প্রতিনিধি ৭ নভেম্বর ২০২২ , ৩:১৬:৫৮ প্রিন্ট সংস্করণ
মমিনুল ইসলাম মুন-বরেন্দ্র অঞ্চল প্রতিনিধি:
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ৬ নম্বর মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বার) নুরুজ্জামানের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি, মাদক ব্যবসা, নারী কেলেংকারী, জমি জবরদখলসহ বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, সাধারণের কাছে এখন মুর্তিমান আতঙ্ক নুরুজ্জামান। এলাকাবাসী তার নানামূখী অপকর্মে দিশেহারা হয়ে তার রাহুগ্রাস থেকে পরিত্রাণের আশায় তার বিরুদ্ধে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ করে ও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা
উল্টো বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দিয়ে ভুক্তভোগীদের জিম্মি করে রেখেছে। ভুক্তভোগীরা জানান, নুরুজ্জামান মেম্বার এর মামলা নং স/২২, এফ আইআর নং৩৯/৩৭২ ,এফ আইআর নং ৪৮/৩৬৫ জিডি নং ৯৫ এছাড়াও আরো পাঁচটা মামলার আসামি ও তার বিরুদ্ধে প্রায় অর্ধশতাধিক অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী জানান, রাজশাহী মহানগরীর কাটাখালি এলাকার জনৈক হায়দার আলী নামের জামাতের এক ক্যাডারের ছত্রছায়ায় মাদক বানিজ্যর অর্থ বিনিয়োগ করে।
নুরুজ্জামান গড়ে তুলেছে ব্যক্তিগত সন্ত্রাসী বাহিনী। তারা আরো জানান, জনৈক হায়দার আলীর বাড়ি কাটাখালী হলেও তার বোনের বাড়ি মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ফুলতলা এলাকায়। সেই সুত্রে নুরুজ্জামানের সঙ্গে হায়দার আলীর সক্ষতা গড়ে উঠে এবং তাকে মাদক ব্যবসায় আর্থিক সহযোগীতা করে আসছে। এছাড়াও ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তার লালিত সন্ত্রাসী বাহিনীর কাছে মাটিকাটা ইউপির পুরো ৬ নম্বর ওয়ার্ডবাসী জিম্মি হয়ে পড়েছে। তিনি তার অনুগত কয়েকজন মাদকসেবি বখাটের মাধ্যমে বয়স্ক-বিধবা ভাতা,
মাতৃত্বকালীন ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড এবং সরকারি গৃহনির্মাণসহ বিভিন্ন সুবিধার আশ্বাস দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সুত্র জানায়, ইউপি সদস্য হওয়ার পাশাপাশি নুরুজ্জামান মাটিকাটা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। ফলে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষকে এমনভাবে বাকরুদ্ধ ও জিম্মি করে রেখেছে, তার ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না। সরেজমিন ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডে গেলে সাধারণ মানুষ জানায়, তার এই সন্ত্রাসী বাহিনীর দ্বারা নুরু ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করে থাকে।
এমনকি গোদাগাড়ীর কয়েকজন চিহ্নিত বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীর যাতায়াত রয়েছে তার বাড়িতে। এছাড়াও নিষিদ্ধ সংগঠন জামাত নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। তার ক্ষমতার উৎস অনুসন্ধানে গেলে সামনে আসে হায়দার আলী নামের এক চিহ্নিত জামাত নেতার নাম, যার বাড়ি রাজশাহী মহানগরীর উপকন্ঠ কাটাখালী এলাকায়। মূলত এই জামাত নেতার অর্থায়নে চলে ইউপি সদস্য নুরুজ্জামানের যত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। এমনকি ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগসাজশ করে স্থানীয় সাংসদের বিরোধীতা করার নামে আওয়ামী লীগবিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছে নুরুজ্জামান ওরফে বাবা নুরু।
এদিকে হায়দার আলীর সঙ্গে নুরুজ্জামানের সম্পৃক্ততা অনুসন্ধান করতে, হায়দার আলীর ব্যবহৃত ফেসবুক আইডি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, নুরুজ্জামান মাঝে মধ্যে হায়দার আলীর সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করে থাকে যা হায়দার আলীর ফেসবুক পোস্টে পতিয়মান হয়। তার দাপটের কাছে স্থানীয় লোকজন অসহায়। তার কুরুচিপূর্ণ ভাষা, ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে তার নাম শুনলেই যেন ভয়ে আতকে উঠে মাটিকাটা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষ। এবিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেস্টা করা হলেও মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সোহেল রানা ফোন না ধরায় তার কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য নুরুজ্জামান ওরফে নুরু সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার নামে এসব অভিযোগ সত্য নয়।একজন আওয়ামী লীগের নেতা হয়েও জামাত নেতা হায়দার আলীর সঙ্গে কি সম্পর্ক এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন ও-ই শুধুমাত্র আমার পরিচিত আর কিছুই না। হায়দার আলীর সঙ্গে তোলা ছবির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, আমি বাইরে আছি ভাই, আপনি আজকে চলে যান আমি আগামীকাল রাজশাহী এসে আপনার সঙ্গে দেখা করবো। এসব নিয়ে নিউজ করার দরকার নাই।