প্রতিনিধি ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ৩:১৩:৩২ প্রিন্ট সংস্করণ
তানজিলা আফরিন লিজা: বিশেষ প্রতিনিধিঃ
অযত্ন আর অবহেলায় অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে বাল্লা রেলপথ। প্রায় ১৭ বছর ধরে এ রেলপথটি বন্ধ রয়েছে। এতে একদিকে যেমন রেলওয়ের জমি দখল হচ্ছে, তেমনি চুরি হয়ে যাচ্ছে রেলওয়ের নানা যন্ত্রপাতি। এছাড়া রেললাইনের কোথাও স্লিপারের ছিটেফোঁটা ও নেই। এখন রেললাইন ঘিরে তৈরি হচ্ছে বাইপাস সড়ক।
অথচ ১৯২৮ সালে বিট্রিশ সরকার হবিগঞ্জ থেকে শায়েস্তাগঞ্জ জংশন হয়ে বাল্লা সীমান্ত পর্যন্ত প্রায় ৫২ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন করেন। চা- পাতা রপ্তানি ও বাগানের রেশনসহ, জ্বালানি তেলসহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র আমদানি করার একমাত্র মাধ্যম ছিল এ রেলপথ। বর্তমানে অস্তিত্ব বিলীনের পথে রয়েছে রেলপথটি। এ জন্য দ্রুত রেললাইনটি চালু করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্বাধীনতার পর এরশাদ সরকারের প্রথম দিকে এ সর্বপ্রথম লাইনটি বন্ধ হয়ে যায়।পরে আবার চালু করা হলেও ফের ১৯৯১ও ১৯৯৬ সালে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়। সর্বশেষ ২০০৩ সাল থেকে এ লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, একশ্রেণির মানুষ এসব জমি দখল করে দালান তৈরি করছে। রেলওয়ের জমিতে চলছে নানা রকম চাষাবাদ। বিগত ২০০৫ সালের দিকে সড়ক করার অজুহাতে হবিগঞ্জ বাজার থেকে শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশন পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার রেলপথ তুলে ফেলা হয়।
বিএনপি – জামায়াত জোট সরকারের আমলের অঘোষিতভাবে বন্ধ হওয়ার পর থেকেই একটি প্রভাবশালী মহল রেলের বিশাল সম্পদের দিকে নজর দেয়। পরে আবার শায়েস্তাগঞ্জ থেকে হবিগঞ্জ পর্যন্ত রেললাইনটি উঠিয়ে বাইপাস সড়ক নির্মাণ করা হয়।
এর সাথে প্রায় বাল্লা রেল – লাইনের প্রায় ৩৬ কিলোমিটার সড়কের রেলের শিক, পাথর, সিগন্যাল, তার, নাট বল্টু ওজন মাপার যন্ত্রপাতি এবং ৭ টি স্টেশনের অবকাঠামোসহ কোটি কোটি টাকার মালামাল লুট পাট শুরু হয়। সেই থেকে এখন পর্যন্ত ৯৫ ভাগ লুটপাট হয়েছে। কিন্তু লুটপাটকারীদের নিদিষ্ট কোনো তালিকা কোথাও নেই। রেলওয়ে কতৃপক্ষের নীরবতায় লুটপাটকারীরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, শায়েস্তাগন্জে এক জনসভায় তৎকালীন রেলমন্ত্রী প্রয়াত সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত হবিগঞ্জ – শায়েস্তাগন্জ বাল্লা রেলপথ আবারো চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতিতেই আটকে আছে রেললাইন চালুর কাজ। অথচ এ পথে ট্রেন চালু হলে হাজার হাজার মানুষের ব্যাবসা বাণিজ্য প্রাণ ফিরে পাবে।