প্রতিনিধি ১৩ জানুয়ারি ২০২২ , ৩:৩৭:৫৩ প্রিন্ট সংস্করণ
নিউজ ডেস্কঃ
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ও বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বলেছেন, ‘জনমত আমাদের পক্ষে,হাতির পক্ষে। যেভাবে জনগণের সাড়া মিলছে, তাতে ১৮ বছরের ক্ষোভ নিরসনের লক্ষ্যে একটা পরিবর্তন অবশ্যই হবে। ঢাকা থেকে কিছু সম্মানিত মেহমানদের একজন বলেছেন তৈমুরকে মাঠে নামতে দেওয়া হবে না। আরেকজন বলেছেন, ঘুঘু দেখেছ, তো ঘুঘুর ফাঁদ দেখনি। এখন আমরা ফাঁদ দেখা শুরু করেছি।
তিনি বলেন, আমার নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, বাড়ীতে বাড়ীতে অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নাসিক নির্বাচন সুষ্ঠু করার পক্ষে। তিনি এই দমন নিপীড়নেরও পক্ষে না। অতি উৎসাহীরা এসব করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা করছে, এই নির্বাচনটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, এই পুলিশি নির্যাতন, সরকারি নির্যাতন যতই বৃদ্ধি পাবে, ততই আমাদের পক্ষে জনসমর্থন বৃদ্ধি পাবে।
বুধবার নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর এলাকায় হাতির প্রতীকের গণসংযোগ ও বিশাল শোডাউনে তৈমুর আলম এসব কথা বলেন। এর আগে সিদ্ধিরগঞ্জ, বন্দর ও শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে কয়েক হাজার নেতাকর্মী ও হাতি সমর্থকরা নানা রঙের ব্যানার ফেস্টুন, হাতি প্রতীক নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। তারা নেচে গেয়ে হাতির প্রচারণা করেন এবং পুরো শহর প্রদক্ষিণ করেন।
এদিকে তৈমুরের বিশাল শোডাউনটি থামাতে রাস্তায় ২ দফায় চেষ্টা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। কিন্তু জনস্রোত এতটাই বেশি ছিল যে তা সম্ভব হয়নি।
তৈমুর আলম বলেন, পুলিশ প্রশাসনকে অনুরোধ করবো আপনারা আমার সঙ্গে যে আচরণ করছেন সরকারি প্রার্থীকে জেতানের জন্য এটা অমানবিক। গণতন্ত্রকে হত্যা করার ষড়যন্ত্রে আপনারা লিপ্ত হয়েছেন। রবিসহ সকল নেতাকর্মীর আমি মুক্তি দাবী করছি। এই মুক্তি হবে গণতন্ত্রের মুক্তি। এটা না হলে পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য পুলিশ ও প্রশাসন দায়ী থাকবেন।
তৈমুর বলেন, আমি আপনাদের কাছে দোয়া চাই। যারা আমাকে ফুল দিয়ে এই জনতার মার্কার প্রতি প্রচারণা চালাচ্ছেন পরিশ্রম করছেন বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করছেন। আমি যেন তাদের সঙ্গে কোন বেইমানি না করি। আমার দ্বারা যেন কোনো গণবিরোধী কাজ না হয়। কারও পেটে লাথি দেয়ার আগে আমি যেন পুনর্বাসন করতে পারি। নারায়ণগঞ্জের খেটে খাওয়া মানুষ, কর্মজীবী মানুষ যাদের পেটে লাথি দেয়া হয়েছে, মাথার ছাদ কেড়ে নেয়া হয়েছে, যাদের বাড়িঘর ছাড়া করা হয়েছে তাদের পুনর্বাসন অবশ্যই করা হবে। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটবে পাশাপাশি শহর হবে পরিচ্ছন্ন। পাশাপাশি যারা জীবিকা নির্বাহ করে তাদের স্বাচ্ছন্দ্যে জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা করে দেয়া হবে। কোন খেটে খাওয়া মানুষের পেটে লাথি দেয়া হবে না।
তিনি আরও বলেন, আল্লাহ মজলুমের পক্ষে থাকেন। আজকে এ শহরের প্রতিটি মানুষ এই সিটি করপোরেশন দ্বারা নির্যাতিত। সিটি করপোরেশন হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স ফি বৃদ্ধি করেছে। পানির লাইনের জন্য অতিরিক্ত দেড় লাখ টাকা নিচ্ছে। নারায়ণগঞ্জে গ্যাস সুপেয় পানি নেই। রাস্তাঘাটে যানজট, পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ময়লা আবর্জনা নিরসনে কোন সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেই। পঞ্চবটীতে যেখানে ময়লা ফেলা হত সেখানে পার্ক করা হচ্ছে। দ্বিগুবাবুর বাজার পারিবারিকভাবে মুনাফা দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন একটা সিন্ডিকেট। ঠিকাদাররা সিটি করপোরেশন চালায়। আমি ওয়াদা করতে চাই আল্লাহ মঞ্জুর করলে আমরা এই সিটি করপোরেশনকে জনগণের কাছে নিয়ে যাবো।
এসময় তৈমুর বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে বলেন, বিচার বিভাগে যেই সুযোগ সে সুযোগ থেকে তিনি বঞ্চিত, সাংবিধানিক অধিকার থেকে তিনি বঞ্চিত, তিনি গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বিজয় দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তিকে ত্বরান্বিত করবে।
পথসভায় নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাংসদ এস এম আকরামও বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, তৈমুর আলম একজন আইনজীবী। তিনি আইনের মানুষ। তিনি কোনো অপরাধীর পক্ষ নেবেন না। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পক্ষে কাজ করবেন।
নির্বাচনের প্রাক্কালে বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এস এম আকরাম। তিনি বলেন, প্রশাসনের উদ্দেশে প্রশ্ন রাখতে চাই, বিএনপির নেতা-কর্মীদের এমন হয়রানি কেন? বলা হচ্ছে পুরনো মামলায়, মাদকের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত, তাদের ধরা হচ্ছে। কিন্তু এই মুহূর্তে কেন? ১৬ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। গ্রেপ্তার করতে হলে পরে করেন।
এস এম আকরাম বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জবাসী পরিবর্তন চায়। ১৮ বছরে উন্নয়ন হয়েছে, নতুন মুখ এলে এর চেয়ে বেশি উন্নয়ন হবে। সিটি করপোরেশনের সিন্ডিকেট ও দুর্নীতি বন্ধ হবে। পৌর প্রশাসনের দুরবস্থার দূর হবে। তৈমুর আলম শহরবাসীর সংকটকালে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এবার সবাই মিলে আমরা পরিবর্তন আনব।