প্রতিনিধি ২০ মে ২০২৩ , ৩:৪৪:৩১ প্রিন্ট সংস্করণ
মোঃ লুৎফর রহমান লিটন-সলঙ্গা সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
একসময় সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, যশোর, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও টাঙ্গাইল এলাকায় চরমপন্থী আতঙ্কে দিন কাটতো সাধারণ মানুষের। এই ১০ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের রক্তাক্ত জনপদ ছিল মহা আতঙ্কের। প্রতিদিনই চাঁদাবাজি, গুম, খুন, ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনা ঘটতো।
এসকল এলাকার চরমপন্থীর নেতা ও সদস্যরা অন্ধকার থেকে আলোতে ফিরতে আগামীকাল রোববার (২১ মে’) সকালে সিরাজগঞ্জ র্যাব-১২ কার্যালয়ে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি (এমএল) ও সর্বহারাসহ বেশ কয়েকটি চরমপন্থী দলের ৩২৩ সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে আত্মসমর্পণ করবেন। এ উপলক্ষ্যে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।শনিবার (২০ মে) সকালে সিরাজগঞ্জ র্যাব-১২ এর কোম্পানি কমান্ডার (লেফটেন্যান্ট কমান্ডার) আবুল হাশেম সবুজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আবুল হাশেম সবুজ বলেন, চরমপন্থিদের আত্মসমর্পণ ও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সুযোগ করে দিয়েছে র্যাব। এছাড়া অপরাধের জীবন থেকে চরমপন্থী সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে র্যাব ২০২০ সাল থেকে কার্যক্রম শুরু করে। চরমপন্থী দলের নেতা ও সদস্যদের আর্থিক প্রণোদনার মাধ্যমে গরুর খামার, পোলট্রি ফার্ম, মাছ চাষ, চায়ের দোকান, ভ্যান-রিকশা ও সেলাই মেশিন দেওয়া হয়। এই কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতায় আগামীকাল রোববার র্যাব অফিসে ৩২৩ জন চরমপন্থি অস্ত্রসহ স্বাভাবিক জীবনে ফেরার জন্য আত্মসমর্পণ করবেন। এদের বাড়ি সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও টাঙ্গাইলে। এরমধ্যে রয়েছে এলএম লাল পতাকা বাহিনীর ২৯৪ জন, জনযুদ্ধর ৮ জন এবং সর্বহারার ২১ জন সদস্য।
তিনি বলেন, র্যাবের পৃষ্ঠপোষকতায় ইতোমধ্যেই টাঙ্গাইলে কয়েকটি হস্তশিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এর আগে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাদের পরিবারের লোকজনকে সেখানে কাজের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এসব কারখানার হস্তশিল্প বিদেশে রপ্তানির প্রক্রিয়া চলছে। এখন যারা আত্মসমর্পণ করবেন তাদের পরিবারকেও সরকারি সহায়তায় কর্মসংস্থানের সুযোগ দিয়ে পূনর্বাসনের ব্যবস্থা নেবে র্যাব।
আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমেদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, পুলিশ মহা-পরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, র্যাবের মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
র্যাব-১২ অধিনায়ক অ্যাডিশনাল ডিআইজি মারুফ হোসেন বলেন, পূর্ব বাংলা, সর্বহারা ও কমিউনিস্ট পার্টি এমএল (লাল পতাকা) বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তারা যে ভুল পথে ছিল সেখান থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চায়। দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে চায়। প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পৃষ্ঠপোষকতায় র্যাবের উদ্যোগে চরমপন্থীর সদস্যরা আত্মসমর্পণ করবে এবং ২ শতাধিক অস্ত্র জমা দেবেন।