃ লিখন উদ্দীন-কুষ্টিয়া সদর প্রতিনিধি:

    বর্তমান প্রজন্ম কে আমরা ক্যারিয়ার নির্ভর জাতি হিসেবে তৈরি করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। প্রিপারেটরী,নার্সিং,প্রাইমারি এভাবে আমরা শিশুদের কে বন্দী করে ফেলছি।সোনালী শৈশব কে কারাগারের নির্যাতনের উপযুক্ত সময় হিসেবে ব্যবহার করছি।আর শিক্ষিত মায়েরাও এখন পরনির্ভরশীল নন।তারা পায়ের নিচে মাটি পাওয়ার জন্য একটা চাকরি খুঁজেন। ফলে পুরুষ কেন্দ্রীক সমাজ ব্যবস্থায় তাদের শাসনের সুযোগ নাই। নিজের মতো করে পৃথিবী কে দেখতে পারছেন। এটা তাদের প্রাপ্য অধিকার। কিন্তু সমস্যা টা একটু পরে। মা-সন্তানের সম্পর্কের মূলভিত্তি যদি বলা হয় তাহলে গর্ভধারণ, দুগ্ধদান,লালনপালন ই আসল।

    এরপর আসে অক্সিটোসিন সহ আরও বেশ কিছু হরমোন। তবে এখন অনেক দুগ্ধজাত প্রোডাক্ট বাজারে আসছে।ফলে দুগ্ধদানেও আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেক মা।আর লালনপালনের জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার আর কাজের লোক ও আছে। এভাবে শৈশব কাটানোর পর স্কুল কলেজের সময়টাতে বেশিরভাগ সময় ক্লাস আর প্রাইভেটে আর বন্ধুদের সাথে আড্ডায়। পরবর্তী তে ইউনিভার্সিটি লাইফে তো পুরোপুরি হোস্টেল কিংবা মেস এ চলে যায়। বন্ধুবান্ধবী আর আড্ডা ই তাদের চিরচেনা অভ্যাস।আমাদের জীবন আচারণে পারিবারিক সৌন্দর্য ফুটে উঠার চিরায়ত লোকবিশ্বাস এখন হারিয়ে গেছে। তাদের স্বভাব চরিত্র অভ্যাস অভিযোগ সবকিছু বন্ধুদের প্রভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

    যেখানে পরিবার ছিলো সবচেয়ে বড়ো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সেখানে পরিবার এখন সবচেয়ে দূরের এক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। মূলত টাকা বা অর্থনৈতিক নির্ভরতা ব্যাতিত আর কিছুই পরিবারের উপর নেই।মা-বাবার চাকরির ব্যাস্ততা সন্তানের মানসিক ভাবে দুঃখিত করে তোলে।শিশু কিশোর রা তাদের আশা আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা অনিচ্ছা মা-বাবার কাছে আবদার করবে,তারাও যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। কিন্তু পরিবারের কাছে যথেষ্ট সময় না পেয়ে, তারা বন্ধু বান্ধব এবং মোবাইল গেমস এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষত ফেসবুক,ইউটিউব এ আসক্ত হচ্ছে।

    পরিবারের সাথে বাড়ছে দূরত্ব। অনলাইনে অপরিচিত বন্ধু দের নানা কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে অপরাধী হিসেবে ও নিজেদের তৈরি করছে।বিগত দশকের তুলনায় বর্তমানে কিশোর অপরাধীর সংখ্যা ভয়ংকর রকমের বেড়েছে। বস্তুবাদী দর্শনে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেদের কে ধর্মহীন নাস্তিক হিসেবে নিজেদের নাম লেখাচ্ছে।ধর্মীয় আবেগ,এবং নৈতিকতা কে হারিয়ে তারা অনৈতিক এবং নোংরা অসভ্যতায় লিপস্টিক হচ্ছে। নিজেদের কে অর্থনৈতিক নির্ভরতা আসার আগে বিয়ে কে বন্ধ করে, তারা লিভ টুগেদার, সমকামিতা সহ নির্লজ্জ বেহায়া সমাজ তৈরি করছে।

    এক সমীক্ষায় দেখা গেছে গর্ভপাতের ৮৫%ই অবিবাহিত কিশোরী /যুবতী। বিগতশতকে আধুনিক রাষ্ট্র গুলোতে বৃদ্ধাশ্রম দেখাগেলেও এখন বাংলাদেশের মতো নিম্নমধ্যম আয়ের দেশেও অসংখ্য বৃদ্ধাশ্রমের দেখা মিলছে এবং প্রতিনিয়ত বেড়ে চলছে। এভাবে চলতে থাকলে সভ্য সমাজ ব্যবস্থা অতিশীঘ্র ভেঙে পড়বে।তাই এখনই উচিৎ ক্যারিয়ার মুখি প্রজন্ম কে আদরে এবং নৈতিকতা সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলার জন্য পরিবার বিশেষত মা-বাবার সময় দেয়া।ধর্ম চর্চা এবং ধর্মীয় শিক্ষা, ধর্মীয় আদর্শে গড়ে তোলা।সন্তান বিবাহ উপযুক্ত হলে বিবাহের ব্যাবস্থা করা।

    লেখক
    মোঃখালিদ হোসাইন
    কলামিস্ট এবং সমাজকর্মী

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ