• আন্তর্জাতিক

    কমনওয়েলথ রাষ্ট্র শিকারে চীন

      প্রতিনিধি ২ ডিসেম্বর ২০২১ , ৭:৪০:১৫ প্রিন্ট সংস্করণ

    টপ নিউজ ডেস্ক :

    ব্রিটেন নেতৃত্বাধীন জোট কমনওয়েলথকে কবজা করতে বিলিয়ন বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগ করেছে বেইজিং। ২০০৫ সাল থেকে এ জোটের ৪২টি দেশে ৬৮৫ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগ করে নিজেদের ‘দেশ শিকারে’ সিদ্ধহস্ত প্রমাণ করেছে চীন। আর এই ফাঁকে জোটের দেশগুলোর মধ্যে অবাধ ও মুক্তবাণিজ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে গঠিত এই জোটের দশকজুড়ে ‘ঘুমিয়ে থাকার’ সমালোচনা করেছেন পররাষ্ট্রনীতির বাজপাখিরা। কারণ, এই সময়ে বেইজিং ক্যারিবীয় অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করছে এবং ‘দুর্বল’ কমনওয়েলথ দেশগুলোকে ‘শিকার’ করছে।

    ৪০০ বছর পর ব্রিটেন হাত থেকে ছুটে মঙ্গলবার ক্যারিবিয়ন দ্বীপরাষ্ট্র বার্বাডোজের বিশ্বের নতুন প্রজাতন্ত্র হিসাবে মাথা তোলার কারণ হিসাবে চীনের এই বিনিয়োগ টোপকেই দায়ী করছেন ব্রিটিশ বুদ্ধিজীবীরা। বৃহস্পতিবার ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে সেই তথ্যই উঠে এসেছে।চীনের কমিউনিস্ট পার্টির লক্ষ্য-বিশ্বশক্তিতে দেশকে পরিচিত করা। আর সেদিকেই অব্যাহত রয়েছে তাদের পদক্ষেপ, মোড়লিপনা। ‘ঝোপ বুঝে কোপ’ মেরে বার্বাডোস এবং জ্যামাইকার মতো দরিদ্র দেশগুলোকে এত বিপুল পরিমাণ অর্থ ঋণ দিয়ে রেখেছে-যেন ঋণের দায়ে তারা কোনো না কোনো সময় তাদের সম্পত্তি হস্তান্তর করতে বাধ্য হয়।

    বিশ্বরাজনীতিতে চীনের এই মোড়লিপনার ধরনকে বলা হচ্ছে চেক ডেপ্লোমেসি। আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের এক পরিসংখ্যান বলছে, চীন ক্যারিবিয়ান দ্বীপ বার্বাডোসে রাস্তা, বাড়ি, নর্দমা এবং একটি হোটেলে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগ করেছে। নিকটবর্তী জ্যামাইকায় ১৬.৪ বিলিয়ন পাউন্ডের দেশীয় পণ্যের বিপরীতে প্রায় ২.৬ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগ করেছে চীন। সেই হিসাবে চীনের কাছে সবচেয়ে বড় ঋণ ক্যারিবীয় এই দেশটিরই। চীন যখন জাতিসংঘের সদস্যদের তার কঠোর হংকং জাতীয় নিরাপত্তা আইনকে সমর্থন করতে চেয়েছিল, তখন তারা পাপুয়া নিউগিনি, অ্যান্টিগুয়া এবং বারবুডা থেকে সমর্থন পেয়েছিল।

    বাকি ১৬টি কমনওয়েলথ রাজ্যের মধ্যে এই দুটি দেশে চীনারা বিনিয়োগ করেছে পাপুয়া নিউগিনিতে ৫.৩ বিলিয়ন পাউন্ড (জিডিপির ২১ শতাংশ) ও অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারমুডায় ১ বিলিয়ন পাউন্ড (জিডিপির ৬০ শতাংশ)।হংকংয়ে বেইজিংয়ের ক্র্যাকডাউনকে সমর্থনকারী অন্যান্য কমনওয়েলথ সদস্যদের মধ্যে রয়েছে সিয়েরা লিওন, জাম্বিয়া, লেসোথো, ক্যামেরুন এবং মোজাম্বিক। সিয়েরা লিওনে ২০০৫ সাল থেকে চীনের বিনিয়োগের পরিমাণ তাদের জিডিপির ১৪৫ শতাংশ।

    পর্যবেক্ষকরা বলছেন, কমনওয়েলথ কিংবা অন্য কোথাও চীনবিরোধী যেকোনো প্রস্তাবনা প্রতিরোধ করতে এ দেশগুলোকে ‘হাত’ করেছে চীন। পাকিস্তানের বৈদেশিক উন্নয়নের সবচেয়ে বড় অংশীদার ব্রিটেন। কিন্তু ২০০৫ সাল থেকে দেশটিতে চীন বিনিয়োগ করেছে ৬০ বিলিয়ন ডলার-যা তাদের জিডিপির এক-পঞ্চমাংশেরও বেশি। বর্তমানে বেইজিং থেকে নিজেদের অস্ত্রের ৭০ শতাংশ কিনেছে পাকিস্তান। আমেরিকানরা বিশ্বাস করেন, পাকিস্তান সরকার সেই অস্ত্রগুলো তালেবানদের কাছে দেয়-যেগুলো আফগানিস্তানে জোট বাহিনীকে পরাজিত করতে এবং অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল করতে ব্যবহার করা হয়েছিল।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ